ঈদ-ই মিলাদুন্নবী উপলক্ষে সিলেটে তালামীযের বিশাল র্যালি
নিউজ ডেক্স
সত্যবাণীঃ
সিলেট থেকেঃ পবিত্র ঈদ-ই মিলাদুন্নবি (সা.) উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার উদ্যোগে ২৭ সেপ্টেম্বর বুধবার সিলেট নগরিতে ‘মোবারক র্যালি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
র্যালিতে অংশগ্রহণের জন্য সকাল থেকেই সোবহানীঘাটস্থ হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ ইয়াকুবিয়া কামিল মাদরাসা প্রাঙ্গণে সিলেট বিভাগের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা জমায়েত হন। সকাল ১০টা থেকে জোহরের পূর্ব পর্যন্ত প্রিয়নবী (সা.) এর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী ও অতিথিবৃন্দ। পরে শুরু হয় র্যালি।
এ সময় নবী (সা.)’র শানে রচিত নানা কবিতার শ্লোক অঙ্কিত নানা রঙের ফেস্টুন ও প্লেকার্ড র্যালিতে শোভাবর্ধন করে।
র্যালিপূর্ব আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) জগতের রহমতের উৎস। তাঁর আগমনে পৃথিবী অন্ধকার থেকে আলোর পথ পেয়েছিল। তিনি দুনিয়া ও আখিরাতের সরদার। তিনি শুধুমাত্র নবুওয়াত প্রকাশের পরে নয় বরং বাল্যকাল থেকেই সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন। পৃথিবীর এমন কোনও লাঞ্ছিত, বঞ্চিত, মজলুম ব্যক্তি নেই, যার স্থান তাঁর কাছে ছিলোনা। তিনি ছিলেন মজলুমদের আশ্রয়স্থল। তায়েফের ময়দানে তিনি সবচেয়ে বেশি দুঃখিত হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তায়েফবাসীকে কখনো বদ-দোয়া দেননি। তিনি ছিলেন মানবতার শিক্ষাদাতা। তিনি বদরের যুদ্ধে যুদ্ধবন্দীদের সাথে যে মানবতা দেখিয়েছেন তা পৃথিবীর মানবতার ইতিহাসে অবিস্মরণীয়।
তারা বলেন, আল্লাহর নবী (সা.) এর জন্মের আলোচনা বিদআত নয় বরং উত্তম। শুধু তাই নয় এটি সুন্নাতে এলাহি ও সুন্নাতে সাহাবি। সাহাবায়ে ক্বেরাম হেঁটে হেঁটে নবীর মিলাদ কায়েম করেছেন। উম্মতে মুহাম্মদীর মুহাব্বত আল্লাহর হাবীব (সা.) এর দরবারে পৌঁছায়। শুধু পৌঁছায় না, বরং তার পরিচয়ও তুলে ধরা হয়। পৃথিবী আজ বিপর্যস্ত। এরপূর্বে এসব এত ঘন ঘন বিপর্যয় পৃথিবীতে কখনো দেখা যায়নি। একদিকে পৃথিবীব্যাপী অশান্তি, অপরদিকে গজবের ব্যাপকতায় বিপর্যস্ত। এসব কিছুই আল্লাহর হাবীব (সা.) এর ভবিষ্যদ্বাবাণী। এসব কিছু থেকে মুক্তির সমাধান রয়েছে উসওয়ায়ে মুসতাফায়। আমাদের ঘরে-বাইরে, চিন্তা-চেতনায় রাসূল (সা.)’র আদর্শ অনুসরণ করা প্রয়োজন। তাঁর অনুসরণ ব্যতিত আল্লাহকে পাওয়ার কোনও পথ নেই। তাঁর উসওয়াকে ব্যক্তিজীবন ও সমাজজীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আনজুমানে আল ইসলাহ’র সভাপতি হযরত মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী। র্যালি বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক মোহাম্মদ হোসাইন-এর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আতিকুর রহমান সাকের-এর পরিচালনায় এতে প্রধান বক্তা ছিলেন তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহবুবুর রহমান ফরহাদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন আনজুমানে আল ইসলাহর মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা একেএম মনোওর আলী, ভারতের উজানডিহির সৈয়দ শামীম আহমদ আল মাদানী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবি এডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব, আনজুমানে আল ইসলাহর সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল মুনঈম মনজলালী, সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শেহাব উদ্দিন আলীপুরী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা নজমুল হুদা খান, অর্থ সম্পাদক মাওলানা গুফরান আহমদ চৌধুরী, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা আবু ছালেহ মো. কুতবুল আলম এবং শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ফারুকী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন র্যালি বাস্তবায়ন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক এসএম মনোয়ার হোসেন।
উপস্থিত ছিলেন তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. আলমগীর হোসাইন, মাওলানা আজির উদ্দিন পাশা, হাফিজ মাওলানা নজির আহমদ হেলাল, মাওলানা বেলাল আহমদ, মাওলানা মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোস্তফা হাসান চৌধুরী গিলমান, সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী, তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল করিম মহসিন, সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা আতাউর রহমান, মাওলানা হুমায়ূনুর রহমান লেখন, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ উসমান গণি, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাহেদুর রহমান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা হাফিজুর রহমান, আল ইসলাহ’র সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি মাওলানা তাজুল ইসলাম আলফাজ, সিলেট জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ছালেহ আহমদ, তায়্যিবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক মাওলানা মারজান আহমদ চৌধুরী ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান।
সিলেটবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতাঃ
তালামীযে ইসলামিয়া আয়োজিত পবিত্র ঈদ-ই মিলাদুন্নবি (সা.) র্যালিকে সফল ও সার্থক করে তোলাসহ সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য সর্বস্তরের সিলেটবাসী, প্রশাসন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া কর্মীদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন র্যালি বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক মোহাম্মদ হোসাইন ও সদস্য সচিব আতিকুর রহমান সাকের। তারা র্যালির কারণে নগরবাসীর যাতায়াতে সাময়িক বিঘ্ন ঘটায় আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন।