অবিলম্বে বকেয়া পরিশোধের দাবি না হলে কাজে ফিরলেন হবিগঞ্জের চা শ্রমিকরা
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ ‘দীর্ঘ ৫ বছর ধরে চলছে বকেয়া সমস্যা। আজ দিচ্ছি, কাল দিচ্ছি- বলে মালিকপক্ষ নানা টালবাহানা করছে। এই করতে করতে চলে এসেছে ২০২৩ সাল। এখন পর্যন্ত ডিসি অফিসে আমরা দু’বার গেলাম। এই মালিক পরিবর্তন না হলে সমস্যা চলতেই থাকবে। তবে আমাদের বকেয়া টাকা পরিশোধ না হলে আমরা আর কাজে ফিরব না।’
হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, ২৬ জুলাই বুধবার দুপুরে ইমাম ও বাওয়ানী চা বাগানের শ্রমিকরা বকেয়া টাকার দাবিতে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিমতলা প্রাঙ্গণে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে চা শ্রমিক সমীরণ এসব কথা বলেন।
মানববন্ধনে ওই ২ বাগানের শত-শত নারী-পুরুষ শ্রমিক অংশ নেন। তারা জানান, দীর্ঘ ১৮ দিন ধরে বকেয়া টাকার জন্য মহাসড়ক অবরোধসহ নানা কর্মবিরতি পালন করছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, যতদিন ধরে এই মালিক বাগানের দায়িত্ব নিয়েছেন, ততদিন থেকে আমাদের এই সমস্যা চলছে। আমাদের ঘরবাড়ি ঠিক নেই। বাইরেও বৃষ্টিতে ভিজতে হয়। ঘরের ভিতরেও ভিজতে হয়। মালিক শুধু তারিখের পরে তারিখ করছে। আমরা আর এই মালিক চাইনা।
বক্তারা আরো বলেন, আমাদের ন্যায্য পাওনার জন্য গত ১৮দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। মহাসড়ক অবরোধ করে হাজার হাজার মানুষকে কষ্ট দিয়েছি। আমরা পরিবার নিয়ে না খেয়ে আছি। অতি দ্রুত আমাদের টাকা প্রদান করা হোক।এদিকে বুধবার দুপুরে চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও মালিকপক্ষকে নিয়ে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনে কক্ষে এক সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রিয়াংকা পাল, নবীগঞ্জের ইউএনও ইমরান শাহরিয়ার, বাওয়ানী টি এস্টেটের চেয়ারম্যান জিকে মাইনুদ্দিন চৌধুরী, বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. ফখরুল ইসলাম, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল, চা শ্রমিক ফেডারেশনের উপদেষ্টা মো. শফিকুল ইসলাম, অন্যতম নেতা খাইরুন আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।সভা শেষে ইমাম-বাওয়ানী টি এস্টেটের চেয়ারম্যান জিকে মাইনুদ্দিন চৌধুরী মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, আগামী সপ্তাহে টাকা পরিশোধ করব।বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, সমঝোতা বৈঠকে ২ আগস্ট শ্রমিকদের ২৪ লক্ষাধিক টাকা পাওনা পরিশোধ করবেন বলে মালিকপক্ষ কথা দিয়েছেন। তবে তিনি বারবার তারিখ করেও টাকা দেননি। তাই তার ওপর আস্থা রাখা কঠিন।