কানাইঘাটে একদিনে ৩টি ভাসমান লাশ উদ্ধার

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি সদরের শহর এলাকায় কিছুটা উন্নতি হলেও উপজেলার অন্য এলাকায় অপরিবর্তিত রয়েছে।কানাইঘাট বাজার, উপজেলা প্রশাসনসহ আশপাশ এলাকা ও সড়কে গত বৃহস্পতিবার হাঁটুপানি ও কোমরপানি বিরাজ করলেও শুক্রবার ফুটখানেক করে পানি কমেছে। সুরমা নদীর পানি বুধবার বিপদসীমার ১৫৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বৃহস্পতিবার ১১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।এদিকে গত ৪দিন পূর্বে সুরমা নদীর মমতাজগঞ্জ খেয়াঘাট এলাকা দিয়ে নৌকাযোগে বাড়ী ফেরার পথে নৌকা ডুবে নিখোঁজ লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের নক্তিপাড়া গ্রামের ফয়জুর রহমানের পুত্র মমতাজগঞ্জ বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান (৩০) এর ভাসমান অর্ধগলিত লাশ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে সুরমা নদীর আন্দুরমুখ বাজারের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

অপর দিকে মাছ ধরতে গিয়ে গত ২দিন পূর্বে হাওর এলাকা থেকে নিখোঁজ দক্ষিণ বানীগ্রাম ইউনিয়নের ছত্রপুর গ্রামের ছয়ফুল্লাহ’র পুত্র আব্দুল্লাহ’র (২৮) লাশ বৃহস্পতিবার স্থানীয় হাওরের পেকুবিল এলাকা থেকে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গেছে।থানা পুলিশের উপস্থিতিতে পানিতে ডুবে নিহত এ দু’জনের লাশ তাদের পরিবারের কাছে দাফনের জন্য বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।অন্যদিকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে কানাইঘাট-চতুল সড়কের নাপিতখাল ব্রীজের পাশে বন্যার পানিতে ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাতনামা আরো এক ব্যক্তির লাশ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ অজ্ঞাতনামা এই ব্যক্তি লাশ শনাক্তের জন্য উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।এখনো সুরমা নদীর বিভিন্ন ভাঙ্গন কবলিত ডাইক এলাকা দিয়ে তীব্র বেগে বন্যার ঢুকছে। ফলে গোটা উপজেলার ৯০ ভাগ এলাকা বন্যার পানিতে এখনো তলিয়ে আছে। কানাইঘাট-দরবস্ত সড়কের নীচু এলাকা দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় কানাইঘাট সদরের সাথে সিলেট শহরের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। হাজার হাজার বাড়ী-ঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এবং গ্রামীন রাস্তা-ঘাট ডুবে যাওয়ায় প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্ধী হয়ে দুর্বিসহ জীবনযাপন করছেন। এখনো অনেক এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছেনি। ফলে পানিবন্ধী হয়ে হাজার হাজার মানুষ একপ্রকার অসহায় জীবন যাপন করছেন।বৃহস্পতিবার সিলেট-৫ আসনের সাংসদ সদস্য আলহাজ্জ হাফিজ আহমদ মজুমদার বন্যা দূর্গত কানাইঘাটের বাণীগ্রাম ও ঝিঙ্গাবাড়ী ইউনিয়ন পরিদর্শন করেন। এ সময় জনপ্রতিনিধিরা কানাইঘাটের ভয়াবহ বন্যার চিত্র তুলে ধরে জরুরী ভিত্তিতে সরকারিভাবে আরো বেশী ত্রাণসামগ্রী প্রেরণের দাবী জানান। সদর ও পৌর এলাকায় পানি কমার সাথে সাথে পাকা সড়কে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণসামগ্রী কম থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বানবাসী মানুষ। প্রায় ৩ হাজারের মতো মানুষ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন।

You might also like