খালেদা জিয়াকে বিচারের আওতায় নিয়ে নিয়ে আসতে হবে-যুক্তরাজ্যে আ’লীগের ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ

শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী

প্রবাস ডেস্ক: বিশ্বের ইতিহাসে একটি কলঙ্কময় দিন রক্তাক্ত ভয়াল-বিভীষিকাময় ২১শে আগষ্ট মৃত্যু-ধ্বংস-রক্তশ্রোতের নারকীয় গ্রেনেড হামলার ১৬তম বার্ষিকীতে যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগর উদ্যোগে ভার্চুয়েল আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়েছে। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ’র সভাপতিত্বে ও সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক’র সঞ্চালনায় ভার্চুয়েল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, আবদুল গাফফার চৌধুরী, প্রধান আলোচক ছিলেন আমির হাসান আমু, এমপি, প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন, ড. হাসান মাহমুদ এমপি। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, মো. সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি, আ.ফ.ম বাহাউদ্দীন নাছিম, এসএম কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
সভায় বক্তারা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী’ সমাবেশে অকল্পনীয় এক নারকীয় গ্রেনেড হামলা। মূলত আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করতে বিএনপি-জামায়াত তথা চার দলীয় জোট সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে তারেক জিয়ার নির্দেশে নৃশংসতম, সুপরিকল্পিত ও ঘৃণ্য এই গ্রেনেড হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত ও শোকাবহ আগষ্টে আরেকটি ১৫ আগস্ট সৃষ্টির অপচেষ্টা করেছিল পরাজিত ঘাতকচক্র।বক্তারা বলেন, গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করতে সেদিন শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল ঘাতকচক্র। ঘাতকের গ্রেনেড হামলায় রীতিমতো রক্তগঙ্গা বইয়ে গিয়েছিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের প্রাঙ্গণ। সন্ত্রাসবিরোধী আওয়ামী লীগের শান্তির সমাবেশকে ঘিরে কোলাহলপূর্ণ বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ মুহূর্তেই পরিণত হয়েছিল বীভৎস মৃত্যুপুরীতে। ভয়াল সেই হামলায় মৃত্যুজাল ছিন্ন করে প্রাণে বেঁচে গেলেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হারিয়েছেন তাঁর দু’কানের স্বাভাবিক শ্রবণশক্তি।

২১ আগষ্টের সেই রক্তাক্ত ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১৬ জন। পরে নিহতের সংখ্যা দাঁডায় ২৪ জনে। নারী নেত্রী আইভি রহমান ৫৮ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ২৪ আগষ্ট মারা যান। আহত প্রায় দেড় বছর মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ঢাকা নগর পিতা মেয়র মোহাম্মদ হানিফ। রক্তাক্ত-বীভৎস ওই ভয়াল গ্রেনেড হামলায় নিহত অন্যরা হলেন শেখ হাসিনার দেহরক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব) মাহবুবুর রহমান, হাসিনা মমতাজ, রিজিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (সবার প্রিয় আদা চাচা), রতন শিকদার, মোহাম্মদ হানিফ ওরফে মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, মোশতাক আহমেদ, লিটন মুনশি, আবদুল কুদ্দুছ পাটোয়ারী, বিল্লাল হোসেন, আব্বাছ উদ্দিন শিকদার, আতিক সরকার, মামুন মৃধা, নাসিরউদ্দিন, আবুল কাসেম, আবুল কালাম আজাদ, আবদুর রহিম, আমিনুল ইসলাম, জাহেদ আলী, মোতালেব ও সুফিয়া বেগম।

বক্তারা আরো বলেন, ২ শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় আহত ৫ শতাধিক নেতাকর্মীর দেহে স্পিøন্টার নিয়ে, হাত-পা-চোখ হারিয়ে অভিশপ্ত জীবন কাটাচ্ছেন। অসংখ্য নেতাকর্মীকে চিরদিনের জন্য বরণ করতে হয়েছে পঙ্গুত্ব, অন্ধত্ব। তাদের কেউ কেউ আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাননি।বীভৎস ওই হামলার ঘটনায় দেশে-বিদেশে গভীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করলেও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এবং আলামত নষ্ট করার নানা চক্রান্ত প্রত্যক্ষ করেছে দেশবাসী।তবে এই ভয়াল ও নারকীয় এই হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার যে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতা সময়ের ব্যবধানে দেশবাসীর সামনে প্রকাশ পেয়েছে। ভার্চুয়াল সভায় বেগম খালেদা জিয়াকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জোরালো দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।

সভায় শুরুতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ শোক বার্তা পাঠ করেন সুলতান মাহমুদ শরীফ। শ্রদ্ধাবনত চিত্তে ইতিহাসের ভয়াবহতম গ্রেনেড হামলার সকল শহীদান। ১৫ই আগস্টে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুহিবুর রহমান তাঁর পরিবার পরিজন বিভিন্ন গনতান্ত্রীক আন্দোলনের আতœাহুতি দানকারি সকল শহীদের আতœার মাগফিরাত কামনা কওে মোনাজাত করা হয়।এ সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

You might also like