করোনা মোকাবিলায় তিন মাসে প্রধানমন্ত্রীর যত উদ্যোগ

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে উদ্ভূত সংকট মোকাবিলায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।গত তিন মাসে এজন্য দেশের সবমহলের মানুষের জন্য গ্রহণ করেছেন প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ। সারাদেশে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ঐকান্তিক চেষ্টার পাশাপাশি দিনমজুর ও গরিব শ্রেণির মানুষের খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করেছেন। পাশাপাশি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য অব্যাহত রাখতে ঘোষণা করেছেন ৯৫ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ। সরকার ও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি তার দল আওয়ামী লীগকেও জনগণের দোরগোড়ায় নামিয়েছেন তিনি। সরকার ও দলের সমন্বয়ে মানুষকে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের বিষয়টিও তিনি সরাসরি মনিটরিং করছেন। এভাবে দরকারি সব উদ্যোগ নিয়ে করোনা সংকট মোকাবিলায় দেশবাসীর পাশে থেকে সাহস ও উৎসাহ জুগিয়ে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

গত মার্চের শুরুতেই বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এ ভাইরাস থেকে দেশবাসীকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া শুরু করেন সরকার প্রধান। এজন্য দেশের বিমানবন্দর ও সীমান্তগুলোতে নানা রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। তবে তারপরও বিদেশ ফেরতদের অসচেতনতার কারণে দেশে এ ভাইরাস দেখা দিলে সময়োপযোগী নানা পদক্ষেপ ঘোষণা করেন তিনি। করোনাভাইরাস যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য স্থগিত করা হয় ১৭ মার্চ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বিশ্বনেতাদের অংশগ্রহণে মুজিব শতবর্ষের উন্মুক্ত অনুষ্ঠান, বাতিল করা হয় ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচি। এরপর লকডাউন শুরু হলে সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে সরকারি কাজের পাশাপাশি করোনা মোকাবিলার কাজও চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। গণভবনে থেকেই শেখ হাসিনা সামলাচ্ছেন দাফতরিক কাজ, সভা করছেন, ভিডিও কনফারেন্সে নিয়েছেন মাঠ পর্যায়ের খোঁজ, দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় নির্দেশনা। প্রয়োজনীয় ফাইল দেখছেন, স্বাক্ষর করছেন। ফোনে যোগাযোগ করছেন দলের নেতাদের সঙ্গে, এসএমএসে কেউ সহযোগিতা চাইলে তা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এসব পদক্ষেপের কারণে দেশ করোনা সংকট কাটিয়ে আবারও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদী তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার আগেই অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিদেশ থেকে ফেরতদের কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু করোনা ঠেকানো যায়নি। করোনার সংক্রমণ এদেশে ধরা পড়ার পর পরীক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হওয়ায় আমাদের সীমিত সামর্থ্য এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নত দেশগুলোর মতো শক্তিশালী না হলেও মৃত্যুহার অনেক কম। অনেক উন্নত দেশ যেখানে ১২ বা ১৪ শতাংশ পর্যন্ত মৃত্যুহার দেখেছে সেখানে এদেশে এখনও সে হার এক দশমিক তিন শতাংশ।তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর এদেশে সব কিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন মানুষ জীবিকার সংকটে পড়ে। প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব তত্ত্বাবধানে সরকারের পাশাপাশি দল থেকেও ব্যাপক ত্রাণ তৎপরতা চালানো হয়। খেটে খাওয়া মানুষের এদেশে একজনও না খেয়ে মরেনি। পাশাপাশি অর্থনৈতিক স্থবিরতা মোকাবিলায় নেওয়া হয় এক ডজনের বেশি প্রণোদনা প্যাকেজ। এভাবে প্রধানমন্ত্রী জীবন ও জীবিকা দুটোই রক্ষা করেছেন। তার এই সুদক্ষ নেতৃত্বের প্রশংসা করেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম, ফোর্বস ম্যাগাজিনসহ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রধানমন্ত্রীর সময়োপযোগী ও যথাযথ পদক্ষেপই আমাদের এ অবস্থা থেকে উত্তরণের পথে। তার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত এ প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে বলে তথ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।

লকডাউনে প্রধানমন্ত্রী তার ত্রাণ তহবিলে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহায়তা দিতে এলে তাদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে না পারলেও ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন। সেদিন তিনি নিজেই কিভাবে হাঁচি-কাশির দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে তা ভিডিও কনফারেন্সে সবাইকে দেখিয়ে দেন। নিজে যেমন মাস্ক ও গ্লাভস পরে কাজ করছেন সেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে কাজ করার অনুরোধ জানান।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী গত ৩১ মার্চ ৬৪ জেলার জন প্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন দফতরের মাঠ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে একযোগে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে সরাসরি কথা বলেন। ৩৩ দিনে প্রধানমন্ত্রী ছয় বার ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে সংযুক্ত হয়ে ৫৮টি জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন। পাশাপাশি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে তিনি ভিডিও কনফারেন্সিয়ের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম সমন্বয় করে আসছেন। করোনা সঙ্কট মোকাবিলায় ১ এপ্রিল ৩১টি, ১৬ এপ্রিল ১০টি, ২০ এপ্রিল ১৩টি এবং ২৭ এপ্রিল ১০টি নির্দেশনা দেন তিনি ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠক থেকে শুরু করে অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়েও প্রয়োজনীয় সভা নিয়মিত করে যাচ্ছেন। গত ৭ মে বৃহস্পতিবার গণভবনেই বসে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন তিনি।

এদিকে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের আয়োজনে ‘এনহ্যান্সিং রিজিওন্যাল কো-অপারেশন ইন সাউথ এশিয়া টু কমব্যাট কোভিড-১৯ রিলেটেড ইমপ্যাক্ট অন ইটস ইকোনোমিকস’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে গণভবন থেকেই যোগ দেন শেখ হাসিনা। ওই সম্মেলনে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে এ পৃথিবী শত বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সঙ্কটে পড়েছে মন্তব্য করে বিশ্বকে এক হয়ে তা মোকাবিলা করার আহ্বান জানান। এর আগে গত ১৫ মার্চ কোভিড-১৯ ঠেকানোর লড়াইয়ে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে সার্ক নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকেই যোগ দিয়েছিলেন সরকার প্রধান।

দেশের অভ্যন্তরে ভিডিও কনফারেন্সের বিভিন্ন বক্তব্যে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সারা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে ফসল উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। এক খণ্ড জমিও যেন অনাবাদি না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে কৃষকদের আহ্বান জানান তিনি।

করোনার কারণে সরকারি সাহায্যের তালিকায় দলমত নির্বিশেষে সবাইকে রাখা এবং ত্রাণে নয়-ছয় হলে দল না দেখে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি । সরকারের পক্ষ থেকে অভাবে পড়া মানুষদের ত্রাণ দেওয়া শুরু হলে, দলমত বিবেচনা না করে সঠিক তালিকা তৈরি করে প্রকৃত অসহায় মানুষের কাছে ত্রাণসহ সরকারের সহযোগিতা পৌঁছে দিতে জনপ্রতিনিধি, দলের নেতাকর্মী ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এসব অভিযোগে গত ২ জুন পর্যন্ত প্রায় ৮৫ জন জনপ্রতিনিধিকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এছাড়া ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট বিদেশি সংস্থা, চিকিৎসক পেশার প্রতিনিধিদের নিয়ে করোনা মোকাবিলায় ‘জাতীয় কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। তড়িৎ গতিতে ২ হাজার ডাক্তার ও ৫ হাজার ৫৪ জন নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সম্ভাব্য অর্থনৈতিক নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় ইতোমধ্যে ৯৫ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে-যা জিডিপি’র ৩.৩ শতাংশ। ৫০ লাখ মানুষের জন্য রেশন কার্ড করা আছে যারা ১০ টাকায় ১ কেজি চাল পান। নতুন আরও ৫০ লাখ মানুষের রেশন কার্ড করে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এতে করে ১ কোটি পরিবারকে সহায়তা দেওয়া সম্ভব হবে। যার ফলে, ৫ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। ৬৪ জেলার ত্রাণ কার্যক্রমের সমন্বয় সাধনের জন্য ৬৪ জন সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

করোনা মোকাবিলার অংশ হিসেবে যেসব সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী প্রত্যক্ষভাবে করোনাভাইরাস রোগীদের নিয়ে কাজ করছেন তাদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তাদের বিশেষ সম্মানী দেওয়া হবে। এজন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবি সদস্য এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মচারীর জন্য বিমার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি দায়িত্ব পালনকালে যদি কেউ আক্রান্ত হন, তাহলে পদমর্যাদা অনুযায়ী প্রত্যেকের জন্য থাকছে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবিমা এবং মৃত্যুর ক্ষেত্রে এর পরিমাণ ৫ গুণ বৃদ্ধি পাবে। স্বাস্থ্যবিমা ও জীবনবিমা বাবদ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৭৫০ কোটি টাকা।

প্রধানমন্ত্রীর এসব পদক্ষেপকে দূরদর্শী নেতৃত্বের উদাহরণ হিসেবে দেখছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় সচিব রেজাউল আহসান। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছেন। সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশনার পাশাপাশি দেশবাসীকেও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। ৬৪ জেলার সংসদ সদস্য, দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেছেন। অর্থনৈতিক মন্দা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছেন। গরিব ও কর্মহীনদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের ব্যবস্থা করেছেন। করোনায় দায়িত্ব পালনকারীদের জন্য বিমার ঘোষণা দিয়েছেন। অনেকগুলো প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। সর্বোপরি তিনি এই করোনা যুদ্ধে সংকট কাটিয়ে উত্তোরণের পথ দেখাচ্ছেন। তিনিই আমাদের প্রধান উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা।

করোনা মোকাবিলার অংশ হিসেবে তিনটি পরামর্শ কেন্দ্র বা হটলাইন খোলা হয়েছে। আর সারাদেশে মোট ৩৮টি প্রতিষ্ঠান হতে এই রোগ পরীক্ষা করা হচ্ছে।

বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষদের জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা
এ সংকট মোকাবিলায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ইতোমধ্যে কৃষকদের জন্য আউশ ধানের বীজ ও সার বিনামূল্যে পৌঁছানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কৃষিতে চলতি মূলধন সরবরাহের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা হচ্ছে। এ তহবিল হতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষিদের কৃষি, মৎস্য, ডেইরি এবং পোল্ট্রি খাতে ৪ শতাংশ সুদহারে ঋণ প্রদান করা হবে। এ খাতে আরও ১৪ হাজার কোটি টাকা এ তহবিলে বরাদ্দের সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। কৃষি ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। বোরো মওসুমে ৮ লাখ মেট্রিক টন ধান, ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল, ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আতপ এবং ৮০ হাজার মেট্রিক টন গমসহ সর্বমোট ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য সংগ্রহের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণে অঞ্চলভেদে উপকরণ ক্রয়ের জন্য ৭০ শতাংশ পর্যন্ত সরকারি ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে।

৬৪ জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ২৯ মে পর্যন্ত সারা দেশে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এক লাখ ৯১ হাজার ৮১৭ মেট্রিক টন এবং বিতরণ করা হয়েছে এক লাখ ৬২ হাজার ১৯৩ মেট্রিক টন । এতে উপকারভোগী পরিবারের সংখ্যা ১ কোটি ৩৬ লাখ ৮৭ হাজার ২৪৪ টি এবং উপকারভোগী লোকের সংখ্যা ৬ কোটি ১১ লাখ ৪৮ হাজার ৭৭১ জন । নগদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১১০ কোটিরও বেশি টাকা । এর মধ্যে জিআর নগদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৮৬ কোটি ৪৩ লাখ ৭২ হাজার ২৬৪ টাকা এবং বিতরণ করা হয়েছে ৭২ কোটি ৫৫ লাখ ৯৮ হাজার ৯৯৬ টাকা । এতে উপকারভোগী পরিবার সংখ্যা ৮১ লাখ ১০ হাজার ৩০৩টি এবং উপকারভোগী লোকসংখ্যা ৩ কোটি ৭৫ লাখ ১০ হাজার ৮৫৮ জন । শিশু খাদ্য সহায়ক হিসেবে বরাদ্দ ২৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা এবং এ পর্যন্ত বিতরণ করা হয়েছে ১৮ কোটি ৪৯ লাখ ৩৫ হাজার ৫৪ টাকা । এতে উপকারভোগী পরিবার সংখ্যা ৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৪০টি এবং লোকসংখ্যা ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৪৫০ জন।

করোনার কারণে সংকটে পড়ায় ৪ হাজার ৫৬৯টি ইউনিয়ন পরিষদে নিয়োজিত প্রায় ৪৬ হাজার গ্রাম পুলিশ (দফাদার ও মহল্লাদার)-কে ১,৩০০ (এক হাজার তিনশ) টাকা করে সর্বমোট ৬ কোটি টাকা বিশেষ অনুদান দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। ইমাম-মুয়াজ্জিনদের দেওয়া হয়েছে এককালীন পাঁচ হাজার করে টাকা। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে পবিত্র রমজান উপলক্ষে কওমি মাদ্রাসাগুলোকে ৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন কওমি মাদ্রাসার নেতারা।

করোনা মোকাবিলায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছে আ. লীগও
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী, দলীয় সংসদ সদস্যসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা দলের পক্ষে সারাদেশে ৯০ লক্ষ ২৫ হাজার ৩২৭ পরিবারকে খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি ৮ কোটি ৬২ লাখ ৮ হাজার টাকা নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেছে। এছাড়াও পিপিই, চশমা, মাস্ক, সাবান, হ্যান্ড গ্লাভস, ফিনাইল, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ব্লিচিং পাউডার, স্প্রে মেশিনসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ মেডিক্যাল টিম ও টেলিমেডিসিন ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়েছে এবং বিভিন্ন এলাকায় ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করা হয়েছে, যার সেবা এখনও চলমান।

সেই সঙ্গে সারা দেশে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও কৃষকলীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীরা কৃষকের ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া কর্মসূচি পালন করে আসছে। সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের উদ্যোগে বিভিন্ন জায়গায় ইফতার, সেহরি ও বিনামূল্যে সবজি বিতরণ এবং টেলিমেডিসিন, ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ও লাশ দাফনসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম গত ২৮ মে এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেমন সমৃদ্ধিশীল বাংলাদেশের যাত্রাপথে দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তেমনি করোনা প্রতিরোধ যুদ্ধেও তিনিই সামনে থেকে পথ দেখাচ্ছেন। দিন-রাত পরিশ্রম করছেন। সরকারি কাজ করছেন। দলকে নির্দেশনা দিচ্ছেন।তার পরামর্শ অনুসরণ করে আমরা কাজ করছি। তিনিই আমাদের প্রধান সিপাহসালার।সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

You might also like