কড়া অবস্থানে প্রশাসন কালিঘাট এলাকায় অ্যাকশন অব্যাহত

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ সিলেট মহানগরির অন্যতম প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র কালিঘাট এলাকায় টানা দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন। যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এই অভিযানে ক্বিনব্রিজের নিচ থেকে সার্কিট হাউজের সামন হয়ে কালিঘাট অবধি সকল অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ এবং অবৈধভাবে পার্কিং করে রাখা যানবাহন সরিয়ে দেয়া হয়। এই এলাকা সুশৃঙ্খল ও যানজটমুক্ত রাখতে কড়া অবস্থানের বার্তা এসেছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।সরেজমিনে দেখা গেছে, ৬ মার্চ সোমবার সকাল ১১টা থেকে জেলা প্রশাসন, সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও এসএমপির ট্রাফিক বিভাগের যৌথ অভিযান শুরু হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল ইসলাম ও নিশাত আনজুম। বিপুল সংখ্যক পুলিশ অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। অভিযান পরে বন্দরবাজার ও জিন্দাবাজার হয়ে চৌহাট্টা পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়।অভিযানে ক্বিনব্রিজের মোড় থেকে সার্কিট হাউজের সামন হয়ে কালিঘাট পর্যন্ত সড়কে অবৈধভাবে পার্কিংকৃত সকল যানবাহন সরিয়ে দেয়া হয়। এ ছাড়া এই এলাকায় সুরমা নদীর তীরবর্তী ওয়াকওয়ে দখল করে রাখা চটপটি, ফুচকার, চানাচুর ও চায়ের দোকানগুলো উচ্ছেদ করা হয়।

অভিযান প্রসঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল ইসলাম বলেন, গত ২ মার্চ জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন ও এসএমপির সাথে সিলেট জেলার বাস, ট্রাক মালিক ও শ্রমিক সমিতির সভা হয়। সভায় জনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিভিন্ন বিষয় ওঠে আসে। এরমধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সিলেট পাইলট স্কুল একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান, সার্কিট হাউজ, ক্বিনব্রিজ, আলী আমজাদের ঘড়ি, শারদা স্মৃতি ভবন, পীর হবিবুর রহমান পাঠাগার সবই গুরুত্বপূর্ণ। এই এলাকা থেকে চৌহাট্টা পর্যন্ত এলাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, প্রধান সড়কের মধ্যে পড়ে, প্রধান প্রধান স্থাপনাও আছে এখানে। এই জায়গাগুলোতে আমরা অযাচিত পার্কিং দেখতে পাই, বিশেষ করে ট্রাক। ট্রাকের অবৈধ পার্কিং রোধ করা, জনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং এই সুন্দর শহরকে আরো বেশি স্বাচ্ছন্দময় করে তোলা, জনসাধারণের চলাচলে যাতে বিঘœ না ঘটে, ছাত্রছাত্রীরা যাতে সময়মতো যাতায়াত করতে পারে এলক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে সিটি কর্পোরেশন ও এসএমপির উদ্যোগে রোববার থেকে অভিযান শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, আগামী দিনেও অভিযান অব্যাহত থাকবে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ সহযোগিতা করছেন। সাধারণ মানুষও সমর্থন দিচ্ছেন। সকলের সমন্বিত উদ্যোগে সিলেটকে সুন্দর শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চায় জেলা প্রশাসন, এমন মন্তব্য করেন তিনি।প্রায় সময়ই এ রকম অভিযান হয়। কিন্তু অভিযানের কিছু সময় পরে ফের অবৈধ পার্কিং হয়, অবৈধ দোকানপাট বসে যায়। কখনো কখনো অভিযানের বিরুদ্ধে আন্দোলনও হয়।এ প্রসঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ‘আন্দোলন একটি রাজনৈতিক, গণতান্ত্রিক অধিকার। যে কেউ এটা করতে পারেন। কিন্তু আমরা ল’ এনফোর্সমেন্ট ও ল’ ইমপ্লিমেন্টেশন প্রতিষ্ঠান। আমরা আমাদের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। যারা পুনরায় পার্কিং করবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করবো এই অভিযান ধারাবাহিকভাবে করতে, যাতে মানুষ সচেতন হয়।তাঁর মতে, কালিঘাট এলাকা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে মানুষ ও যানবাহনের চাপ বেশি। ফলে শুধুমাত্র আইন প্রয়োগ করে এ এলাকার যানজট নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ, চালক সবার সচেতনতা ও সহযোগিতা প্রয়োজন।অভিযানকালে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রোটারিয়ান জিয়াউল হক, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মো. হুরায়রা ইফতিয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য, রোববার দুপুরেও একই এলাকায় অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন।

You might also like