ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা বন্ধের হুঁশিয়ারি যুক্তরাজ্যের
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডনঃ ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) চরমসীমা বেঁধে দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।রবিবার (৬ সেপ্টেম্বর) তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন,আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ইইউর সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি না হলে যুক্তরাজ্য আলোচনাই বন্ধ করে দেবে।
ব্রেক্সিটের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে যুক্তরাজ্যের।কিন্তু কোনো মতৈক্য হয়নি।ফলে এবার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে জনসনের।বরিস জনসন বলেছেন, ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ইউরোপীয় কাউন্সিলের সঙ্গে চুক্তি হতেই হবে।এর পর আর আলোচনা চালানোর কোনো অর্থ হয় না। চলতি বছরের শেষ থেকে এই চুক্তি কার্যকর হবে।জনসনের যুক্তি, ওই সময়সীমার পর আর আলোচনা করে লাভ নেই।আমরা যদি এতদিন ধরে আলোচনা করে কিছু করতে না পারি, তা হলে আর তা টেনে নিয়ে যাওয়ার অর্থ নেই।তারপর আমি মনে করব,আমাদের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি হওয়া সম্ভব নয়।মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) থেকে লন্ডনে ব্রেক্সিটের পর কী হবে তা নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা শুরু হবে।তার আগে এই হুমকি দিয়ে জনসন বাড়তি চাপ তৈরি করলেন।
এর আগে ব্রাসেলসও জানিয়েছিল, অক্টোবরের মাঝামাঝির মধ্যে এই চুক্তির কাজ শেষ করে ফেলতে হবে।কেননা,তা ইউরোপীয় পার্লামেন্টে পাস করাতে হবে।এই বছর ৩১ জানুয়ারি যুক্তরাজ্য ইইউ থেকে বেরিয়ে যায়। বহু বছর তারা ইইউ-তে ছিল।গণভোটে খুব অল্প সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ব্রেক্সিটের পক্ষে মত দেন যুক্তরাজ্যবাসী।এরপর থেকে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে।দুই পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে অনড় মনোভাবের অভিযোগ এনেছে।যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা আটকে গেছে তা হলো,যুক্তরাজ্যের সীমান্তে মাছ ধরার অধিকার এবং শিল্পগুলোকে সরকারি অনুদান দেওয়া নিয়ে।যুক্তরাজ্য দুইটি ক্ষেত্রেই পূর্ণ অধিকার দাবি করেছে।যুক্তরাজ্যের পক্ষে প্রধান আলোচনাকারী হলেন ডেভিড ফ্রস্ট।তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তাদের আশঙ্কা, নো ডিল ব্রেক্সিট হতে চলেছে। জনসন বলেছেন, ইইউ-র সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ধাঁচে চুক্তি হলেও তাকে স্বাগত জানাবে লন্ডন।
অস্ট্রেলিয়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম ও মাসুল মেনে ইইউর সঙ্গে বাণিজ্য করে। জনসন বলেছেন, সরকার সব বন্দর ও সীমান্তকে এই ধরনের চুক্তির ব্যাপারে প্রস্তুত রাখছে। আইন, নিয়ম ও মাছ ধরার ব্যাপারে আমাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আছে।আমরা ইইউর বন্ধুদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করতে রাজি। আমাদের দরজা বন্ধ হবে না।আমরা বন্ধু ও অংশীদারদের সঙ্গে বাণিজ্য করব। কিন্তু আমাদের মৌলিক বিষয়গুলির সঙ্গে কোনো সমঝোতা নয়।বরিস জনসন বলেন, ইইউ যদি তাদের বর্তমান অবস্থান বদলায়, তা হলে এখনো চুক্তি সম্ভব। অর্থাৎ, যুক্তরাজ্যে তার অনড় অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আনবে না। বরং ইইউ-কেই তার মনোভাব বদলাতে হবে বলে মনে করছেন জনসন।