অবিরাম বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুরমা, কুশিয়ারাসহ সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এরফলে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। ডুবে যাচ্ছে রাস্তাঘাট। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নিম্নাঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষকে।এমন টানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কয়েকদিন থেকে সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বেশ সক্রিয় থাকার কারণে বৃষ্টি বেড়ে গেছে। আগামী এক সপ্তাহ তা একই রকম থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানা গেছে। ফলে আগামী প্রায় এক সপ্তাহ একইভাবে ঝরতে পারে বৃষ্টি। সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসেন এ তথ্য জানান।১ জুলাই শনিবার সকাল ৬টা থেকে ২ জুলাই রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১১১ মিলিমিটার। আর রোববার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, শনিবার থেকে বর্ষার পানিতে সুনামগঞ্জের হাওর ভরাট হয়ে যাওয়ায় এখন নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট উজানের ঢল ও বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। শনিবার দুপুরে তাহিরপুর-বিশ্বম্ভরপুর সড়কের সূত্রখলা এলাকার প্রায় ২০০ গজ রাস্তা ডুবে যায়। বর্ষায় পাহাড়ি ঢলের পানি যাওয়ার জন্য সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ গবেষণা করে প্রায় দেড় দশক আগে এই ডুবন্ত রাস্তা করেছিল।পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গেল ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে ৩৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। উজানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সুরমা, কশিয়ারা, যাদুকাটা, রক্তি, বৌলাই ও চেলাসহ জেলার প্রধান প্রধান নদীর পানি বেড়ে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।এদিকে, সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং টানা ৩ দিনের ভারি বর্ষণে সোমেশ্বরী, উব্দাখালী ও মনাই নদীর পানি বাড়ছে। এতে এই অঞ্চলের রাস্তাঘাট ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত জানা গেছে, উপজেলার চামরদানী, বংশীকু-া দক্ষিণ ও বংশীকু-া উত্তর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ও মধ্যনগর মহিষখলা সড়কের নিচু অংশ তলিয়ে গেছে। বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। ৩ দিনে পানি বেড়েছে ২ ফুটের মতো।এদিকে পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি দ্রুত বাড়ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় অর্থাৎ আগামীকাল সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ফলে এই সময়ে এ অঞ্চলের সুরমা, যাদুকাটা, সারি, গোয়াইন ও সোমেশ্বরী নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে। এতে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার কিছু কিছু নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।