গ্যাস সংকটের কারণে সিলেটে বাড়ছে লোডশেডিং

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ জ্বালানির আন্তর্জাতিক বাজারে যে অস্থিরতা তৈরি করেছে, তার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনেও। সে কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিঘœ সৃষ্টি হয়ে লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।শতভাগ বিদ্যুতায়নের পথে এগিয়ে চলা বাংলাদেশে লোডশেডিং হারিয়ে গেছে বলেই সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছিল। এরমধ্যেই গত কয়েকদিন ধরে সিলেটসহ রাজধানী ও গ্রামাঞ্চলে প্রায়ই বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এই অবস্থার মধ্যে রোববার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পাতায় দেয়া এক পোস্টে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, “গ্যাস স্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন পুনরায় স্বাভাবিক হবে।

কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির উচ্চমূল্য ও সরবরাহ অন্য সব দেশের মতো আমাদেরকেও সমস্যায় ফেলেছে। এ পরিস্থিতিতে আপনাদের সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি।বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) হিসেবে, রোববার সন্ধ্যায় ১৪,২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা ধরা হয়েছে। কিন্তু জ্বালানি স্বল্পতার কারণে ৮০০ থেকে ৯০০ মেগাওয়াট কম উৎপাদন হবে বলে জানান পিডিবির একজন কর্মকর্তা।পিডিবি’র ১৫২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ২২ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। তবে ক্যাপটিভসহ মোট উৎপাদন ক্ষমতা সাড়ে ২৫ হাজার মেগাওয়াটের মতো।এরমধ্যে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৫১ শতাংশ, তেলভিত্তিক এইচএফও ও এইচডিও কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৩৪ শতাংশ। কয়লা থেকে প্রায় ৮ শতাংশ, আমদানি থেকে ৫ শতাংশ বিদ্যুৎ আসে। বাকিটা পূরণ করে সৌর ও পানিভিত্তিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি।পিডিবির ওই কর্মকর্তা বলেন, “জ্বালানি সরবরাহ ঠিক থাকলে চাহিদারও অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করার মতো যথেষ্ট কেন্দ্র আমাদের রয়েছে। কিন্তু আজকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য গ্যাসের যে চাহিদা রয়েছে, তার অর্ধেকও হয়ত আমরা পাব না।

দেশের তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ কর্পোরেশন পেট্রোবাংলার দৈনিক গ্যাস প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর চাহিদার মাত্র ৪২ শতাংশ সরবরাহের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
এতে দেখানো হয়েছে, রোববার বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য চাহিদা ধরা হয়েছে ২২৫২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের। কিন্তু এর বিপরীতে গ্যাস সরবরাহ করা যাবে ৯৬০ মিলিয়ন ঘনফুট। সার উৎপাদনেও চাহিদার অর্ধেকের কম গ্যাস সরবরাহ করার পূর্বাভাস রয়েছে পেট্রোবাংলার প্রতিবেদনে।সব মিলিয়ে রোববার সারাদেশে ২৮৭৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করার পূর্বাভাস দেখানো হয়েছে। এদিকে আমদানি করা এলএনজি সরবরাহ অর্ধেকে নেমে এসেছে। পেট্রোবাংলার হিসাবে, আমদানি থেকে ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুট সরবরাহ আসার কথা থাকলেও তা আসছে অর্ধেকের কম।এদিন আমদানি থেকে ৪৯৭ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ আসবে বলে ধরা হয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের পর থেকে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি নিয়ে অস্থিরতার মধ্যে বেশকিছু দেশ সমস্যা মোকাবেলা করছে।

You might also like