ওসমানীনগরে ২ প্রবাসী রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় ৪ দিনেও ক্লু পায়নি পুলিশ

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ সিলেটের ওসমানীনগরে প্রবাসী বাবা-ছেলের মৃত্যু ও পরিবারের অন্য ৩ সদস্যের বিষক্রিয়ায় আক্রান্তের ঘটনার ৪ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো অন্ধকারে রয়েছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত ঘটনার কোন ক্লু পাওয়া যায়নি।ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা কয়েছ মিয়া জানান, নিহত রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হোসনে আরা ও তাদের ছেলে সাদিকুল ইসলামের অবস্থা উন্নতির দিকে রয়েছে। তবে, আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন তাদের একমাত্র মেয়ে সামিরা ইসলাম। তিনি এখনো রয়েছেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে। মা এবং ছেলের জ্ঞান ফিরলেও তাদের মানসিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারছে না পুলিশ। এরফলে তদন্তে দেখা দিয়েছে ধীরগতি।পুলিশ জানিয়েছে, হেফাজতে থাকা ৩ ব্যক্তির কাছ থেকে কোন ধরনের তথ্য না পাওয়ায় আপাতত তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ঘটনার প্রেক্ষিতে নিহত রফিকুল ইসলামের শ্যালক দেলোয়ার হোসেনের খবরের পরিপেক্ষিতে থানায় গত বুধবার একটি অপমৃত্যুর মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে, এই ঘটনায় সাংবাদিকদের সাথে কথা হয় নিহত রফিকুল ইসলামের শ্বশুর আনফর আলীর। তিনি জানান, ঘটনার দিন রাতে তার মেয়ের জামাই নিহত প্রবাসী রফিকুল ইসলাম রান্না করা কোন খাবার গ্রহণ করেননি। পরিবারের প্রবাসী সদস্যদের জন্য তিনি বাইরে থেকে ‘চিকেন বার্গার’ কিনে এনেছিলেন। সে খাবার খেয়ে প্রবাসী ৫ জন রাতে ঘুমিয়ে পড়েন। তিনি আরো জানান, রাতে প্রবাসীরা ভাত খেতেন না। তারা বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুড খেয়ে নিতেন। একই রুমে কেন পাঁচজন ঘুমাতেন?-এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আনফর আলী জানান, প্রবাসীদের এক সন্তান মারাত্মক অসুস্থ থাকায় তিনি একা বাথরুমে যেতে পারতেন না। তাকে পরিবারের ২ সদস্যের সহযোগিতা নিয়ে বাথরুমে যেতে হতো। এ কারণে বাসা ভাড়া নেওয়ার পর থেকেই একই রুমে প্রবাসী পাঁচজন থাকতেন। এক বিছানায় ঘুমাতেন ২ জন এবং অন্য বিছানায় ৩ জন। কিন্তু ঘটনার দিন একই বিছানায় ৪ জনকে একজনের উপরে আরেকজন অচেতন অবস্থায় পাওয়ার বিষয়টা তার কাছেও রহস্যজনক।তিনি আরো জানান, দেশে ফেরার পূর্বে তার প্রবাসী মেয়ের জামাই রফিকুল ইসলাম তাকে অনুরোধ করেছিলেন তিনি যে দেশে ফিরবেন-এ বিষয়টা কোন আত্মীয়-স্বজন যেন না জানে। তবে কেন একথা বলেছিলেন তা তিনি এখনও পরিষ্কার হতে পারেননি।সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএম বলেন, এ ঘটনায় মা ও ছেলের জ্ঞান ফিরলেও তারা এখনও কথা বলার মত মানসিকভাবে সুস্থ হননি। তাই আপাতত তাদের কাছ থেকে কোনো তথ্য নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ময়নাতদন্তের সকল রিপোর্ট হাতে আসার পর বুঝা যাবে প্রকৃত ঘটনা।

উল্লেখ্য,গত মঙ্গলবার সিলেটের ওসমানীনগরে তাজপুর স্কুল রোডের একটি বাসা থেকে এক পরিবারের ৫ যুক্তরাজ্য প্রবাসীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। হাসপাতালে নেয়ার পর উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের ধীরারাই খাতুপুর গ্রামের মৃত আবদুল জব্বারের ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম (৫০) ও তার ছোট ছেলে মাইকুল ইসলাম (১৬) মারা যান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হুছনারা বেগম (৪৫), ছেলে সাদিকুল ইসলাম (২৫) এবং মেয়ে সামিরা ইসলামকে (২০) সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

You might also like