ইস্ট লন্ডন মসজিদের এক্সটেনশন কাজ সম্পন্ন করতে প্রয়োজন ১.৯ মিলিয়ন পাউণ্ড “আওয়ার মস্ক,আওয়ার হোম”ফান্ডরেইজিং ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

লন্ডনঃ আগামী রমজানের আগে ইস্ট লন্ডন মসজিদের ফেইজ-৩ এক্সটেনশন প্রজেক্টের কাজ সম্পন্ন করতে বিশেষ ফান্ডরেইজিংয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। “আওয়ার মস্ক, আওয়ার হোম” শীর্ষক এই ফান্ডরেইজিং ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে।এ উপলক্ষে শুক্রবার (১ ডিসেম্বর ২০২৩) বিকেলে ইস্ট লন্ডন মসজিদের বারাকা খান ভিজিটর গ্যালারিতে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয় । এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইস্ট লন্ডন মস্ক ট্রাস্টের সেক্রেটারি সিরাজুল ইসলাম হীরা । বক্তব্য রাখেন মসজিদের চেয়ারম্যান ডক্টর আব্দুল হাই মুর্শেদ । শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মসজিদের সিইও জুনায়েদ আহমদ । প্রজেক্টারের মাধ্যমে ফেইজ-৩ এক্সটেনশন প্রজেক্টের আপডেট দেন মসজিদের হেড অব অ্যাসেটস এন্ড অপারেশনস আসাদ জামান । এসময় উপস্থিত ছিলেন ইস্ট লন্ডন মসজিদের ইমাম ও খতিব শায়খ আব্দুল কাইয়ুম, বোর্ড অব ম্যানেজমেন্টের ট্রেজারার সৈয়দ তুহেল আহমদ ও ট্রাস্টি মোঃ আব্দুল মালিক।লিখিত বক্তব্যে সিরাজুল ইসলাম জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসে ইস্ট লন্ডন মসজিদের নতুন কমিটি নির্বাচিত হয়েছে । কমিটিতে নতুনত্ব এসেছে । মসজিদের সাবেক সেক্রেটারি ডক্টর আব্দুল হাই মুর্শেদ নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন । তাছাড়া মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেনের সাবেক জেনারেল সেক্রেটারি হারুন খান ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন । এছাড়া জুনায়েদ আহমদকে মসজিদের চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) নিয়োগ করা হয়েছে, যিনি আগে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন ।

জনাব সিরাজুল ইসলাম বলেন, মসজিদের ফেইজ-৩ প্রেয়ার হলের নির্মাণ কাজ চলছে । অর্থাৎ মসজিদের মূল হলের বাম দিকে নতুন একটি হল নির্মাণের কাজ চলছে । হলটির সোজা উপরে একই আকারের আরো একটি হল হবে । নিচের হলটি পুরুষের জন্য । উপরের হলটি মহিলাদের নামাজের জন্য । হল দুটোর ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৫০০ । অর্থাৎ, নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে প্রতিটি হলে ২৫০ জন করে অতিরিক্ত আরো ৫০০ নারী-পুরুষ নামাজ পড়ার সুযোগ পাবেন । তখন পুরো গ্রাউন্ড ফ্লোরে প্রায় ১২০০ পুরুষ এবং উপরে ৫৫০ জন মহিলা একসঙ্গে জামাতে নামাজ পড়তে পারবেন ।তিনি বলেন আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে আগামী রামাদ্বানের আগেই নির্মাণ কাজ শেষ করে হলটি মুসল্লিদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া । যদি বিল্ডার নিয়মিত কাজ করেন তাহলে আগামী রামাদ্বানে আমরা নতুন হলে তারাবিহের নামাজ পড়তে পারবো ইনশাআল্লাহ ।এই হলের কাজ শেষ হলে বর্তমান মুল হলের সাথে ঘেষা ওয়ালটি তুলে দেওয়া হবে । তাছাড়া মূল ইস্ট লন্ডন মসজিদের সামনের ওয়ালটিও তুলে নেওয়া হবে । তখন মসজিদের মেহরাব স্থানান্তরিত হয়ে মধ্যখানে চলে যাবে এবং পুরো হলটি অনেক প্রশস্ত হয়ে যাবে । কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়া একই সাথে কাধে কাধে রেখে মুসল্লিরা নামাজ পড়তে পারবেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে জীবনযাত্রার ব্যয় মানুষের সাধ্যের বাইরে চলে গেছে । সবকিছুতেই জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে । বিশেষ করে নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়েছে অনেকগুণ । আমরা যখন ফেইজ-৩ প্রেয়ার হল নির্মাণের কাজ শুরু করি তখন বিল্ডার যে ব্যয় বাজেট নির্ধারণ করেছিলেন এখন তা অনেকগুন বেড়ে গেছে । ফেইজ ৩ প্রেয়ার হল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২.১ মিলিয়ন পাউন্ড । বর্তমানে আমাদের হাতে আছে ১৯০ হাজার পাউন্ড । এখনও আমাদের ১.৯ মিলিয়ন পাউণ্ড প্রয়োজন । তাই আমরা বিশেষ ফান্ডরেইজিং ক্যাম্পেইন হাতে নিয়েছি । ডিসেম্বর, জানুয়ারী এবং ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে ‘প্রি-রামাদ্বান ফান্ডরেইজিং ক্যাম্পেইন’ চলবে । এই সময়ে মসজিদে বাকেট কালেকশনসহ সোশ্যাল মিডিয়ার সবগুলো সুবিধা ব্যবহার করে ফান্ডরেইজ করা হবে।ফান্ডরেইজিং পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে মুসল্লা অ্যাপিল । নিচতলা ও উপরতলায় পুরুষ ও মহিলা হলে সবমিলিয়ে ১৭০০ মুসল্লার জায়গা রয়েছে । প্রতিটি মুসল্লার জন্য ৩০০ পাউন্ড করে দান করার সুযোগ থাকবে ।মেহরাব আপিলের জন্য জনপ্রতি ৩৬৫ পাউন্ড নির্ধারণ করা হয়েছে । ১৭০০ মানুষ মেহরাবের জন্য দান করতে পারবেন । মেহরাবে ইন্টোরিয়র ডেকোরেশন, লাইটিং, সাউন্ড-সিস্টেম ও এয়ার কন্ডিশন বাবদ এই অর্থ ব্যয় করা হবে । তাছাড়া মারিয়াম সেন্টার ডনার ওয়ালে ১০০০ পাউণ্ড দান করে যেকেউ তাঁর নিজের অথবা প্রিয়জনের নাম লিপিবদ্ধ করে নিতে পারবেন।আমরা আশাবাদী কমিউনিটির মানুষ বিগত দিন যেভাবে মসজিদের উন্নয়ন কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এসেছেন এবারও তাঁরা সাহায্যের হাত প্রসারিত করবেন এবং রমজানের আগেই ফেইজ-৩ প্রেয়ার হলের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।মসজিদের চেয়ারম্যান ডক্টর আব্দুল হাই মুর্শেদ বলেন, আমরা মনে করি আপাতত এটাই হবে মসজিদের এক্সটেশনের শেষ কাজ । কারণ মসজিদ সম্প্রসারণের আর কোনো জায়গা নেই। মসজিদের অনেক করজে হাসানা আছে । আমরা আশাকরি ক্রমান্বয়ে মসজিদের করজে হাসানা পরিশোধ করে একসময় মসজিদটি একটি স্বয়ংসম্পন্ন ভিত্তির ওপর দাড় হবে এবং মসজিদ স্বনির্ভর হয়ে যাবে। ফান্ডরেইজিং ছাড়া মসজিদের আয় থেকেই মসজিদ পরিচালনা করা সম্ভব হবে।উল্লেখ্য, সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদেরকে নির্মাণাধীন ফেইজ-৩ প্রেয়ার হল ঘুরে দেখানো হয়।

You might also like