ইন্দো-প্যাসিফিকে সেন্টার পিস বা কেন্দ্রবিন্দুতেই বাংলাদেশের অবস্থান: বিগান
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে বাংলাদেশকে কী পার্টনার হিসাবে বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্র। একথা জানালেন ঢাকা সফররত মার্কিন উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী স্টিফেন ই বিগান। পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক শেষে অনুষ্ঠিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনের ওপেনিং স্টেটমেন্টে তিনি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে এভাবেই আখ্যায়িত করেন। আজ সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঘন্টাব্যাপী ওই বৈঠক হয়। মার্কিন মন্ত্রীর ভাষ্য মতে, ইন্দো-প্যাসিফিকে সেন্টার পিস বা কেন্দ্রবিন্দুতেই বাংলাদেশের অবস্থান। আর এ কারণেই তিনি বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।উল্লেখ্য, স্টেট ডিপার্টমেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদধারী বিগানের সফরটি চার বছরের মধ্যে ক্ষমতাসীন ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সর্বোচ্চ কোন প্রতিনিধির ঢাকা সফর।যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. মোমেন মার্কিন মন্ত্রী বিশেষত বিগানের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের ঢাকা সফরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
বলেন, আমাদের দুই দেশের যে সলিড বা খাঁটি সম্পর্ক রয়েছে এটি আরও বিস্তৃত এবং গভীরতর করার মধ্যে বন্ধু বিগানের সঙ্গে অনেক আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকা এবং এ দেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এবং যে সম্ভাবনা রয়েছে তার কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ দুনিয়ার দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের দিকে নিবদ্ধ। অত্যাসন্ন মার্কিন নির্বাচনের ক্যাম্পেইনের এই চরম ব্যস্ততম মুহুর্তে স্টেট ডিপার্টমেন্টের নাম্বার টু’র বাংলাদেশ সফরের তাৎপর্য কি এবং কেন তিনি ভারত হয়ে বাংলাদেশে এলেন এমন যুক্ত প্রশ্নের জবাবে আলাদা ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী মোমেন সাফ বলেন, পারসেপশন যাই হোক, যুক্তরাষ্ট্র কখনোই বাংলাদেশকে দিল্লির চোখে দেখে না। দেখলে আমাদের এখানে তারা আসতেন না।বাংলাদেশকে স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং এ দেশের স্বকীয়তার কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক ও বন্ধুত্ব করে। সংবাদ সম্মলনে মন্ত্রী মোমেন জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকে দেশটিতে অবস্থানরত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরতের বিষয়ে কথা হয়েছে। মন্ত্রী বিগান জানিয়েছেন, বিষয়টি তাদের অ্যাটর্নি জেনারেল দেখছেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে মোমেন দাবি করেন, বৈঠকে ইন্দো প্যাসিফিক নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। ডিফেন্স কো-অপারেশন বা মার্কিন অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব সংক্রান্ত মন্ত্রীর নিজের বক্তব্যের সূত্র ধরে গত ক’দিন ধরে গণমাধ্যমে লেখালেখি চলছে তা নিয়ে তার সঙ্গে বৈঠকে কোন কথাই হয়নি। তার ভাষ্য মতে, ডিফেন্স কো-অপারেশন বা অন্য বিষয়ে আপনারা কয়েকদিন ধরে যেটা লিখেছেন, তা নিয়ে কোন আলোচনাই হয়নি।মন্ত্রী মোমেন এবং বিগান উভয়ে জানান, ঢাকার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার বিশেষত বড় মার্কিন বিনিয়োগ নিয়ে তাদের মধ্যে বিস্তৃত আলোচনা চলছে। গত ৩০শে সেপ্টেম্বর থেকে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে একটি টিম কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি কিথ কাউথ দেশটির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের আলোচনায় বিনিয়োগের খুঁটিনাটি ঠিক হবে এবং এটি এগিয়ে যাবে বলে বিগান-মোমেন উভয়ে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বুধবার তিনদিনের সফরে ঢাকায় আসেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি সেক্রেটারি অব স্টেট (উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী) স্টিফেন ই বিগান। ঢাকা সফরের প্রথমদিন সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সকালে জাতির জনকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। বিকালে গণমাধ্যম ও সিভিল সোসাইটির সঙ্গে আলাদাভাবে বসছেন। কাল তার সফর শেষ হবে।