কাজ ফাঁকি দিয়ে পারিশ্রমিক নেয়ার অপরাধে বহিষ্কার হলেন নকল নবীশ মুরাদ
সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ সিলেট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নকল নবীশ বেলাল আহমদ মুরাদের বিরুদ্ধে কাজে অনিয়ম এবং সাব রেজিস্ট্রারকে হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। ৯ অক্টোবর সোমবার এ ঘটনায় তাকে বহিস্কার আদেশ প্রদান করেন সিলেট জেলা-রেজিস্ট্রার মুন্সী মোখলেছুর রহমান।
জেলা রেজিস্টারি অফিসের একটি সুত্র জানায়, সম্প্রতি সরকারের নিবন্ধন অধিদপ্তর থেকে আদেশ আসে দেশের সকল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে। তাতে বলা হয়, বালাম বইতে লিপিবদ্ধ কাজে উদাসীনতা, দায়িত্ব পালন না করা, মাসিক কার্যবিবরণী প্রস্তুত না করে পারিশ্রমিক নিচ্ছেন এমন নকল নবীশদের শনাক্ত করে এদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রার মাহবুবুর রহমান নিজের অধীন নকল নবীশদের ১২ মাসের পৃথক কার্যতালিকা তৈরীর আদেশ দেন। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মরত নকল নবীশদের পৃথক কার্য তালিকা পাওয়া গেলেও বেলাল আহমদ মুরাদের কার্য তালিকায় মিলে ভিন্ন তথ্য। তিনি দীর্ঘ ৫ বছর ধরে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের বালাম বইতে তার জন্য নির্ধারিত কোনো কাজই করেননি। তারপরও তিনি দীর্ঘদিন থেকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি অফিসে কর্মরত আছেন। এ ঘটনায় নকল নবীশ বেলাল আহমদ মুরাদের বেতন বিল বন্ধ করেন সদর সাব-রেজিস্ট্রার মাহবুবুর রহমান।
২৫ জুন দুপুর ২টায় নকল নবীশ বেলাল আহমদ মুরাদকে সদর সাব-রেজিস্ট্রার মাহবুবুর রহমান তার কক্ষে অবহিত করেন আপাতত তার বেতন প্রদান করা যাবে না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মুরাদ সাব-রেজিস্ট্রার মাহবুবুর রহমানের সাথে অশালীন আচরণ করেন। তিনি কিভাবে অফিস করেন তা তিনি দেখে নেবেন মর্মে হুমকি প্রদান করেন।
এদিকে, এ ঘটনায় জেলা-রেজিস্ট্রার মুন্সী মোখলেছুর রহমান ৪ জুলাই বালাগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার মো. হাফিজুর রহমানকে সভাপতি, বিশ্বনাথের সাব-রেজিস্ট্রার মেসবাহ উদ্দিন আহমদ ও কোম্পানীগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার মো. আখলাকুর রহমানকে সদস্য করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন।
১৬ জুলাই তদন্ত কমিটির সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান নকল নবীশ বেলাল আহমদ মুরাদের বক্তব্য ও অন্যদের তদন্তে সহযোগিতার আহবান জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে মুরাদ তার লিখিত বক্তব্য প্রদান করেন। তবে হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করেন বেলাল আহমদ মুরাদ। পরে তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতাসহ বেলাল আহমদ মুরাদ দীর্ঘ ৫ বছর ধরে সিলেট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কোনো দায়িত্ব পালন করেননি মর্মে সত্যতা পায় এবং এ সকল প্রমাণসহ সিলেট জেলা-রেজিস্ট্রার মুন্সী মোখলেছুর রহমান কাছে লিখিত তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বেলাল আহমদ মুরাদকে অফিস থেকে সাময়িক বহিস্কার করেন জেলা-রেজিস্ট্রার মুন্সী মোখলেছুর রহমান। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জেলা-রেজিস্ট্রার মুন্সী মোখলেছুর রহমান।