‘অর্জন উদযাপন করেই প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলায় করণীয় নির্ধারণ করতে হবে’
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
সত্যবাণী
লন্ডন: সাম্প্রতিক সময়ে অর্জিত জাতীয় অর্জনগুলো উদযাপন করেই অগ্রগতিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির সকল অপচেষ্টা মোকাবেলার করণীয় নির্ধারণ করতে হবে।
শনিবার লন্ডনে সত্যবাণী সম্পাদকের বাসভবনে ‘আমরা একাত্তর’ চেয়ারপার্সন, ডাকসুর প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব জামানকে ঘীরে প্রগতি মঞ্চ, ইউকে গ্রুপ সদস্যদের এক প্রাতরাশ আড্ডায় উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করা হয়।
আড্ডায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের শীর্ষ সেচ্ছাসেবী সংস্থা সীমান্তিক ও আরটিএম ইন্টারন্যাশনাল এর প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ আল কবির। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নব নির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীও এক পর্যায়ে এসে এই প্রাতরাশ আড্ডায় যোগদেন ও সিলেট নিয়ে তাঁর স্বপ্নের কথা উপস্থিত সূধীজনদের সাথে ভাগাভাগি করেন।
আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন, প্রগতি মঞ্চ গ্রুপ সদস্য মুক্তিযুদ্ধের দুই সংগঠক, বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা মাহমুদ এ রউফ, মাইগ্রেন্ট ভয়েস এর চেয়ারপার্সন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্ব জনমত সংগ্রহের লক্ষ্যে বিলেতে গঠিত প্রথম সংগঠন কাউন্সিল ফর দ্যা পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ, ইউকে’র সাধারণ সম্পাদক হাবিব রহমান, সত্যবাণী’র উপদেষ্ঠা সম্পাদক, প্রবীন সাংবাদিক ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই ইন দ্যা ইউকে’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুর রকিব, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সৈয়দ রকিব, ‘আমরা একাত্তর’ যুক্তরাজ্য শাখার সংগঠক সত্যব্রত দাশ স্বপন, সংস্কৃতিকর্মী ও সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা শাহাব আহমেদ বাচ্চু, ডাকসুর প্রাক্তন সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই ইন দ্যা ইউকে’র সংগঠক সলিসিটর সৈয়দ ইকবাল, সত্যবাণী সম্পাদক সৈয়দ আনাস পাশা, খ্যাতিমান সঙ্গীত শিল্পী লুসি রহমান, ইন্জিনিয়ার ব্যারিষ্টার মাইক্যাল ডিসকিন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার সহসভাপতি জামাল আহমেদ খান, কমিউনিটি একটিভিষ্ট আয়েশা রকিব, সংগীত শিল্পী তামান্না ইকবাল, লেখক, অনুবাদক ফেরদৌস কবির টিপু, যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আলিম উদ্দিন আহমদ ও অনুষ্ঠানের হোষ্ট সৈয়দা ফেরদৌসি পাশা কলি প্রমূখ।
বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, নতুন প্রজন্মের দেশভাবনা ও সামাজিক অবক্ষয় সবকিছুই প্রাতরাশ টেবিলের আলোচনায় স্থান পায়। আড্ডার মধ্যমনি মাহবুব জামান তাঁর আলোচনায় বারবারই হতাশা পেছনে ফেলে শুধু আশাবাদের কথাই বলার চেষ্টা করেন। আহমেদ আল কবিরের মতে সংগ্রামী ঐতিহ্যের অধিকারী বাঙালির হতাশ হওয়া সাজে না।
মাহবুব জামান বলেন, ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় আমাদের জাতীয় জীবনের প্রতিটি সংকটে ত্রাতা হয়ে মাঠে নেমেছিলো আমাদের তরুণ প্রজন্ম। আমরা এখনও এই তারুন্যের উপরই ভরসা রাখতে চাই। তিনি বলেন, ইতিবাচক বিষয়ের মধ্যেও কিছু নেতিবাচকতা থাকে, কাঙ্খিত সমাজ চাইলেই শতভাগ প্রতিষ্ঠা করা যায়না, অপশক্তিকূল তাদের আধিপত্য বজায় রাখতে সব সময়ই সচেষ্ট থাকে। এখন আমরা যদি এই কারনে অভিমান করে দুরে সরে থাকি, তাহলেতো অর্জিত অর্জনগুলোও ধরে রাখা সম্ভব হবে না। সুতরাং দুরে সরা নয়, লেগে থেকেই সমাজ প্রগতির সকল প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করতে হবে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দীর্ঘ একটি সময় আমাদের নতুন প্রজন্মকে বিকৃত ইতিহাস শেখানো হয়েছে, এমন মন্তব্য করে বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব জামান বলেন, আর যেন তা না হয়, এই প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যতটুকু বিভ্রান্তি আছে তাও দুর করতে আমাদের কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন একটি প্রগতিশীল শিক্ষা ব্যবস্থা। বঙ্গবন্ধু কন্যা এই কাজটুকু আমাদের করে দিয়ে যাবেন, এটিই আমাদের চাওয়া। তিনি বলেন আমরাতো অসম্ভবকে সম্ভব করার জাতি, আমরা পারবো না কেন? আমাদের কি অভিমান করা সাজে?
দেশ ও সমাজ নিয়ে অগ্রসর চিন্তার মানুষজনের সরবতার বিকল্প নেই, এমন মন্তব্য করে প্রাতরাশ আড্ডার অতিথি বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ আল কবির বলেন, দেশ ও সমাজ নিয়ে আমাদের ভাবনার কথা রাষ্ট্র পরিচালকদের নিয়মিতই জানাতে হবে। অর্জিত অর্জনগুলোর খবর তৃণমূলের কাছে পৌছে দিয়ে বলতে হবে উন্নয়নের প্রতিবন্ধক অপশক্তি মোকাবেলায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন। যতটুকুই কলুষিত হোক আমাদের পূর্ব প্রজন্মের দীর্ঘ সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভিত্তিক সেই অসাম্প্রদায়িক সমাজ আবার আমরা কলুষমুক্ত করবোই।