১২০০ কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহ : প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহ হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা জনপ্রতি আড়াই হাজার টাকা করে এককালীন নগদ সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যারা কিছুই পাচ্ছেন না, সেই না পাওয়াদের জন্য এই ব্যবস্থা।করোনাভাইরাসে কর্মহীন হয়ে পড়াদের মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে সরাসরি নগদ অর্থ প্রেরণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার (১৪ মে) সকালে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবকিছু যেহেতু একটা অচল অবস্থা, যারা অন্তত শ্রম দিয়ে জীবনযাপন করত তাদের জীবনটা একেবারে স্থবির হয়ে যায়। তাদের আয়ের কোনো পথ থাকে না। তাদের কথা চিন্তা করে এবং আপনারা জানেন আমরা মুজিববর্ষ উদযাপন করছি।এই মুজিববর্ষ উদযাপনে আমাদের অনেক পরিকল্পনা ছিল। আমাদের বাজেটেও কিছু টাকা ছিল এবং আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলাম। জনগণের কথা চিন্তা করে আমরা সেই সব কাজগুলো স্থগিত করে দেই, বন্ধ করে দেই। যেটুকু অনলাইন বা টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রচার করা সম্ভব হবে, সেটুকু আমরা প্রচার করেছি। কিন্তু আমরা মূল কাজগুলো বন্ধ করে দেই’ বলেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘এখানে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব আছেন, যদিও মন্ত্রী নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আছেন। আমরা সবার সঙ্গে বসি এবং মিটিং করি। আমি বলি-কোথা থেকে কিছু টাকা জোগাড় করা। বিশেষ করে আমাদের দেশে ভাসমান মানুষ রয়েছে, নির্মাণ শ্রমিক রয়েছে, পরিবহন শ্রমিক, রেস্টুরেন্ট শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, রেলওয়ে কুলি, ঘাট শ্রমিক, নরসুন্দর, দিনমজুর, রিকশা, ভ্যান, গাড়িচালক, নিম্নবিত্ত আয়ের লোকসহ বিভিন্ন ধরনের মানুষ যারা দৈনন্দিন কাজ করে খেত। বা চা বিক্রি করে খেত, দোকান দিয়ে খেত। কুলে, মুটি, মজুর যারা তাদের কোনো কাজ নেই। মানুষ যাতায়াত করে না, তাদের কাজ থাকবে কোথা থেকে। তাদের আয় রোজগার বন্ধ।তাদেরকে এই রমজান মাসে আমরা কীভাবে একটু সহায়তা করতে পারি, সেই ভেবে অনেক হিসেব-নিকেশ করে আমরা কিছু অর্থ সাশ্রয় করার চেষ্টা করেছি। কিছু অর্থ ইতোমধ্যে আমরা ব্যবস্থা করেছি। আমরা আরও প্রায় ৫০ লাখ মানুষকে সাহায্য দেব। আপনারা জানেন, আমরা ৫০ লাখ মানুষকে রেশন কার্ড দিয়ে, মাত্র ১০ টাকায় তারা চাল কিনতে পারেন। আমরা ওএমএসের (খোলাবাজার) মাধ্যমে এই ১০ টাকায় চাল কেনার ব্যবস্থা করেছি’-যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা- বিভিন্ন ভাতাগুলো আছে। সে ভাতাগুলো যেমন অব্যাহত থাকছে, ভাতাগুলো আমরা দিয়ে যাচ্ছি। আমরা মাতৃত্বকালীন ভাতা দিচ্ছি। এ রকম বিভিন্ন যে ভাতা, সেগুলো আমাদের চালু থাকবে। এদের বাদ দিয়ে এবং ১০ টাকার রেশন কর্ড বাদ দিয়ে বাকি যারা রয়ে গেছেন তাদের জন্য কিছু করা-এটাই আমাদের একটা লক্ষ্য ছিল। সেই লক্ষ্য সামনে নিয়েই ইতোমধ্যে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। তাছাড়া ভিজিডি, ভিজিএফ’র মাধ্যমে খাদ্যশস্য পান। আমাদের মৎস্যজীবী থেকে শুরু করে সকলে সেই সহযোগিতা পেয়ে থাকেন।যারা সহযোগিতা পান তাদের বাইরে যারা এখন রয়ে গেছেন, যারা নিজে কিছু কাজ করে নিজের জীবন জীবিকা নির্বাহ করতেন তাদের কথা চিন্তা করেই…আমরা অন্তত যে টাকাটা সংগ্রহ করতে পেরেছি, এখানে প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা। এই এক হাজার ২০০ কোটি টাকা আমরা আড়াই হাজার টাকা করে জনপ্রতি‘ এককালীন নগদ সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘এ টাকা দেয়ার জন্য আমরা কমিটি গঠন করেছি। সেই কমিটিতে (এই তালিকা) বারবার যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। সেখানে দ্বৈততা পরিহার করা। অর্থাৎ দ্বৈততা পরিহার করার ব্যবস্থা করেছি। যারা একবার পান বা যাদের নাম আছে তারা নেবেন না বা তাদের নাম বাদ যাবে। এ দ্বৈততা থাকবে না, যারা পাচ্ছেন তারা পাচ্ছেন। ভিজিএফ পাচ্ছেন, ভিজিডি পাচ্ছেন, বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন তারা না, তার বাইরে যারা কিছুই পাচ্ছেন না-এই না পাওয়া যারা তাদের জন্য এই ব্যবস্থা।শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যে টাকাটা দেব তা কারো মাধ্যমে না। এখন মোবাইল ফোন সকলের আছে। এই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টাকাটা সকলের হাতে সরাসরি চলে যাবে। আমরা সে ব্যবস্থাটা নিচ্ছি। আমরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এ টাকা দিয়ে দিতে চাচ্ছি, যাতে করে মানুষের হাতে সরাসরি টাকাটা পৌঁছে যায়।’

You might also like