অসমাপ্ত কাজ শেষ করে ২৭ নং ওয়ার্ডের একটি মডেল ওয়ার্ডে রূপান্তর হবে আমার কাজ মোহাম্মদ আজম খান
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২৭নং ওয়ার্ডে আবারও কাউন্সিলর হিসেবে প্রার্থীতার ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর মোহাম্মদ আজম খান। গত নির্বাচনে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন এটাই তাঁর শেষ নির্বাচন। কিন্তু ওয়ার্ডবাসী ভোটার এবং শুভানুধ্যায়ীদের অনুরোধে এবারও তাঁকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হচ্ছে। ওয়ার্ডের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করে প্রতিহিংসামুক্ত মডেল ওয়ার্ড গড়তে চান কাউন্সিলর আজম খাঁন। ৫ বছর কাউন্সিলর থাকা অবস্থায় ওয়ার্ডের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন তিনি। তবে এখনও তাঁর ওয়ার্ডে অসমাপ্ত কিছু কাজ থাকায় ওয়ার্ডবাসী আবারও তাঁকে কাউন্সিলর হিসেবে চাচ্ছে বলে জানান তিনি।মোহাম্মদ আজম খান বলেন, আমি কাউন্সিলর থাকা অবস্থায় এই ওয়ার্ডে যে উন্নয়ন করেছি, তার প্রতিদান হিসেবে জনগণ এখন আমার পক্ষে। আমি এই ওয়ার্ডের জনগণের জন্য একটি আধুনিক মডেল ওয়ার্ড তৈরি করবো ও নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা স্থাপন করবো। তিনি আরো বলেন, যদি আমি নির্বাচিত হই ২৭নং ওয়ার্ডের সামান্য কাজ বাকী আছে এই কাজগুলো করে শুধু সৌন্দর্য্যবর্ধনের কাজ করবো। যাথে আগামী ৫ বছরে এই ওয়ার্ডকে একটি মডেল ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। ওয়ার্ডে প্রায় অর্ধশত রাস্তা ও ড্রেনের উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হয়েছে। আরো ৩০টির মতো টেন্ডার হয়েছে। খুব শিগগিরই এগুলোর কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, ২০০১-০৬ সময়ে বিএনপি-জামায়াত ৪ দলীয় জোট সরকারের পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসা সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকার যাকে ইতিহাসে ‘ওয়ান-ইলেভেনের সরকার’ বলা হয়ে থাকে, সে সময় তিনি একই ২৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। তৎকালীন মেয়র প্রয়াত বদর উদ্দিন আহমদ কামরান গ্রেফতার হয়ে জেলে চলে গেলে সিলেটের দায়িত্বে নিয়োজিত সেনা কর্তৃপক্ষ মোহাম্মদ আজম খানকে সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দেয়। অত্যন্ত সততা, দক্ষতা ও সফলতার সাথে তিনি প্রায় ২ বছর কাল সময় এ গুরু দায়িত্ব সামলান। এ জন্য সকল মহলে তিনি বেশ প্রশংসিত হয়েছেন। তবে মুদ্দা কথা হলো, মেয়রের গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারে থেকেও কোন প্রকারের দূর্নীতি তাঁর কেশাগ্রও স্পর্শ করতে পারেনি।ইতোমধ্যেই উন্নয়নমুলক যে কাজগুলো সম্পন্ন হয়েছে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে মোহাম্মদ আজম খান বলেন, বর্তমান মেয়াদে এ ওয়ার্ডে অনেক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে কদমতলি ৩ তলা মসজিদ থেকে শিববাড়ি রাস্তা কার্পেটিং, গোটাটিকর থেকে পাঠানপাড়া বাই লেন রাস্তা ও ড্রেন, পাঠানপাড়া ময়নার দোকান কালর্ভার্ট পর্যন্ত রাস্তা, পৈত্যপাড়া কার্লভার্ট থেকে আখড়া পর্যন্ত রাস্তা, কালিবাড়ির ড্রেন ছড়া পর্যন্ত সম্প্রসারণ, পাঠানপাড়া মকবুলের বাড়ির রাস্তা ও ড্রেন, গোটাটিকর হযরত ছুলাইপাঞ্জা (রহঃ) মাজার রোডের রাস্তা ও ড্রেন, গোটাটিকর নজরুলের বাড়ির রাস্তা ও ড্রেন, ছুলাইপাঞ্জা (রহঃ) মাজারের গেইট ও গার্ডওয়াল নির্মাণ, ফেঞ্চুগঞ্জ রোড থেকে ষাইটঘর মসজিদ পর্যন্ত আরসিসি ঢালাই রাস্তা, ষাইটঘর আঞ্জুমান কমপ্লেক্স মাদ্রাসার রাস্তা আরসিসি ঢালাই, ষাইটঘর মসজিদ থেকে মকনের বাড়ির রাস্তা আরসিসি ঢালাই, বিলাল মিয়ার বাড়ির রাস্তা, গোটাটিকর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে আলমপুর মুক্তিযোদ্ধা গেইট পর্যন্ত আরসিসি ঢালাই রাস্তা, গোটাটিকর পূর্বপাড়ার আহমদের দোকান থেকে আখতার মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত আরসিসি ঢালাই রাস্তা, আলমপুর মুক্তিযোদ্ধা গেইট থেকে আব্দুল হকের দোকান পর্যন্ত আরসিসি ঢালাই রাস্তা, আব্দুল হকের দোকান থেকে জলিলের দোকান পর্যন্ত আরসিসি ঢালাই রাস্তা, আব্দুল হকের দোকান থেকে আলমপুর জামে মসজিদ পর্যন্ত আরসিসি ঢালাই রাস্তা ও ড্রেন, আলমপুর মেইন রাস্তা হযরত জান আলী শাহ (রহঃ) স্কুল পর্যন্ত আরসিসি ঢালাই ও ড্রেন, গঙ্গানগর মেইন রাস্তা কার্পেটিং পরবর্তীতে গঙ্গানগর রহিমিয়া মাদ্রাসা পর্যন্ত আরসিসি ঢালাই রাস্তা, সিলেট-জকিগঞ্জ রোডের হবিনন্দী থেকে মুর্শেদ মুকুলের বাড়ি পর্যন্ত আরসিসি ঢালাই রাস্তা ও ড্রেন, কুশিঘাট বাজার থেকে খেয়াঘাট পর্যন্ত আরসিসি ঢালাই রাস্তা, গোটাটিকর দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের আরসিসি ঢালাই রাস্তা, পাঠানপাড়া খাঁনবাড়ি আরসিসি ঢালাই রাস্তা ও ড্রেন, গঙ্গানগর শাহিনের বাড়ির ড্রেন, ফয়সলের বাড়ির ড্রেন, হক সাহেবের বাড়ির ড্রেনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া পাঠানপাড়ার হায়দর মিয়ার বাড়ির কালভার্ট ও রাস্তা এবং সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ রোডের পাশে বাবুরছড়ার ড্রেনের কাজ চলমান অবস্থায় রয়েছে।যেসব নতুন কাজের টেন্ডার হয়েছে আলাপ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ আজম খান আরো বলেন, অনেকগুলো নতুন কাজের টেন্ডার হয়েছে, যা আমি বেশ আগেই থেকেই প্রক্রিয়াকরণ করে রেখেছিলাম। ফান্ড আসতেই কাজগুলো সম্পন্নের লক্ষ্যে টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে গোটাটিকর পয়েন্ট থেকে ষাইটঘর পর্যন্ত রাস্তা কার্পেটিং, সিলেট-জকিগঞ্জ রোডের আলমপুর শাহ বদরুজ্জামান বদরুলের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা কার্পেটিং, আলমপুর ফয়সলের বাড়ির রাস্তা ও ড্রেন, আলমপুর এডভোকেট খালেদের বাড়ির রাস্তা, গঙ্গানগর ফয়সলের বাড়ির রাস্তা, গঙ্গানগর ইকবালের বাড়ির ড্রেন, গঙ্গানগর মাসুমের বাড়ির রাস্তা, গঙ্গানগর ময়না মিয়ার বাড়ির রাস্তা, গঙ্গানগর মেইন রাস্তার অসমাপ্ত ড্রেন, গোটাটিকর এনামের বাড়ির রাস্তা, দেলোয়ারের বাড়ির রাস্তা, ছদরুল মিয়ার বাড়ির রাস্তা, ষাইটঘর মেইন রাস্তা হইতে শুভরাজের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা, গোটাটিকর বুলু মিয়ার বাড়ির রাস্তা, আমিনের বাড়ির রাস্তা, পাপ্পু মিয়ার বাড়ির রাস্তা, বান্দরঘাট জামে মসজিদ হইতে কালিবাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ও ড্রেন, পাঠানপাড়া ছয়েফ খানের বাড়ির রাস্তা ও ড্রেন, মঞ্জুর খানের বাড়ির রাস্তা ও ড্রেন, মাসুম মিয়ার বাড়ির রাস্তা ও ড্রেন উল্লেখযোগ্য।
টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন
তিনি বলেন, টেন্ডার আহবান হওয়ার পরে আরো অনেকগুলো প্রকল্প টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। যে গুলো খুব শিগগিরই টেন্ডার আহবান করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে, নুরপুর মহল্লায় ২টি আরসিসি ঢালাই রাস্তা, পাঠানপাড়া খান বাড়ির ২টি আরসিসি ঢালাই রাস্তাসহ আরো অনেকগুলো প্রকল্প টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় আছে। এছাড়া দায়িত্ব নেয়ার পর নতুন করে ১৭০টি বয়স্ক ভাতার কার্ড ও ৩৫টি প্রতিবন্ধী কার্ডের ব্যবস্থা করে দেন। একই সাথে করোনা অতিমারি ও বন্যার সময় ত্রাণ নিয়ে দাড়িয়েছেন সাধারণ মানুষের পাশে।২৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুমিনুল হক বকুল বলেন, বর্তমান কাউন্সিলর সৎ এবং যোগ্য একজন ব্যক্তি যিনি তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। কাউন্সিলর হওয়ার পরে ওয়ার্ডের ব্যাপক উন্নয়ন করেন। আমরা চাই, তিনি আবার কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি নির্বাচিত হলে ওয়ার্ডের যে কাজগুলো অসমাপ্ত আছে সেগুলো সম্পন্ন হবে।গোটাটিকর এলাকার বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন বলেন, আজম খান কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পরে ওয়ার্ডে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। পুনরায় আবার কাউন্সিলর হিসেবে আমরা তাঁকে নির্বাচিত করতে চাই।
উল্লেখ্য, মোহাম্মদ আজম খান সিটি কাউন্সিলের বাইরেও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট রয়েছেন। তিনি আ’লীগ সিলেট নগর কমিটির সিনিয়র ২নং সদস্য, অরাজনৈতিক সংগঠন সদর দক্ষিণ নাগরিক কমিটি, সিলেট’র সাধারণ সম্পাদক, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা প্রেসক্লাব, সিলেট’র পৃষ্ঠপোষক সদস্য, ২৭নং ওয়ার্ড আ’লীগ নির্বাহী কমিটির সদস্য, জহির-তাহির উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছাড়া আরো অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছেন।