ইউ কে বিডি টিভির আয়োজনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
বদরুল মনসুর
সত্যবাণী
লন্ডনঃ উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গত ২৮ শে জুন ইউ কে বিডি টিভিতে “আওয়ামীলীগ মানেই বাংলাদেশ “শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়েছে।ইউকে বিডি টিভির চেয়ারম্যান ও ওয়েলস আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা মোহাম্মদ মকিস মনসুর এর সভাপতিত্বে এবং ইউকে বিডি টিভির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও যুবলীগ বৃষ্টল বাথ এন্ড ওয়েষ্ট এর সভাপতি সাংবাদিক ইন্জিনিয়ার খায়রুল আলম (লিংকন) এর উপস্থাপনায় অনুষ্টিত পোগ্রামে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী, সাবেক বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান এমপি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর এম এ রহিম সি আই পি, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ চৌধুরী, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক এম এ সারব আলী এবং ওয়েলস আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মর্তুজা সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান এমপি,সহ সকল বক্তারা বলেন বাংলাদেশে সব থেকে সফল একটি দল, সব থেকে ত্যাগী, সব থেকে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। শুধু বাংলাদেশই বা কেন সারা বিশ্বের মধ্যে সফল রাজনৈতিক দলের মধ্যে একটি হচ্ছে এই দল। আজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রাক্কালে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি প্রাচীন এই দলটির নেতৃবৃন্দদের, যারা দুঃসময়ে এই দলটির হাল ধরেছিলেন, দলটির পাশে থেকেছেন। করোনাকালীন সময়ে নয়, বাংলাদেশ আজকে এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছে গেছে তা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যার কর্ণধার জননেত্রী শেখ হাসিনা, তারই সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নতির চরম শিখরে অবস্থান করছে।বক্তারা আর ও বলেন দেশের ধারাবাহিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন। বক্তারা বলেছেন,
৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আইয়ুবের সামরিক শাসন-বিরোধী আন্দোলন, ৬৪-এর দাঙ্গার পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা, ৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন ও ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের পথ বেয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ২৪ বছরের আপসহীন সংগ্রাম-লড়াই এবং ১৯৭১ সালের ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধ তথা সশস্ত্র জনযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের ফসল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। এবং দেশের বর্তমান উন্নয়নসহ সকল অর্জনই এসেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া বাংলার গণমানুষের সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাত ধরে। বক্তারা আর ও বলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয় ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ইতিহাস একই সূত্রে গাঁথা। আওয়ামী লীগ মানেই বাংলাদেশ! আওয়ামীলীগ মানেই বঙ্গবন্ধু আর বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলার মানচিত্র.; জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শুধু একটি নামই নয়, একটি মুক্তির পথ, একটি বিশ্বাসের নাম। তিনি ছিলেন বাঙালি জাতির পথ প্রদর্শক ও জাতির মুক্তির নায়ক। যতকাল ধরে পদ্মা-মেঘনা-গৌরী যমুনা মনু বহমান থাকবে, ততকাল বঙ্গবন্ধুর নাম বাঙালি জাতির অন্তরে লালিত হয়ে থাকবে চির অম্লান হয়ে।
২০০৮ সালে পুনরায় সরকার গঠন করে ‘ভিশন ২০২১’-এর আলোকে মধ্যম আয়ের সুখী-সমৃদ্ধশালী ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখান এবং ২০১৪ সালে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ‘ভিশন ২০৪১’-এর আলোকে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ, আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে। ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের অর্জনের ধারাবাহিকতায় বাংলার জনগণ বিশ্বাস করে নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই বাংলাদেশ একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।এ দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে সফলতার নতুন পথ দেখিয়েছেন,দেশের টাকায় পদ্মাসেতু নির্মাণ। মেট্রোরেল,কর্ণফুলী টানেল, পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সহ অসংখ্য মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
জিডিপির প্রবৃদ্ধি এবং আর্থ-সামাজিক সূচকে ‘উন্নয়ন বিস্ময়’ হিসেবে সত্যিকারার্থেই উত্থান ঘটেছে বাংলাদেশের। যে কারণে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ হিসেবে আন্তর্জাতিক বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছে বাংলাদেশ।বক্তারা আর ও বলেন জননেত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘ ৩৯ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের এ পথচলা কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না, ছিল কন্টকাকীর্ণ ও বিপদসংকুল।গণমানুষের মুক্তির লক্ষ্যে আন্দোলন সংগ্রাম করার অপরাধে তাঁকে বারবার ঘাতকদের হামলার শিকার ও কারা নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে। কিন্তু তিনি বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে ছিলেন পিতার মতোই অবিচল, দৃঢ় ও সাহসী।জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যা তনয়া পিতার প্রতিচ্ছবি হয়ে তাঁর অসমাপ্ত কাজ, ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়তে নিজের সব চাওয়া-পাওয়া, সাধ-আহলাদ জলাঞ্জলি দিয়ে অহর্নিশ ছুটে চলেছেন, অক্লান্ত শ্রম দিচ্ছেন। নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে পিতার মতোই অবিচল, দৃঢ় ও সাহসী। তিনি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষের কল্যাণে যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছেন। ‘রূপকল্প ২০২১’ এর মধ্যম আয়ের বাংলাদেশকে ‘রূপকল্প ২০৪১’ এর বাস্তবায়নের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলার আলোর মিছিলকে এগিয়ে নিতে একটি উন্নত, আধুনিক, সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক কল্যাণকামী রাষ্ট্র গঠনে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যারত্ন শেখ হাসিনা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ.
দীর্ঘ রাজনৈতিক পথ পরিক্রমায় অনেক ঘাত-প্রতিঘাত, চড়াই-উতরাই ও প্রাসাদসম ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দলটি আজ এ দেশের গণমানুষের ভাব-ভাবনার ধারক-বাহকে পরিণত হয়েছে। অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক ভাবধারার আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে দলটি। আবেগ , সংগ্রাম , জাতিসত্তা , দেশপ্রেম, মানবিকতা আর অসাম্প্রদায়িক প্রগতির মিলনে এক স্বতন্ত্র অনুভূতির নাম আওয়ামীলীগ | অনেক অমানিশা , কণ্টকাপূর্ণ অসমতল পথ আর হাজারো রক্ত নদী উজানে রেখে আসা আমাদের সম্মুখ যাত্রার অবিনশ্বর সারথি এই আওয়ামীলীগের একজন কর্মী হতে পেরে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করছি।আওয়ামী লীগের ইতিহাস সংগ্রাম, সৃষ্টি, অর্জন ও উন্নয়নের ইতিহাস।আওয়ামীলীগ মানেই বাংলাদেশ ; আওয়ামী লীগ মানেই বাঙালি জাতির ইতিহাস ; আর ইতিহাসের মহানায়ক হচ্ছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।