গোলাপগঞ্জ আরপিজিসিএল প্ল্যান্ট বন্ধ প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক প্রতি ৫০ ঘন্টা ওভারটাইম!
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার আরপিজিসিএল (রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানী) এর কৈলাশটিলা এলপিজি প্ল্যান্টের উৎপাদন প্রায় পৌনে ২ বছর থেকে বন্ধ থাকলেও সেখানে কর্মরত প্রত্যেক শ্রমিক মাসে ৫০ ঘন্টা ওভারটাইম পাচ্ছেন।প্রতিষ্ঠানের ১১ জন শ্রমিককে প্রতি মাসে বেতনের সাথে দেয়া হচ্ছে ৫০ ঘন্টা ওভারটাইমের অর্থ। দীর্ঘদিন থেকে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন বন্ধ থাকা অবস্থায় প্রত্যেক শ্রমিককে ওভারটাইম দেয়ার ব্যাপারে রক্ষণাবেক্ষণ (মেইনটেনেন্স) এর জন্য শ্রমিক প্রয়োজন হওয়ায় ওভারটাইম দেয়া হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সময় গোলাপগঞ্জ উপজেলা সদরের টিকরবাড়ি এলাকায় স্থাপিত হয় এলপি গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আরপিজিসিএল এর কৈলাশটিলা এলপিজি প্ল্যান্ট। কৈলাশটিলা এলপিজি প্ল্যান্টের উৎপাদিত পেট্রোল মানসম্পন্ন না হওয়ায় গত ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিপিসি পেট্রোল নেয়া বন্ধ করে দেয়। এরপর প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
আরপিজিসিএল এর কৈলাশটিলা এলপিজি প্ল্যান্ট বন্ধ থাকলেও এর শ্রমিকরা প্রতিমাসে বেতনের সাথে ৫০ ঘন্টা করে ওভারটাইম পাচ্ছেন। প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বন্ধ থাকা অবস্থায় শ্রমিকদের ওভারটাইম দেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে, কৈলাশটিলা এলপিজি প্ল্যান্টের উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মুহাম্মদ আলী আজ্জাহিদ খান বলেন, পেট্রোলিয়াম উৎপানকারী প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন, রক্ষণাবেক্ষণ, অর্থ, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলেও সেখানে অবিক্রিত পেট্রোলিয়াম মজুদ রয়েছে। তাই রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শ্রমিকদের ওভারটাইম দিতে হয়। এরপরও প্রতিমাসে ওভারটাইম ৮০ ঘন্টা থেকে কমিয়ে ৫০ ঘন্টা করা হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়া অন্য বিভাগগুলোর শ্রমিকদের ওভারটাইম দেয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, কাউকে মনো:ক্ষুন্ন না করতে একটু সমন্বয় করে ওভারটাইম দেয়া হয়। ওভারটাইম দেয়ার জন্য তিনি প্রস্তাব করলেও আরপিজিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কার্যালয় থেকে সিদ্ধান্ত দেয়া হয় বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে আরপিজিসিএল এর মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) প্রকৌশলী খালেদা বেগম বলেন, প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বন্ধ থাকায় প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিক সংখ্যা কমে গেছে। তাই বিভিন্ন বিভাগের শ্রমিকদের সমন্বয় করে ওভারটাইম দেয়া হয়, এটা খুবই সামান্য।
উল্লেখ্য, উৎপাদন বন্ধ থাকায় আরপিজিসিএল প্ল্যান্ট উপজেলার দাড়িপাতনস্থ সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ‘কৈলাশটিলা এমএসটিই গ্যাস ফিল্ড’এর খনি থেকে উত্তোলিত এনজিএল (এলপি গ্যাস ও পেট্রোল তৈরির কাঁচামাল) না নেয়ায় গ্যাস ফিল্ড প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার এনজিএল পুড়িয়ে ধ্বংস করছে। অপরদিকে আরপিজিসিএল প্ল্যান্টের উৎপাদিত এলপি গ্যাসের উপর নির্ভর করে পাশেই স্থাপিত এলপি গ্যাস বটলিং কারখানা (সিলিন্ডার গ্যাস) এলপি গ্যাস না পেয়ে প্রায় পৌনে ২ বছর থেকে বন্ধ হয়ে আছে। এলপি গ্যাস বটলিং (সিলিন্ডার গ্যাস) কারখানা থেকে প্রতিমাসে ৮শ’ থেকে ১ হাজার নিম্নআয়ের পরিবারকে কমমূল্যে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ করতো। এলপি গ্যাস বটলিং কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিম্নআয়ের মানুষ এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। তারা অবিলম্বে আরপিজিসিএল এর কৈলাশটিলা এলপিজি প্ল্যান্ট ও এলপি গ্যাস বটলিং প্ল্যান্ট চালু এবং এমএসটিই গ্যাস ফিল্ডে মূল্যবান খনিজ সম্পদ এনজিএল পুড়িয়ে ধ্বংস করা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে জোর দাবি জানান।