এখনো বিদ্যুৎ নেই সিলেটের অনেক এলাকায়
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
সিলেট: সিলেটের কুমারগাঁওয়ে ১৩২/৩৩ কেভি জাতীয় গ্রিড লাইনের উপকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ৫৩ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও সিলেটের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ নেই।অগ্নিকাণ্ডের পর মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) বেলা ১১টা থেকে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে পুরো সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার একাংশ। এর ৩১ ঘণ্টা পর বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে নগরের পাঁচ-ছয়টি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হলেও এখনো অন্ধকারে রয়েছে জেলার বেশিরভাগ এলাকা।এ অবস্থায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসীসহ আশপাশ উপজেলার প্রায় চার লাখ গ্রাহক। শুধু সিলেট নগর ও সদর উপজেলায় ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রায় ৭৫ হাজার গ্রাহক। এতে বিভিন্ন বাসাবাড়ির লোকজন ও হাসপাতালে রোগীরাও পড়েছেন বিপাকে। বিদ্যুৎ না থাকায় অফিস-আদালতের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
৫৩ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অন্ধকারে সিলেটের মানুষ। বাসাবাড়িতে দেখা দিয়েছে তীব্র পানির সংকট। পানির জন্য মানুষের মধ্যে হাহাকার চলছে। পানি সরবরাহের ব্যবস্থা বিদ্যুৎনির্ভর হওয়ায় অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছেন সিলেটবাসী। বোতলের পানি দিয়ে জরুরি কাজ সারতে দেখা গেছে অনেককে। পানির দোকানগুলোতে মানুষের দীর্ঘলাইন। পানির সন্ধানে মানুষ ছুটছে হন্তদন্ত হয়ে।দীর্ঘসময় ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। অনেকের মোবাইল ফোনের চার্জ শেষ হয়ে ফোন বন্ধ হওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। ফলে বিদ্যুৎ কখন আসবে তাও জানতে পারছেন না তারা।বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যার মধ্যে সিলেটের বিদ্যুৎব্যবস্থা পুরো স্বাভাবিক হতে পারে বলে জানিয়েছেন সিলেটের বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) প্রধান প্রকৌশলী খন্দকার মোকাম্মেল হোসেন বলেন, ‘আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে বাকি গ্রাহকদের আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারব।তিনি বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যা ৬টার আগ পর্যন্ত প্রায় আড়াই লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎবঞ্চিত ছিলেন। বুধবার ৬টার পর থেকে আমরা বেশকিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছি। এর মধ্যে যেসব যন্ত্রপাতি পুড়ে গেছে, সেগুলো সংযোজন করা হয়েছে এবং আরও কিছুর কাজ চলছে।বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ-১, ২ ও ৪ এর আওতাধীন কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। বাকি এলাকাগুলো বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করতে কাজ চলছে। পুরো স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরের তালতলা, মাছিমপুর, ঘাসিটুলা, কলাপাড়া, জল্লারপাড়, ভাতালিয়া, কুয়ারপাড়, মির্জাজাঙ্গাল, দাড়িয়াপাড়া, লামাবাজার, রিকাবিবাজার, মিরের ময়দান, আখালিয়া, দক্ষিণ সুরমা বিভিন্ন এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়নি। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে নগরের উপকণ্ঠের এলাকাগুলো ও বিভিন্ন উপজেলা।সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর বলেন, ‘আমাদের সিটি করপোরেশন এলাকায় আংশিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে সেসব এলাকার সিটি করপোরেশনের গভীর নলকূপগুলো থেকে সঙ্গে সঙ্গে পানি সরবরাহ চালু করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের পাওয়ার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টও চালু করা হয়েছে।তিনি বলেন, ‘সাধারণত রাত ৮টা পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের আওতায় পানির পাম্পগুলো চালানো হতো। এখন সেগুলো রাত ২টা পর্যন্ত চালানো হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হলে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক করতে পারব।’