অবশেষে পদ্মা সেতুতে বসল ৩২তম স্প্যান
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
মাওয়া: চার মাস পর পদ্মা সেতুতে বসানো হয়েছে ৩২তম স্প্যান। রোববার (১১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টায় মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুর ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের (খুঁটি) ওপর স্প্যানটি বসানো হয়। এ নিয়ে সেতুর ৪ হাজার ৮০০মিটার অংশ দৃশ্যমান হলো।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।শনিবার (১০ অক্টোবর) স্প্যান বসানোর প্রস্তুতি থাকলেও তীব্র স্রোতের কারণে স্প্যানবাহী ক্রেন পিলারের কাছে নোঙর করতে না পারায় বসানো যায়নি স্প্যানটি।জানা গেছে, শনিবার স্প্যানটি বসানোর পূর্বপ্রস্তুতি অনুযায়ী সকালে কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই এর মাধ্যমে পিলারের অনেক কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া হয়। তবে নদীতে স্রোতের কারণে বিকেল পর্যন্ত চেষ্টা করেও শেষ অবধি বসানো যায়নি স্প্যানটি।এরপর ক্রেনটিকে আরো কিছুটা দূরে নদীতে নোঙর করে রাখা হয়। রোববার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পুনরায় স্প্যান বসানোর কাজ শুরু হয়। এরপর ক্রেনটিকে নির্ধারিত স্থানে এনে প্রকৌশলীদের মাপযোগ শেষে নির্ধারিত পিলারে স্প্যানটি বাসানো হয়।
পুরো সেতুতে বাকি রইলো আর মাত্র ৯টি স্প্যান বসানোর কাজ। এগুলোর সবগুলোই মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের ১-২, ২-৩, ৩-৪, ৭-৮, ৮-৯, ৯-১০,১০-১১, ১১-১২, ১২-১৩ নং পিয়ারে বসানো হবে। সেতুর জাজিরা প্রান্তে সবগুলো স্প্যান ইতোমধ্যেই বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।এর আগে চলতি বছরের ১০ জুন পদ্মা সেতুতে সর্বশেষ বসানো হয়েছিল ৩১তম স্প্যান। করোনা আর বন্যা পরিস্থিতির কবলে সেতুর অন্যান্য কাজ চললেও আর কোনো স্প্যান বসানো হয়নি। সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮১ ভাগেরও বেশি এবং মূল সেতুর প্রায় ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।সেতু সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা যায়, আরো তিনটি স্প্যান ‘ওয়ান-এ’, ‘ওয়ান-বি’, ‘ওয়ান-সি’ সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। পরবর্তী ৪টি স্প্যান ১-২, ২-৩, ৩-৪ নম্বর পিলারে বসানো হবে। ডিসেম্বরে বাকি ৯টি স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু।৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সবকটি পিলার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড ও প্রোপারটি ডেভেলোপমেন্ট লিমিটেড (পিডিএল)। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে।