সংসদে ‘বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি বিল, ২০২৩’ উত্থাপন

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি বিল, ২০২৩’ উত্থাপন করা হয়েছে।পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান আজ জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপনের প্রস্তাব করেন।বিলটি উত্থাপন প্রক্রিয়ায় আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য ফখরুল ইমাম বিলের প্রশংসা করে বলেন, এই বিলটি আরও আগেই সংসদে আনার প্রয়োজন ছিল।

বিলটির বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, সরকারি তহবিলের অর্থ দ্বারা সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, ক্রয় প্রক্রিয়া টেকসই ও সহজিকরণ এবং ক্রয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক সকল ব্যক্তির প্রতি সমআচরণ ও অবাধ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত আইন যথাযথ বাস্তবায়ন, নিয়ন্ত্রণ এবং এই উদ্দেশ্যে সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধি ও পেশাদারিত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি অথরিটি প্রতিষ্ঠা এবং এতদ্সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক বিষয়ে বিধান প্রণয়নকল্পে বিলটি আনা হয়েছে।বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে মন্ত্রী বলেন, সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনয়ন এবং ক্রয় প্রক্রিয়ায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাকল্পে ১৯৯৯ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে সরকারি ক্রয় পদ্ধতির সংস্কার কার্যক্রম আরম্ভ হয়। এ সংস্কারের মধ্য দিয়ে ২০০২ সালে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)-এর অধীনে একটি ইউনিট হিসেবে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) গঠন করা হয়। সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বিনির্মাণের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী গত ২০১১ সালের ২ জুন ইলেক্ট্রনিক গভার্ণমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) ওয়েব পোর্টাল উদ্বোধন করেন এবং এর মধ্য দিয়ে সরকারি ক্রয় ব্যবস্থা ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করে।তিনি বলেন, সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধি ও পেশাদারিত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে সিপিটিইউ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে ১ হাজার ৪৩৭টি অফিসের ১১ হাজার ৩১৮ এর অধিক ক্রয়কারী অনলাইনে ‘ই-জিপি’ সিস্টেম ব্যবহার করে ক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়াকরণে ই-জিপি’র কলেবর ক্রমশ বিস্তৃত হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে প্রয়োজনীয় জনবলের অভাব, দ্রুততম সময়ে বিশেষায়িত জনবল নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা, আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করার প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়াজনিত বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি নতুন প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে অনুভূত হচ্ছে।মন্ত্রী বলেন, সরকারের উন্নয়ন বাজেটের পরিমাণ প্রতিবছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে অনুযায়ী সরকারি ক্রয়ের পরিমাণও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০০১-২০০২ সালে সরকারি ক্রয়ে ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ১৯ হাজার কোটি টাকা, যা ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে এসে অনুমিত ২ লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। সরকারি ক্রয়ের এ বর্ধিত কলেবরের আইনি ও কারিগরি তত্ত্বাবধানের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল ও অবকাঠামো সিপিটিইউ-তে নেই ।

সরকারি ক্রয়ের এ বর্ধিত কলেবরের আইনি ও কারিগরি তত্ত্বাবধান, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রার সাথে সম্পর্কিত টেকসই সরকারি ক্রয় নিশ্চিতকরণ ও সহজিকরণের লক্ষ্যে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত আইন যথাযথ বাস্তবায়নপূর্বক সরকারি অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য বিদ্যমান সিপিটিইউ’কে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটিতে (বিপিপিএ) রূপান্তর করা এই আইনের উদ্দেশ্যে বলে তিনি উল্লেখ করেন।এম এ মান্নান বলেন, ক্রয় কার্যক্রমে আরও অধিক গতিশীলতা আনয়ন ও দক্ষতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বিদ্যমান সিপিটিইউকে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটিতে (বিপিপিএ) রূপান্তর, ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত জ্ঞানভিত্তিক, প্রযুক্তি নির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে মর্মে প্রত্যাশা করা যায়।পরে পরিকল্পনা মন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলটি অধিকতর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ৬০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠিয়ে দেন।

You might also like