অদ্ভুত যে অস্ত্রে ভারতীয় সেনাদের হত্যা করে চীন
আন্তজার্তিক ডেস্ক
সত্যবাণী
চীন: কোনো গোলাবারুদ বা আগ্নেয়াস্ত্র নয়,ভারতীয় সেনাদের উপর অদ্ভুত এক অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছিলো চীনা সেনাবাহিনীর সদস্যরা।সেই অস্ত্রটি প্রায় চার ফুট লম্বা লোহার রড।এর এক থেকে দেড় ফুট অংশে সারি সারি পেরেকের মতো ধারাল কাঁটা লাগানো।ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার তাদের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংঘর্ষস্থল কাশ্মীরের লাদাখ অঞ্চলের গলওয়ান থেকে এমনই একটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সেটি দিয়েই চীনা বাহিনী আক্রমণ করেছিলো ভারতীয় সেনাদের।
ভারতের দাবি, সেদিনের সংঘর্ষে ৪৫ চীনা সৈন্য হতাহত হয়েছে।তবে চীনের পক্ষ থেকে দুই পক্ষে সংঘাতের কথা বলা হলেও এই ঘটনায় হতাহত নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করা হয়নি।এছাড়া সংঘর্ষে কোনো পক্ষ থেকেই যে গুলির ঘটনা ঘটেনি তা অবশ্য দুই পক্ষই স্বীকার করে নিয়েছিল আগেই।ভারতীয় সেনার দাবি, ‘ক্লোজ কমব্যাট’ বা হাতাহাতির পর্যায়ে এ ধরনের রডের আঘাত আগ্নেয়াস্ত্রর থেকেও বেশি প্রাণঘাতী। ভারতীয় গণমাধ্যম ছাড়াও বিবিসি ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো সেদিনের ওই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে চীনের ব্যবহৃত এই অস্ত্র নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
হামলায় আহত ভারতীয় সেনারা জানিয়েছেন, প্রায় এক কোম্পানি জওয়ান (১০০ থেকে ১২০ জন) সেদিন চীনা বাহিনীর হামলার মুখে পড়েন।তাদের কথা থেকে স্পষ্ট, পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায় ভারতীয় জওয়ানদের ঘিরে ফেলে হামলা করে তুলনায় কমপক্ষে চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি থাকা চীনা সেনারা।চীনা সেনাদের কাঁটা লাগানো রডের আঘাতে ভারতের ২০ সেনা নিহত হয়। এছাড়া সঙ্কটজনক অবস্থায় থাকা চার ভারতীয় সেনার অবস্থার এখন উন্নতি হয়েছে। সেনাদের বেশিরভাগ আঘাত পেয়েছে মাথায়।এই ঘটনার পর অবশ্য উত্তেজনা প্রশমনে ফের ভারত-চীন সামরিক পর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, বৈঠক শুরু হলেও দুই দেশই সীমান্তে সামরিক প্রস্তুতি নিয়েছে। নয়াদিল্লি সেনাবাহিনীকে প্রয়োজনীয় রসদের ছাড়পত্র দিয়েছে। এছাড়া এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হলে কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে তা স্থানীয় স্তরেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সবুজ সঙ্কেতও দিয়েছে মোদি সরকার।দুই দেশের সীমানা নির্ধারণকারী প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) থাকা সেনাদের জন্য ‘বডি আরমার’ বা বিশেষ ধরনের বর্মের মতো পোশাক পাঠিয়েছে ভারত। সাধারণত আইন শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ এ ধরনের পোশাক পরে। এই পোশাক ধারাল অস্ত্রের আঘাত রুখতে পারবে বলে জানানো হচ্ছে।
ভারতের উধমপুর সেনা হাসপাতাল এবং লেহর জেলা হাসপাতালে ভর্তি সেনা সদস্যদের সঙ্গে এরই মধ্যে কথা বলেছেন সেনা কর্মকর্তারা। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় এক কম্পানি সেনা সদস্য (১০০ থেকে ১২০ জন) চীনা বাহিনীর হামলার মুখে পড়েন। ঘিরে ফেলা হয় ভারতীয় সেনা সদস্যদের এবং সংখ্যায় ভারতীয় সেনা সদস্যদের তুলনায় চীনা সেনা সদস্যের সংখ্যা ছিল কমপক্ষে চার থেকে পাঁচগুণ বেশি। পুরোপুরি এক তরফা হামলায় চীনা বাহিনী এলোপাথাড়ি আঘাত করে ওই ধরনের কাঁটা লাগানো রড দিয়ে।
এদিকে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় উত্তেজনা প্রশমনের জন্য বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ফের দুই বাহিনীর মেজর জেনারেল পর্যায়ে বৈঠক শুরু হয়েছে। চিশুল সীমান্তের উল্টোদিকে চীনের মলডোতে এই বৈঠক চলছে। বুধবারও বৈঠক হয়েছিল প্রায় তিন ঘণ্টা। কিন্তু সেই বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। অমীমাংসিত থাকে বৈঠক। ভারতের পক্ষে বৈঠকের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মেজর জেনারেল হরীন্দ্র সিংহ।
উত্তেজনা প্রশমনের জন্য দ্বিপাক্ষিক কথাবার্তার মধ্যেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সামরিক প্রস্তুতি তুঙ্গে দু’পক্ষেরই। নয়াদিল্লি থেকে সেনাকে প্রয়োজন অনুযায়ী ‘লজিস্টিক’অর্থাৎ রসদ কেনার ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে এ ধরনের পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবিলা করতে হবে তা স্থানীয় স্তরেই সিদ্ধান্ত নেয়ার সবুজ সঙ্কেত দেয়া হয়েছে। তারপরই নিয়ন্ত্রণ রেখায় মোতায়েন সেনাকর্মীদের জন্য ‘বডি আরমার’ বা এক বিশেষ ধরনের বর্মের মতো পোশাক পাঠানো হচ্ছে। সাধারণত আইন শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ যে ধরনের বিশেষ বর্ম পোশাক পরে অনেকটা সেই ধরনের পোশাক।