আপনি না থাকলে দেশ চালাবে কে, প্রধানমন্ত্রীকে জাপা এমপি রাঙ্গা

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

জাতীয় সংসদ ভবন থেকেঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না থাকলে (বেঁচে) কে দেশ চালাবে,তা নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা।এ কারণে তিনি করোনাভাইরাসের সংক্রমণকালে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা করে তাকে সশরীরে সংসদে না এসে ভার্চুয়াল ব্যবস্থাপনায় সংসদের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার অনুরোধ জানান।তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাঙ্গার এ প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে বলেন,তিনি জীবনের ভয়ে ভীত নন। মৃত্যু যখন অবধারিত তখন মরতে একদিন হবেই। আমি এখানে (বাংলাদেশে) বেঁচে থাকার জন্য আসিনি। জীবনটা বাংলা মানুষের জন্য বিলিয়ে দিতে এসেছি।

বুধবার (১০ জুন) জাতীয় সংসদের অষ্টম অধিবেশনের শুরুর দিনে মসিউর রহমান রাঙ্গা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরাসরি সংসদে না এসে ভার্চুয়াল ব্যবস্থাপনায় নিজের বাসভবনে বসে সংসদের কার্যক্রম দেখা এবং অংশ নেওয়ার অনুরোধ করেন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড ও কানাডায় এ ব্যবস্থাপনা শুরু হয়েছে উল্লেখ করে মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন,আমি যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড ও কানাডা এই তিনটি দেশের কথা জানি। তারা ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পার্লামেন্ট পরিচালনা করছেন। তাদের অনেকেই সংসদে আসছেন না। সংসদ সদস্য হিসেবে আমাদের সংসদে আসতে অসুবিধা নেই।কিন্তু জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি সংসদে না এসে যদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাড়িতে থেকে কথা বলতেন, আমরা নিশ্চিত হতাম।’একইসঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করার সূত্র ধরে দাবি নিয়ে কথা বলছেন উল্লেখ করে রাঙ্গা বলেন, ‘দেশের যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে, এগুলো কোনও না কোনও একদিন আমরা করতে পারবো। কিন্তু উনি (শেখ হাসিনা) না থাকলে আমাদের সবার জন্য… একটা অসুবিধা বোধ করি, দেশটা চালাবে কে?’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকার দরকার নেই। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যাকে প্রয়োজন রয়েছে। আপনাকে আমি অনুরোধ করবো, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, যদি সম্ভব হয় আপনি বাসা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই পার্লামেন্টে অংশগ্রহণ করুন।পরে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মসিউর রহমান রাঙ্গার এই প্রস্তাব নাকচ করে দেন।নিজের জীবন নিয়ে কোনও চিন্তা করেন না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,জন্ম যখন হয়েছে মরতেই হবে।তাই গুলি খেয়ে মরি, বোমা খেয়ে মরি, করোনাভাইরাসে মরি,অসুস্থ হয়ে মরি।এখন কথা বলতে বলতেও মরে যেতে পারি।মৃত্যু যখন অবধারিত, তখন মৃত্যুকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

আমি ভয় কখনও পাইনি,পাবো না।আল্লাহ জীবন দিয়েছেন, জীবন আল্লাহ একদিন নিয়ে যাবেন—এটাই আমি বিশ্বাস করি। তিনি মানুষকে কিছু কাজ দেন, সেই কাজটুকু করতে হবে। আল্লাহর লিখিত আমার ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করেছেন, যতক্ষণ এই কাজটুকু শেষ না হবে, ততক্ষণ কাজ করে যাবো। কাজ শেষে আমিও চলে যাবো। এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।’ আমি এখানে (বাংলাদেশে) বেঁচে থাকার জন্য আসিনি। জীবনটা বাংলার মানুষের জন্য বিলিয়ে দিতে এসেছি। এখানে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ভয়ের কী আছে? জীবনের মায়া করলে কিংবা ভীত হলে ৭৫-এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তিনি দেশে আসতেন না বলেও এ সময় মন্তব্য করেন।

You might also like