আশা জাগিয়েও হেরে গেল টাইগাররা
স্পোর্টস ডেস্ক
সত্যবাণী
বাংলাদেশঃ টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ব্যর্থতায় খানিকটা প্রলেপ দেয়ার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে শেষের দিকে মুস্তাফিজুর রহমান-শরিফুল ইসলামদের ছন্নছড়া বোলিংয়ে সেই সুযোগ লুফে নিতে পারেনি টাইগাররা। এতে করে পাকিস্তানের কাছে ৪ উইকেটের হার দিয়ে টি-টুয়েন্টি সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ।মাঝারি লক্ষ্যে খেলতে নেমে ভালোই শুরু করেছিল পাকিস্তান। যদিও ১১ রান করা পাকিস্তানি ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ানকে বোল্ড করে আউট করেন মুস্তাফিজুর রহমান। মুস্তাফিজের অফ স্টাম্পের বল স্ট্রেইট ড্রাইভ খেলতে চেয়েছিলেন তিনি। যদিও বলের লাইন মিস করলে অফ স্টাম্প উড়ে যায় তার।মুস্তাফিজের পর পাকিস্তান শিবিরে আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বাবর আজমকে বোল্ড করেছেন এই ডানহাতি পেসার। ১০ বলে ৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক অধিনায়ক বাবর। পরের ওভারে হায়দার আলীকে নিজের শিকার বানান মেহেদি।এই অফ স্পিনারের দারুণ এক ডেলিভারিতে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়ে সাজঘরের পথ ধরেন রানের খাতা খুলতে না পারা হায়দার। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারের শেষ বলে নুরুল হাসান সোহানের দুর্দান্ত থ্রোতে রান আউট হয়েছেন শোয়েব মালিক। তাতে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৪ রান তোলে পাকিস্তান।
পাওয়ার প্লের পর পাকিস্তানের ব্যাটারদের আরও কোণঠাসা করে ফেলে বাংলাদেশের বোলাররা। উইকেট না পেলেও ফখর জামান-খুশদিল শাহকে দ্রুত রান তুলতে দেননি মেহেদি-মাহমুদউল্লাহরা। প্রথম ওভারে ২৪ রান তোলা পাকিস্তান পরের ৭ ওভারে করেছে ৪২ রান। উইকেটে না হারিয়ে পাকিস্তানকে টেনে তোলেন ফখর-খুশদিল জুটি।বাংলাদেশকে ভয় ধরানো জুটি ভাঙেন তাসকিন। ডানহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরে বল খেলতে গেলে ব্যাটের কানায় লেগে সেটি উইকেটকিপার সোহানের গ্লাভসে চলে যায়। তাতে সাজঘরে ফেরেন ৩৪ রান করা ফখর। এরপর ৩৪ রান করা খুশদিলকে আউট করেন শরিফুল ইসলাম।সপ্তম উইকেট জুটিতে ম্যাচ বের করে আনেন মোহাম্মদ নওয়াজ ও শাদাব খান। মুস্তাফিজের এক ওভারে ১৫ রান নেয়ার পর শরিফুলের ওভার থেকে এই দুই ব্যাটার তুলেছেন আরও ১৫ রান। শেষ ওভারে ২ রান প্রয়োজন হলে আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বলে ছক্কা মেরে পাকিস্তানকে জেতান শাদাব।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে হাসান আলীর করা অফ স্টাম্পের বেশ খানিকটা বাইরের বল খেলতে গিয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন নাইম শেখ। থিতু হতে পারেননি আরেক ওপেনার সাইফ হাসানও।শুরু থেকেই পাকিস্তানের পেসারদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন অভিষিক্ত এই ওপেনার। তৃতীয় ওভারের শেষ বলে মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়রের সিম মুভমেন্ট বুঝতে পারেননি সাইফ। তাতে স্লিপে থাকা ফখর জামানের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ৮ বলে ১ রান করা তরুণ এই ব্যাটার।আশা দেখালেও থিতু হতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। ওয়াসিম জুনিয়রের বলে ক্রস ব্যাটে খেলতে গিয়ে তাঁরই হাতে ক্যাচ দেন ৭ রান করা শান্ত। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ফিরেছেন ১১ বলে ৬ রান করে। মোহাম্মদ নওয়াজের বলে বোল্ড হয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
এক প্রান্তের ব্যাটারা যখন আসা যাওয়ার মিছিলে তখন অন্য প্রান্ত থেকে বাংলাদেশকে টেনে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যান আফিফ। শাদাব খানের বলে আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দিলেও পরবর্তীতে রিভিউ নেয়ার বেঁচে যান তরুণ এই ব্যাটার। জীবন পাওয়ার পর নওয়াজের ওভারে দুই বলে দুই ছক্কা মেরেছেন তিনি।দারুণ ব্যাটিংয়ে আফিফ যখন বাংলাদেশকে টেনে তোলার চেষ্টা করছিলেন তখন আফিফকে নিজের শিকার বানান শাদাব। ডানহাতি এই লেগ স্পিনারের বলে উইকেট ছেড়ে খেলতে গিয়েছিলেন তিনি। তবে শাদাবের গুগলিতে বলের লাইন মিস করে স্টাম্পিং হয়েছেন ৩৪ বলে ৩৬ রান করা আফিফ।
এরপর অবশ্য বাংলাদেশকে টেনে তোলার দায়িত্ব নেন সোহান। যদিও তার চার-ছক্কার ঝড় থামান হাসান। ডানহাতি এই পেসারের বলে উইকেটকিপার রিজওয়ানের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটেন দুই ছক্কায় ২২ বলে ২৮ রান করা সোহান।শেষ দিকে বাংলাদেশের রান ১০০ পেরিয়েছে মেহেদির ব্যাটে। ডানহাতি এই ব্যাটার করেছেন ২০ বলে অপরাজিত ৩০ রান। তাঁকে সঙ্গ দেয়া তাসকিন আহেমেদের ব্যাট থেকে এসেছে ৩ বলে ৮ রান। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশ থামে ১২৭ রানে। পাকিস্তানের হয়ে হাসান তিনটি ও ওয়াসিম জুনিয়র নিয়েছেন দুটি উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ- ১২৭/৭ (ওভার ২০) (আফিফ ৩৬, সোহান ২৮, মেহেদি ২০; হাসান ৩/২২, ওয়াসিম ২/২৪)
পাকিস্তান- ১৩২/৬ (ওভার ১৯.২) (ফখর ৩৪, খুশদিল ৩৪, শাদাব ২১*, নওয়াজ ১৮*; তাসকিন ২/৩১, মেহেদি ১/১৭)