কাটছে না ব্রেক্সিট জট, ব্রিটেনের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপের ভাবনা ইইউ’র
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডনঃ ব্রেক্সিট জট নতুন মোড় নিয়েছে।এবার ব্রিটেনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।ইইউ’র অভিযোগ,গত জানুয়ারি মাসে স্বাক্ষরিত ব্রেক্সিট চুক্তিতে পরিবর্তন আনতে চাইছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের অবমাননা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।ইইউ কর্মকর্তা মারোস সেফচোভিচ বলেছেন, যুক্তরাজ্যের পরিকল্পিত বিলটি বিশ্বাসের গুরুতর ক্ষতি করেছে এবং ব্রিটেনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে লজ্জা পাবে ইইউ।যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভামন্ত্রী মাইকেল গোবের সঙ্গে জরুরি বৈঠকের পর এই হুমকির কথা জানান মারোস।
এই জটিলতার মধ্যেও লন্ডনে ফের ইইউ’র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ব্রিটিশ প্রতিনিধি ডেভিড ফ্রস্ট ও মিশেল বার্নিয়ার। অষ্টম দফার এই আলোচনার মূল বিষয় হলো, ব্রিটেনে রজলসীমায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার অধিকার ও শিল্পে সরকারি ভর্তুকি।বিশ্লেষকদের মতে, রফতানি বাড়াতে দেশীয় শিল্পে ব্রিটিশ সরকার যাতে ভর্তুকি না দেয় তা নিশ্চিত করতে চাইছে ইইউ। কারণ, সরকারি ভর্তুকি প্রাপ্ত বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির পক্ষে কম দামে পণ্য জোগান দেওয়া সম্ভব। এমনটা হলে মার খাবে ইইউ’র ২৭টি সদস্য দেশ।ব্রিটেন স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, কানাডা বা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে তাদের যেমন পৃথক বাণিজ্যিক চুক্তি আছে তেমনি বাকি দেশের সঙ্গেও হতে পারে।
প্রায় তিন বছর আগে ব্রিটিশ জনগণের গণভোটে দেওয়া রায়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয় ব্রিটেন। সেই প্রক্রিয়ার নামই হচ্ছে ব্রেক্সিট। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি রাত ১১ টায় ‘ব্রেক্সিট’ কার্যকর করে ইউরোপীয় ইউনিয়নথেকে বেরিয়ে যায় ব্রিটেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টে পাস হয় ব্রেক্সিট বিল। এই বিচ্ছেদ কার্যকরী করতে বেশ কিছু শর্ত নিয়ে ব্রেক্সিট বিল পাস হওয়ার আগে ইইউ’র সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেন বরিস জনসন। আন্তর্জাতিক আইন মতে, ওই চুক্তির শর্ত মানতে বাধ্য দু’পক্ষই। এখন ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে ইইউ’র সঙ্গে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে ব্রিটেনের। এবার একতরফাভাবে ‘ব্রেক্সিট চুক্তি’তে বদল ঘটাতে চাইছেন জনসন। এরপর রীতিমতো ব্রিটেনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ভাবনা শুরু করেছে ইইউ।
ইউরোপের অন্য দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্য থেকে শুরু করে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে হুট করে ইতি টানা সম্ভব নয় ব্রিটেনে পক্ষে। কারণ চুক্তি না হলে পণ্য পরিবহণসহ একাধিক বিষয়ে দেখা দেবে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা। তাই ব্রেক্সিট কার্যকরী করতে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ট্রানজিশন পিরিয়ডে রয়েছে ব্রিটেন। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী দ্রুত চুক্তি সেরে ফেলতে চাইছেন। তাই তিনি হুমকি দিয়ে জানিয়েছেন আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে এই বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষরিত না হলে আলোচনা প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়াবে ব্রিটেন। এতে যদি ব্রেক্সিট পরবর্তী পরিস্থিতিতে সমস্যা তৈরি হলে হোক।