প্রশিক্ষিত রাজনৈতিক কর্মী চাই
মুক্তাদির আহমেদ মুক্তা
টের দশকের রাজনীতিবিদের মেধা ও মূল্যবোধ নিয়ে প্রায়শই প্রশংসা করা হয়। সত্তর,অাশি এমনকি নব্বই দশকের রাজনীতিবিদ ও ছাত্র অান্দোলনের কর্মীদের ত্যাগ,তিতিক্ষা নিয়েও ইতিবাচক অালোচনা হয়।কিন্তু তার পরের প্রজন্মে কেনো সেই ধারাবাহিকতা নেই সেটি নিয়ে অর্থপূর্ণ অালোচনা নেই বললেই চলে।
ষাট,সত্তর,অাশি এমনকি নব্বই দশকেও যে পরিমাণ রাজনৈতিক সাহিত্য পঠিত হতো পরবর্তীতে কি তার তেমন চর্চা অাছে।প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নিজস্ব মুখপাত্র দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকাসহ বিভিন্ন প্রকাশনা ছিল, বর্তমানে কি সেগুলোর অস্থিত্ব টের পাওয়া যায়। রাজনৈতিক কর্মীদের কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ যা একজন কর্মীর বোধ, বিশ্বাস ও নেতৃত্বগুণকে বিকশিত করে। সেই চর্চা কি এখন অাছে।এখন শুধু কর্মীদের দোষ দেওয়া হচ্ছে, সমালোচনা করা হচ্ছে। কিন্তু একজন কর্মীকে নেতায় পরিণত হওয়ার পরিচর্যা কি করা হচ্ছে।দিকভ্রান্ত কর্মীদেরকে সঠিক নির্দেশনা অার কার্যকর পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে না। যুগে যুগে রাজনীতির অবয়ব যেমন পরিবর্তন হয়।তেমনি পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নেতৃত্ব কৌশল ও কর্মপন্থাও পরিবর্তন করতে হয়।বর্তমান প্রজন্মকে তো সমকালীন ইতিহাস, রাজনৈতিক জ্ঞান ও সংগঠনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্যের সামান্যতম সবকও দেওয়া হয় না।অার যারা নিজ অাগ্রহে কিছু চর্চা করে তাদেরকে তো নেতৃত্বের ধারে কাছেও রাখা হয় না।এমন পরিবেশে ত্যাগী অার নিবেদিতপ্রাণ কর্মী অাশা করাকি বাস্তবসম্মত? প্রতিটি পেশায় কর্মীদের অন্তর্ভূক্তির পর তার কর্মপরিধি ও করণীয় জানিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। নিজ নিজ অধিক্ষেত্রকে অায়ত্ত করার কলা কৌশল শেখানো হয়। একজন রাজনৈতিক কর্মী কি সেই সব সুযোগের সামান্যতমও পায়! রাজনৈতিক কর্মীকে যদি দূরদর্শী ও ভবিষ্যতের উপযোগী করে তুলা না হয় তাহলে সুন্দর অার সমৃদ্ধ অাগামী কারা নির্মাণ করবে। বলা হচ্ছে রাজনীতিতে যারা জড়াচ্ছে বা যারা রাজনীতি করছে তারা অাদর্শিক নয়।মেধাবী নয়।তাহলে কি দলের উচ্চপর্যায়ের অামলাতান্ত্রিক ধ্যান ধারণা পাকাপোক্ত করতে অাদর্শিক কর্মী তৈরীর পথ রুদ্ধ করার জন্যই এ ধরণের প্রচেষ্টা।নানাপেশা থেকে অামদানি করা অবসরভোগীদের স্থান করে দিতে উপযুক্ত রাজনৈতিক নেতৃত্ব তৈরী না করার সূদুরপ্রসারী প্রক্রিয়া চলছে। এ থেকে উত্তরণের পথ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেই বের করতে হবে। উপযুক্ত নেতৃত্বের অভাবে রাজনৈতিক দলগুলোই একদিন মুখথুবড়ে পড়বে।দূর্বল ও অযোগ্য রাজনৈতিক নেতৃত্ব দিয়ে প্রশাসনিক দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন সম্ভব নয়।
এমন উদাহরণ মহোদয়গণের সাম্প্রতিক বক্তব্য, বিবৃতিতে অার কর্মকাণ্ডে অারো বেশী দৃশ্যমান হচ্ছে। বিরাজনীতিকরণের অশুভ চক্রান্ত থেকে দেশ ও জাতিকে পরিত্রাণ দিতে হলে প্রশিক্ষিত রাজনৈতিক কর্মীর বিকল্প নেই। শুদ্ধ রাজনৈতিক কর্মী তৈরীর মাধ্যমে রাজনীতিতে ফিরে অাসুক শুদ্ধতা ও উপযুক্ত নেতৃত্ব চর্চা।অাগামীর নেতৃত্ব হোক বর্তমানের ফসল।
লেখক: সাংবাদিক