অবাধে ভারতীয় চোরাই চিনি হবিগঞ্জে আসছেঃ দেখার কেউ নেই?

সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে প্রতিদিন হবিগঞ্জে প্রবেশ করছে বিপুল পরিমাণ অবৈধ ভারতীয় চোরাই চিনি। এতে করে একদিকে যেমন সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব, অন্যদিকে মারাত্মকবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে দেশীয় চিনি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো।
হবিগঞ্জ জেলার পার্শ্ববর্তী সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই, শাল্লা উপজেলার প্রতাপপুর বাজারে গোদামজাত করার পর আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি গুদামে বস্তাবদল করার মধ্য দিয়ে হবিগঞ্জ জেলার বাজারগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে এ সকল ভারতীয় অবৈধ চিনি।
সরেজমিন অনুসন্ধান করে হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে আজমিরীগঞ্জের চোরাকারবারিদের গুদামে পৌছানোর পর ভারতীয় বস্তা পরিবর্তন করে দেশীয় চিনির বস্তার মাধ্যমে মিনিট্রাক, টমটম ও নদীপথে আজমিরীগঞ্জ বাজার,কাকাইলছেও বাজারে পাচার করা হয়।
আজমিরীগঞ্জ ও কাকাইলছেও বাজারের কতিপয় ব্যবসায়ীর যোগসাজশে ভারতীয় চিনি বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে হবিগঞ্জ জেলাসহ পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন হাটে বাজারজাত করা হচ্ছে। এছাড়াও আরো অধিক লাভের আশায় আজমিরীগঞ্জের পাহাড়পুর বাজারের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর দোকানে মওজুদ করা হয়। একই সাথে উপজেলা সদরের পুরাতন সিনেমা হল এলাকার আরো কয়েকজন ব্যবসায়ীর গুদামে অনুরূপ হাজার হাজার বস্তা চিনি মওজুদ রয়েছে বলে বিশ্বস্ত বিভিন্ন সুত্র জানিয়েছে।
সারাদেশের বিভিন্ন এলাকায় চোরাই চিনি পাচারকারীদের আটক ও চিনি জব্দ করা হলেও আজমিরীগঞ্জে এর ব্যতিক্রম। নৌকা ও গাড়িযোগে এই চিনি চোরাই ও বাজারজাত প্রকাশ্যে দিনের আলোতেই করা হচ্ছে। অথচ দেখার যেন কেউ নেই?
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, বাজারে দেশী চিনির তুলনায় ভারতীয় চিনি প্রতি কেজিতে ৩০ টাকা ব্যবধান হওয়ায় দেশীয় চিনি কেউ এখন আর বিক্রি করতে চায় না। কেউ কেউ আবার ভারতীয় চিনি বস্তা পরিবর্তন করে দেশীয় চিনি বলে বেশি দামে বিক্রি করছে। মূলতঃ প্রশাসনের তৎপরতা না থাকায় বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে চোরাই চিনি।
স্থানীয় ও ভোক্তাপর্যায়ে ভারতীয় চিনি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে। বাজারগুলিতে দেশী পরিশোধিত চিনি না থাকায় অনেকটা বাধ্য হয়েই ভারতীয় অপরিশোধিত ও ভেজাল চিনি ক্রয় করছেন গ্রাহকরা।
স্থানীয় প্রশাসন যদি সময় থাকতে সঠিকভাবে বাজার মনিটরিং না করে এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় না আনে তাহলে অপরিশোধিত ও ভেজাল চিনি ব্যবহার করে যেমন বিপুলসংখ্যক গ্রাহক নানা অজানা রোগে আক্রান্ত হবে ঠিক তেমনি অর্থনৈতিকভাবেও সরকারের বিরাট ক্ষতি হবে। পক্ষান্তরে লাভবান হবে ভারতীয় চিনি ব্যবসার সিন্ডিকেটের কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী। ভারতীয় চিনি চোরাই বন্ধ ও চোরাচালানীদের শিগগিরই আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন হবিগঞ্জে স্থানীয় পরিচ্ছন্ন ব্যবসায়ীরা।
এ ব্যাপারে আজমিরীগঞ্জের ইউএনও জুয়েল ভৌমিকের সাথে যোগাযোগ করা হল তিনি বলেন, ‘বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে দেখেছি, সঠিক তথ্য পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হব।’

You might also like