এমসি কলেজে গণধর্ষণ মামলা স্থানান্তরের বিষয়ে জানতে চায় হাইকোর্ট

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট : সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটক রেখে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে কি না, তা জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ৭ আগস্ট রোববার এ আদেশ দেন। ৮ আগস্ট সোমবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এ মামলায় আদালত পরিবর্তনের আদেশ বাস্তবায়ন চেয়ে রিট করা বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম. আব্দুল কাইয়ুম লিটন। ওইদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সাবরিনা জেরিন ও ব্যারিস্টার এম. আব্দুল কাইয়ুম লিটন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।

ব্যারিস্টার কাইয়ুম বলেন, এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে গণধর্ষণ মামলায় দুই অভিযোগের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে করার নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছিলো। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশেও ওই আর্জি গ্রহণ করা হয়। ওই আদেশ বাস্তবায়নের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ১৪ আগস্ট রোববার ধার্য্য করেছেন হাইকোর্ট। এ সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে আদালত পরিবর্তনের তথ্য জানাতে বলেছেন উচ্চ আদালত।আলোচিত এ মামলাটির বিচারকাজ বর্তমানে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে চলমান বলেও জানান তিনি। এ আইনজীবী আরও বলেন, গত বছরের জানুয়ারিতে দায়েরকৃত ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয় চলতি বছরের মে মাসে। তবে এ পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি। এ কারণে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার চেয়ে মামলার বাদী ওই গৃহবধূর স্বামী এ রিট করেন। গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারিও আদালত পরিবর্তনের আদেশ চেয়ে রিট আবেদন করা হয়েছিল। এখন আবারও একই আবেদন করা হলো।
২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় মামলা করেন। এ মামলায় ৮ জনকে অভিযুক্ত করে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। অভিযুক্তরা হলেন, সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল, মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজন, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুম। ৮ আসামিই বর্তমানে কারাগারে।
গত ১৭ জানুয়ারি এ মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোহিতুল হক। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়রা জজ আদালতে পৃথক চার্জশিট দেয়া হয়। পরে বাদীপক্ষ হাইকোর্টের শরণাপন্ন হলে দু’টি মামলার বিচারকাজ একই আদালতে চলবে মর্মে আদেশ দেন হাইকোর্ট।

You might also like