কোস্টগার্ডকে স্বতন্ত্র বাহিনী করার পরিকল্পনা রয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, নিজস্ব জনবল নিয়োগের মাধ্যমে কোস্ট গার্ডকে স্বতন্ত্র বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।তিনি বলেন, ‘কোস্ট গার্ডে চারটি অস্ত্র ভ্যাসেল সংযুক্ত করা হয়েছে। আরও চারটি অস্ত্র ভ্যাসেল যুক্ত করা হচ্ছে। প্রয়োজনে বাহিনীটিতে এয়ার উইং সংযোজন করা হবে। সব ধরনের লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে আধুনিকায়ন করা হবে।’রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরে বাহিনীটির ২৬ তম প্রতাষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে কোস্ট গার্ডে ৪ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। আমরা কোস্ট গার্ডে নিজস্ব জনবল নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। এটি শুরু হলে কোস্ট গার্ডের নিজস্ব সদস্য থাকবে যারা স্থায়ীভাবে বাহিনীতে থেকে সেবা দিয়ে যেতে পারবেন।’

কোস্ট গার্ডের আধুনিকায়নে প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালে বিরোধী দলে থাকাকালীন কোস্ট গার্ডের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তিনি সংসদে এ সংক্রান্ত একটি বিল উত্থাপন করেন, যার ফলশ্রুতিতে কোস্ট গার্ডের যাত্রা শুরু হয়। মাত্র একটি জাহাজ দিয়ে যাত্রা শুরু করা কোস্ট গার্ড এখন বিশাল বহরে পরিনত হয়েছে।পটুয়াখালীতে একটি প্রশিক্ষণকেন্দ্রসহ বাহিনীটিকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।মাদকের চোরাচালান রোধ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মাদক চোরাচালান রোধে আমরা মোটেও ব্যর্থ না। স্থলসীমান্তে বিজিবি কাজ করছে, কিন্তু এমন কিছু স্থলসীমা আছে যেখানে বিজিবির একটি বিওপি থেকে আরেক বিওপিতে যেতে ২ দিন সময় লেগে যায়। আমরা সেসব এলাকায় সীমান্ত সড়ক নির্মাণের কাজ করছি।’

এর আগে বাহিনীটির ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কোস্ট গার্ডের ২০ জন সদস্যকে পদক প্রদান করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।এ সময় মন্ত্রী কোস্ট গার্ডের নানা সফলতা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড দুই যুগেরও অধিক সময় ধরে সমুদ্র বানিজ্য ও উপকূলীয় জনগনের নিরাপত্তা বিধানে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই এ বাহিনীকে আরো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সরকার বদ্ধপরিকর। খুব শীঘ্রই যুক্ত হবে অত্যাধুনিক অফশোর প্যাট্রল ভেসেল (ওপিভি), হোভারক্রাফ্ট ও অন্যান্য উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন জলযান। এ সকল জলযান দ্বারা এ বাহিনী অর্পিত দ্বায়িত্ব পালন করে দেশ ও জাতির কল্যাণ সাধনে তাদের কর্মকান্ড অব্যাহত রাখবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

তিনি আরও বলেন, উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত কোস্ট গার্ড এর বিভিন্ন বেইজ, স্টেশান ও আউটপোস্টে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে এ বাহিনীর পরিপূর্ণ বিকাশ সুনিশ্চিত করা হবে।কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল এম আশরাফুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পৃষ্ঠপোষকতা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সুযোগ্য ও যুগপোযোগী দিক নির্দেশনার ফলে এ বাহিনীর আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এর সদস্যগণ দেশ প্রেমের চেতনা সমুন্নত রেখে তাদের অটুট মনবল, নিরলস কর্মস্পৃহা ও কঠোর প্ররিশ্রমের মাধ্যমে সরকার কর্তৃক ঘোষিত রূপকল্প ২০৩০ ও ২০৪১ বাস্তবায়নে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে মর্মে অঙ্গিকার ব্যক্ত করছি।অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, কেস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ালল এডমিরাল এম আশরাফুল হকসসহ অন্যান্য সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বর্তমানে দেশের সমুদ্র ও উপকূলীয় অঞ্চলের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। দেশের সমুদ্রসীমা ও উপকূলীয় অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ, জনগণের জানমাল রক্ষা, চোরাচালান-মাদক-মানব পাচার দমনের পাশাপাশি নানাবিধ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ ও সহায়তা দেওয়ার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড মানুষের মধ্যে নিরাপত্তা ও আস্থার বিশ্বস্ত প্রতীকে পরিণত হয়েছে।

You might also like