কাউন্সিলর রফিক-রাসনা নাটক সাজাচ্ছেন-বিশ্বনাথ পৌর মেয়র মুহিব

সিলেট অফিস 
সত্যবাণী
বিশ্বনাথ পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান দাবি করেছেন, পৌরসভার সংরক্ষিত ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাসনা বেগম তার বিরুদ্ধে সাজানো তথ্য দিয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। যা বিশ্বনাথ থানা পুলিশ কোনোরকম তদন্ত ছাড়াই মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেছেন।
মুহিবুর রহমান দাবি করেন, তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কখনও অন্যায়-দুর্নীতির কাছে মাথা নত করেননি। অন্যায়কারী ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সবসময়ই প্রতিবাদমুখর ছিলেন। এই ধারাবাহিকতায় বিশ্বনাথে একটি রাস্তা নির্মাণকাজে কাউন্সিলর রাসনা বেগম ও তার সহযোগীদের চাঁদা দাবির প্রতিবাদ করাতেই তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট নগরির পূর্ব জিন্দাবাজারস্থ একটি কনফারেন্স হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র মুহিবুর রহমান বলেন, এই মামলা-মোকদ্দমা ও হয়রানির বিষয় নতুন নয়। যখনই কোনো নির্বাচন আসে তখনই একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগে। অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তার সমর্থিত প্রার্থীকে দুর্বল করার অপচেষ্টারও অংশ এটি বলে তাঁর দাবি।
তাঁর দাবি, গত ২৩ এপ্রিল দুপুরে পৌর এলাকার মিরেরচর গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকের সামনে থেকে কালিগঞ্জ সংযোগ রাস্তা হয়ে রামকৃষ্ণপুর পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়নকাজ চলাবস্থায় ঠিকাদার মুন্না হোসেনের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা না দেয়াতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা কাজ বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করে। হুমকি-ধমকি প্রদান করে।
বিষয়টি জানতে পেরে মেয়র কয়েকজন কাউন্সিলর ও অন্য লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তখন কাউন্সিলর রাসনা বেগম ও কাউন্সিলর রফিক মিয়া দলবল নিয়ে মেয়রের গাড়ির গতিরোধ করে। তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মেয়র ও তার লোকজনের উপর হামলার চেষ্টা চালায়। এসবের ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত আছে। যার মাধ্যমে সেদিনের পুরো চিত্র ফুটে উঠেছে। কিন্ত রাসনা বেগম পুরো চিত্র পাল্টে নতুন নাটক সাজিয়ে মেয়রকে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে মামলা দিয়েছেন।
মেয়র তাঁর বক্তব্যে দাবি করেন, এই মামলা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে দায়ের করা হয়েছে। আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি একজন প্রার্থীকে সরাসরি সমর্থন প্রদান করার কারণেই ক্ষমতাসীন দলের একজন শীর্ষ নেতার ছত্রছায়ায় এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনার পর থেকে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন উল্লেখ করে মেয়র মুহিবুর রহমান বলেন, আমার প্রাণের নিরাপত্তা চেয়ে ব্যক্তিগত গাড়িচালক মো. হেলাল মিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু প্রভাবশালী নেতাদের চাপের কারণে সেটিও মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যে মেয়র মুহিব দাবি করেন, রাসনা বেগম তার সাজানো মামলার বিবরণে যেসব অপমানজনক দাবি জানাচ্ছেন তা আদৌ সত্য নয়। তার চুল ধরে টানা-হেঁচড়ার প্রশ্নই উঠেনা। মেয়র বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি গাড়ি থেকে নেমেছিলাম। কিন্তু তাদের অসৌজন্যমূলক আচরণের কারণে আমি পুনরায় গাড়িতে উঠে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছি।
এ সময় মেয়র বলেন, আমি এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত দাবি করছি। একই সাথে সরকারী উন্নয়নকাজে বাঁধা প্রদানকারী এবং চাঁদা দাবিকারী ব্যক্তিদের যথাযথ আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
মুহিবুর রহমান বলেন, এরআগে গত ১০ মার্চ পৌর পরিষদের কয়েকজন কাউন্সিলর প্যানেল মেয়র পদে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানান। পরে ২৪ মার্চ পরিষদের মাসিক সভায় বিষয়টি আলোচিত হয়। সভায় প্যানেল মেয়র-১ ও ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রফিক মিয়ার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি কাউন্সিলর রফিক মিয়ার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ তদন্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশন, স্থানীয় প্রশাসন অথবা আদালতে মামলা দায়েরের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় বলে তিনি জানান।

You might also like