গভীর সমুদ্রে কৌশলগত অংশীদারত্ব গড়ে তোলার আহ্বান বাংলাদেশের
নিউজডেস্ক
সত্যবাণী
বাংলাদেশঃ প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমার শান্তিপূর্ণ মীমাংসার পর সুনীল অর্থনীতি (ব্লু ইকোনমি) বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন খাত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
তিনি বলেন, সুনীল অর্থনীতি থেকে উদ্ভূত সম্ভাবনার পূর্ণ সুফল ঘরে তুলতে আমাদের প্রয়োজন সমুদ্র সম্পদে বিশেষ করে জাতীয় সমুদ্র সীমানার বাইরে এবং আন্তর্জাতিক সমুদ্র-তলদেশ কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ন্যায়সঙ্গত অংশীদারিত্ব।আন্তর্জাতিক সমুদ্র-তলদেশ কর্তৃপক্ষ প্রণীত সমুদ্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণার খসড়া কর্ম-পরিকল্পনার উপর আয়োজিত উচ্চ-পর্যায়ের এক ভার্চ্যুয়াল সভায় তিনি এ কথা বলেন।বুধবার (১৮ নভেম্বর) জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়ন এবং জাতিসংঘের সমুদ্র বিজ্ঞান দশককে এগিয়ে নিতে এই কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।
বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহীত রূপকল্প-২০৪১ এর উদাহরণ টেনে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, দেশের সমুদ্র সম্পদের কার্যকর ব্যবহার ও বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বিনির্মাণে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করছে যাতে রূপকল্প-২০৪১ এর অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হয়। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমার শান্তিপূর্ণ মীমাংসার পর সুনীল অর্থনীতি বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন খাত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে ।বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি আন্তর্জাতিক সমুদ্র তলদেশ কর্তৃপক্ষসহ অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে গভীর সমুদ্র এলাকায় যৌথভাবে গবেষণা পরিচালনা করার বিষয়ে বাংলাদেশের গভীর আগ্রহের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।গভীর সমুদ্র তলদেশে গবেষণা এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক সমুদ্র তলদেশ কর্তৃপক্ষ গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগসমূহকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
গভীর সমুদ্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালনার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের উপর জোর দেন তিনি। এগুলো হলো- উন্নয়নশীল দেশসমূহে সক্ষমতা বিনির্মাণ ও কারিগরি ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করা, সকলের অন্তর্ভুক্তি এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রতিটি স্তরে বহু-অংশীজন ভিত্তিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা, পর্যাপ্ত, সম্ভাব্য ও উদ্ভাবনী অর্থায়ন নিশ্চিত করা এবং সর্বোপরি সমুদ্র-পরিবেশ ও এর জীববৈচিত্র্য অক্ষুন্ন রাখা। এছাড়া গভীর সমুদ্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিষয়েও গুরুত্ব দেন তিনি।অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক সমুদ্র তলদেশ কর্তৃপক্ষের মহাসচিব মাইকেল ডব্লিউ লজ।এছাড়া কোরিয়ার সমুদ্র ও মৎস্য সম্পদ মন্ত্রী, নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টেট সেক্রেটারি এবং জাতিসংঘ সদস্য দেশসমূহের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধিরা সভায় অংশ নেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সমুদ্র তলদেশ কর্তৃপক্ষ পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে।