উচ্চ আদালতের নির্দেশে অভিনব কায়দায় কারাগারে বিয়ে
সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ মৌলভীবাজার জেলা কারাগারে এক অভিনব বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। আদালতের নির্দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার হাজতির সাথে এই মামলার ভুক্তভোগী যুবতীর বিয়ে সম্পন্ন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। বিয়েতে ৫ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করা হয়েছে। এ সময় জেল সুপার, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধিসহ উভয় পক্ষের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা জানান, ৩১ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে এই বিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিয়ের বর কমলগঞ্জ উপজেলার সতীঝিরগাঁও-এর ছমির আলীর ছেলে রায়হান হোসেন। ২০২২ সালের মে মাস থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে বিচারাধীন মামলায় কারাগারে আছেন তিনি। আর কনে একই মামলার ভুক্তভোগী।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে ভিকটিম এবং উভয় পরিবারের সম্মতিতে ইসলামী শরীয়া মতে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।
মৌলভীবাজার জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মলি আক্তার গণমাধ্যমকে জানান, আমি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে এখানে এসেছি। এখানে জেল সুপারসহ অন্য প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি তারা ভবিষ্যতে সুখী হবে, ভালো থাকবে। যেহেতু, মামলাটি এখনো বিচারাধীন, তাই এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আদালত থেকে পাওয়া যাবে।
বিয়ের ব্যাপারে ভুক্তভোগী কনে জানান, আমাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে ধর্ষণ করে। এর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়। মামলা পর দুই পরিবারের আলোচনার মাধ্যমে আমি এ বিয়েতে সম্মতি জানাই। এর জের হিসেবে মৌলভীবাজার জেলা কারাগারে আমাদের বিয়ে হয়। এখন সবার কাছ একটাই চাওয়া যেন আমাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হয়।
জেল সুপার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার গণমাধ্যমকে জানান, হাইকোর্টের নির্দেশে আসামী মো. রায়হান এর সঙ্গে ভিকটিমের আনুষ্ঠানিক বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে জেলা কারাগারে। এ সময় হাজতির মা ও দুই চাচা এবং ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক তাদের বিয়ে হয়েছে।
তিনি বলেন, ওয়ারেন্ট সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি এটা নারী ও শিশু ও নির্যাতন মামলা। আসামী রায়হান ২০২২ সালের ২২ মে থেকে আমাদের কারাগারে আছেন। অবশেষে আদালত যে রায় দিয়েছেন আমরা তাতে ধন্যবাদ জানাই। এতে করে দু’টি মানুষের জীবন রক্ষা হয়েছে। নয়তো আসামীর জীবন জেলেই কেটে যেতো। মেয়েটির জীবনেও নানা ধরণের সমস্যা হয়েছে। এখন মেয়েও ছেলেকে গ্রহণ করেছে, ছেলেও মেয়েকে গ্রহণ করেছে। এতে আমরা শুকরিয়া জানাই। এখন তাড়াতাড়ি যেন মামলাটির নিষ্পত্তি হয় সেজন্য আমরা আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকবো।