‘এক ব্যক্তি কোম্পানি’ খোলার সুযোগ রেখে পাস হলো সংশোধিত কোম্পানি বিল

নিউজডেস্ক
সত্যবাণী

জাতীয় সংসদভবন থেকেঃ এক ব্যক্তির কোম্পানি খোলার সুযোগ সৃষ্টিতে সংসদে বিল পাস হয়েছে। সোমবার সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এ সংক্রান্ত ‘কোম্পানি (দ্বিতীয় সংশোধন) বিল- ২০২০’ বিল পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।গত ৭ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে তোলার পর তা পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।কোম্পানি আইন অনুযায়ী এখন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি পরিচালিত হয় পরিচালনা পর্ষদের মাধ্যমে। এই পর্ষদ বা বোর্ডের পরিচালক ও চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হয়।নতুন বিলে বলা হয়েছে, ‘এক ব্যক্তির কোম্পানি’হলো সেই কোম্পানি, যার বোর্ডে সদস্য থাকবেন কেবল একজন। কোম্পানির পরিশোধিত শেয়ার মূলধন হবে অন্যূন ২৫ লাখ টাকা এবং অনধিক ৫ কোটি টাকা। সংসদে উত্থাপিত বিলে আগে পরিশোধিত মূলধন অন্যূন ৫০ লাখ টাকা এবং অনধিক ১০ কোটি টাকা রাখা হয়েছিল। সংসদীয় কমিটির সুপারিশে ধারাটি পরে পরিবর্তন করা হয়।

বিলে অব্যবহিত পূর্ববর্তী অর্থবছরের বার্ষিক টার্নওভার অন্যূন দুই কোটি টাকা এবং অনধিক ১০০ কোটি টাকার যে প্রস্তাব ছিল সংসদীয় কমিটির সুপারিশে সেটা এক কোটি ও ৫০ কোটি টাকা করা হয়।পরিশোধিত শেয়ার মূলধন এবং বার্ষিক টার্নওভার এর বেশি হলে শর্তপূরণ সাপেক্ষে এক ব্যক্তির কোম্পানিকে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি বা নিয়মানুযায়ী পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করা যাবে।এক ব্যক্তির কোম্পানিকে বছরে কমপক্ষে একটি পরিচালক সভা করতে হবে বলেও বিলে বিধান রাখা হয়েছে। তবে, পরিচালক এবং প্রধান ব্যক্তি একজন থাকেন বলে এ ধরনের কোম্পানি পর্ষদ সভা করা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় নিয়মের ছাড় পাবে।একমাত্র সদস্য মারা গেলে তার মনোনীত ব্যক্তি সকল শেয়ারের মালিক হবেন বলে প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে।এ ধরনের কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তরের ক্ষেত্রে হস্তান্তরকারীর ব্যক্তিগত উপস্থিতি এবং কমিশনের মাধ্যমে হস্তান্তর দলিলে স্বাক্ষরের বিষয়টি নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে বিলে।

বিলে আরও বলা হয়েছে, কোম্পানি উঠে গেলে পাওনাদারদের ঋণ পরিশোধে অগ্রাধিকার দিতে হবে। অনলাইনের মাধ্যমে নিবন্ধনের বিধানও রাখা হয়েছে এতে।বর্তমান আইনে ১৪ দিনের নোটিসে বোর্ড মিটিং করার বিধান আছে। প্রস্তাবিত আইনে এটাকে ২১ দিন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।বিলটি পাস প্রক্রিয়ার সময় জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান বলেন, ‘বিলটির উদ্দেশ্য ভাল। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে কোম্পানি শুনলে ভয় লাগে। এক বাড়িতেই দশটা কোম্পানি গড়ে ওঠে কি না। এক পরিবরের দশজন টাকা তুলে বিদেশ চলে যান কি না সে শঙ্কাও আছে।বিএনপির মোশাররফ হোসেন বলেন,কোম্পানি খুলে অনেক লোন নিয়ে বাইরে গিয়ে বিলাসবহুল জীবন যাপন করছে।রাষ্ট্রের টাকা যাতে লোপাট না হয় সেটাও দেখতে হবে।জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন,ভারত-পাকিস্তানেও এমন আইন আছে। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আসবে এতে করে। ব্যাংকের টাকা লুট যাতে না হয় সেজন্য সতর্ক করা যেতে পারে, ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।তবে এই আইন এখন সময়ের দাবি।”

You might also like