অবৈধ বাংলাদেশিদের বৈধতা দিতে বাইডেন প্রশাসনের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ অবৈধ অভিবাসীদের পর্যায়ক্রমে বৈধতা প্রদানের সহনশীল উদ্যোগের জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীণ প্রশাসনের ভুয়সী প্রশংসা করেছেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।একই সঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা ডকুমেন্টের বিবেচনায় অবৈধ বা অনিয়মিত অবস্থায় আছেন তাদের বৈধতা দিতে মার্কিন কতৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।এ ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের কাছে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরে আনডকুমেন্টড বাংলাদেশিদের বৈধকরণের আইনীপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে মার্কিন আইন প্রণেতা (কংগ্রেসউইমেন) গ্রেস মেঙ্গ এর সহায়তা চেয়েছেন মন্ত্রী।ঢাকার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার থেকে যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা মন্ত্রী মোমেনের সঙ্গে কংগ্রেসউইমেন গ্রেস মেঙ্গের বৈঠক হয় বুধবার।সেই বৈঠকে বাংলাদেশ কমিউনিটির কনস্যুলার সংক্রান্ত সুবিধাদির বিষয়ে আলোচনা হয়।কারণ আইন প্রণেতা গ্রেস মেঙ্গ পার্লামেন্টে নিউইয়র্কের যে এলাকার প্রতিনিধিত্ব করেন তার উল্লেখযোগ্য অংশই হচ্ছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন ভোটার।

ডেমোক্র্যাট দলীয় ওই পার্লামেন্টারিয়ানের সঙ্গে আলোচনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোমেন দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কথা বলেন। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বন্ধন কীভাবে আরও জোরদার করা যায় তা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেন তারা।মোমেন মেঙ্গকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভাবণীয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন দেখতে মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীয় আয়োজনে অংশ নিতে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সফরের এই সুযোগে আপনি মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির অবস্থাও সরজমিনে দেখতে পারেন।উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের মেক্সিকো সীমান্তে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষায় থাকা ২৫ হাজার অভিবাসন প্রত্যাশীকে অবেশেষে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। অভিবাসন আদালতের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া সম্পাদন করা হবে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি। তাদের রিপোর্টে জানানো হয়, বাইডেন প্রশাসন ট্রাম্প আমল থেকে মেক্সিকো সীমান্তে অপেক্ষায় থাকা হাজার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী ও রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনাকারীদের প্রতি সদয় হয়েছে। তাদের যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে দেয়ার বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে অভিবাসীদের গ্রহণ কার্যক্রম শুরু হবে। ওই অভিবাসীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি রয়েছেন। স্থানীয় বাংলাদেশ কমিউনিটির সরবরাহ করা তথ্য মতে,

ট্রাম্প আমলে সীমান্তে কড়াকড়ি এবং সেখানে চরম দুুর্বিসহ জীবন কাটিয়ে অনেক বাংলাদেশি দেশে ফিরে এসেছেন। লাখ লাখ টাকা খরচা করে দালাল মারফত ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ঘুরে তাদের বেশিরভাগই মেক্সিকো সীমান্তে পৌঁছে ছিলেন। সেখানে তারা স্বেচ্ছায় ধরা দিয়ে বা জেল কেটে কিংবা কারেকশন সেন্টারে থেকে পরবর্তীতে ট্রাম্প প্রশাসনের মাধ্যমে ঢাকায় ফিরেছেন। ফলে মেক্সিকো সীমান্তে এখনও অবিশিষ্ট থাকা বাংলাদেশির সংখ্যা কত হতে পারে? কমিউনিটি বা স্থানীয় বাংলাদেশ মিশন সেটি অনুমান করতে পারছে না। আবার অভিবাসীদের চাপ বেড়ে যাওয়ার ভয়ে সীমান্তে কোন দেশের কত নাগরিক অপেক্ষায় রয়েছেন মার্কিন প্রশাসনও সেই পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে না। স্মরণ করা যায়, ২০ শে জানুয়ারি দায়িত্বগ্রহণের পরপরই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউসের ক্ষমতা বলে কংগ্রেসের সমর্থন ছাড়াই তার পূর্বসূরী ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি বাতিল করার আদেশে সই করেন। ফলে বিদ্যমান নীতি অনুসারে দেশটিতে থাকা আনুমানিক এক কোটি ১০ লাখ অভিবাসীকে আইনী মর্যাদা ও নাগরিকত্ব দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাইডেন প্রশাসন।

You might also like