ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিদায় করে সুপার টুয়েলভে আয়ারল্যান্ড
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
হোবার্ট: টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপ অস্টম আসরের প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিলো রেকর্ড দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ।আজ গ্রুপ ‘বি’তে প্রথম রাউন্ডে নিজেদের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের কাছে ৯ উইকেটে বড় ব্যবধানে হারলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
গ্রুপ পর্বে ৩ খেলা শেষে ২ জয় ও ১ হারে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠলো আয়ারল্যান্ড। গ্রুপ পর্বে সব ম্যাচ শেষে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিছুক্ষণ বাদে এই গ্রুপের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে জিম্বাবুয়ে ও স্কটল্যান্ড। ২ খেলায় এই দু’দলের পয়েন্ট সমান ২ করে। এ ম্যাচে যে দল জিতবে, তাদের পয়েন্ট হবে ৪। তখন এই গ্রুপ থেকে সুপার টুয়েলভে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গী হবে জিম্বাবুয়ে-স্কটল্যান্ড ম্যাচের বিজয়ী দল।
গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ জিতলেই সুপার টুয়েলভ এমন সমীকরন নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার হোবার্টে বেলেরিভ ওভালে খেলতে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আয়ারল্যান্ড।টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে শুরুতেই ধ্ক্কা খায় দলটি। তৃতীয় ওভারে ব্যক্তিগত ১ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ওপেনার কাইল মায়ার্স। দলীয় ১০ রানে মায়ার্সকে হারানোর পর দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করে বেশি দূর যেতে পারেননি আরেক ওপেনার জনসন চার্লস ও এভিন লুইস। দ্বিতীয় উইকেটে ১০ বলে ১৭ রান তুলেন তারা। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৮ বলে ২৪ রান করে বিদায় নেন চার্লস।পাওয়ার-প্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে ৪১ রান সংগ্রহ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তৃতীয় উইকেটে বড় জুটির চেষ্টা করেন লুইস ও ব্রান্ডন কিং। বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুললেও, টি-টোয়েন্টির মত ব্যাটিং ছিলো না তাদের। ৩৯ বলে ৪৪ রানে জুটি গড়তে পারেন লুইস ও কিং।ধীরলয়ে খেলে ১৮ বলে ১৩ রান করে আয়ারল্যান্ডের লেগ-স্পিনার গ্রেথ ডেলেনির শিকার হন লুইস। লুইসের বিদায়ে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক নিকোলাস পুরান। ১টি ছক্কায় ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পুরানকে ১৩ রানের বেশি করতে দেননি ডেলেনি। লুইস ও পুরানের পর রোভম্যান পাওয়েলকেও শিকার করেন ডেলেনি।
ডেনেলির ঘুর্ণিতে ১০ ওভারের পর মিডল-অর্ডারের তিন হার্ড-হিটারকে হারানোয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বড় স্কোরের পথ কঠিন হয়ে পড়ে।১৭তম ওভারের প্রথম বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান কিং। এ জন্য বল খেলেছেন ৩৯টি।কিংয়ের হাফ-সেঞ্চুরিতে ১৭ ওভার শেষে ৫ উইকেটে ১১২ রান পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ ৩ ওভারে ৩৪ রান তুলেন কিং ও ওডিন স্মিথ। এতে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৪৬ রানের অল্পস্বল্প পুঁিজ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।৪৮ বল খেলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন কিং। অপর প্রান্তে ১২ বলে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৯ রান করেন স্মিথ। ৪ ওভার বল করে ১৬ রানে ৩ উইকেট নেন ডেনেলি।১৪৭ রানের টার্গেটে দলকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন আয়ারল্যান্ডের দুই ওপেনার অধিনায়ক এন্ডি ব্যালবির্নি ও পল স্টার্লিং। পাওয়ার-প্লেতে ৬৪ রান তুলেন তারা।অষ্টম ওভারে দলীয় ৭৩ রানে ব্যালবির্নি-স্টার্লিংর উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের আকিল হোসেন। ২৩ বল খেলে ৩টি করে চার-ছক্কায় ৩৭ রান করা ব্যালবির্নিকে তুলে নেন আকিল হোসেন।বালবির্নি ফেরায় ক্রিজে যোগ দেন লরকান টাকার। উদ্বোধনী জুটির দুর্দান্ত শুরুতে চালকের আসনে বসে যায় আয়ারল্যান্ড। দ্বিতীয় উইকেটে টাকার ও স্টার্লিং সাবধানে এগোতে থাকেন। রানের গতি ধরে রেখে, ১১তম ওভারেই আয়ারল্যান্ড স্কোর ১শতে নিয়ে যান টাকার ও স্টার্লিং।
১২তম ওভারে টি-টোয়েন্টিতে ২১তম হাফ-সেঞ্চুরি পান স্টার্লিং। ১৫ ওভার শেষে আয়ারল্যান্ডের জয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। শেষ ৫ ওভারে ১৪ রান দরকার পড়ে আইরিশদের। ১৮তম ওভারের তৃতীয় বলে বাউন্ডারি মেরে আয়ারল্যান্ডের জয় ও সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করেন টাকার।৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৮ বলে ম্যাচ জয়ী ৬৬ রান করেন স্টার্লিং। ২টি করে চার-ছক্কায় ৩৫ বলে অপরাজিত ৪৫ রান করেন টাকার। ম্যাচ সেরা হন ডেলেনি।এই নিয়ে দ্বিতীয়বার টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপে গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে পরের রাউন্ডে খেলবে আয়ারল্যান্ড।এর আগে ২০০৯ সালে গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে সুপার এইটে খেলেছিলো তারা।পক্ষান্তরে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিলো ২০১২ ও ২০১৬ সালের চ্যাম্পিয়নরা ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০০৭ সালে প্রথমবার গ্রুপ পর্ব থেকে বিশ^কাপ শেষ করেছিলো ক্যারিবীয়রা।