চা-শ্রমিকদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে প্রজ্ঞাপন বাতিল করুন :সংগ্রাম কমিটি

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ চা-শ্রমিকের স্বার্থ বিরোধী গেজেট বাতিলের দাবিতে চা-শ্রমিকদের ১০দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির উদ্যোগে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কালিটি চা-বাগানে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩০ আগস্ট বুধবার এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
কালিটি চা-বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক উত্তম কালোয়ারের সভাপতিত্বে ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য কৃষ্ণ দাস অলমিকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চা-শ্রমিকের ১০দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির সমন্বয়ক এসএম শুভ, কুলাউড়া উপজেলা কমিটির আহবায়ক বিশ্বজিত দাশ, শ্রমিক নেতা দয়াল অলমিক, সাধারণ শ্রমিক অনিমা অলমিক, গৌরী অলমিক, বিজয় দাশ, কৃষন গোয়ালা, আরতি দাস প্রমুখ।কুলাউড়া থেকে সংবাদদাতা জানান, সমাবেশে বক্তারা বলেন, চা-বাগানের শ্রমিক ও কর্মচারিদের ন্যূনতম মজুরি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সংবলিত একটি প্রজ্ঞাপন ১০ আগস্ট শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রণালয়ের মজুরি বোর্ড গেজেট আকারে প্রকাশ করে। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে নি¤œতম মজুরি বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী ন্যুনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারে দ্রব্যমূল্যের যখন চরম উর্ধগতি তখন সরকার চা-শ্রমিকদের পূর্বের মজুরি দৈনিক ১৭০ টাকা বহাল রাখার ঘোষণা দিয়েছে।

দেশের সকল চা-বাগানের শ্রমিকরা দু’বেলা দু’মুঠো খাবারের নিশ্চয়তার দাবিতে যখন দীর্ঘদিন ন্যুনতম মজুরি দৈনিক ৫শ’ টাকার দাবি জানিয়ে আসছে, তখন সরকারের মজুরি পূর্বের ন্যায় ১৭০ টাকা ঘোষণা চা-শ্রমিকদের সাথে তামাশা। কোন আলোচনা ব্যতীত একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রতিফলন।
৫ শতাংশ হারে প্রতিবছর চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্তকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে নেতৃবৃন্দ সমাবেশে বলেন, পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে প্রতি বছর ৫ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির সরকারি ঘোষণা চরম অমানবিক, শ্রমিকের স্বার্থ বিরোধী এবং পক্ষপাতদুষ্ট। গেজেটে চা-শ্রমিকদের গ্র্যাচুইটি বাদ দেয়া হয়েছে যা শ্রম আইনের পরিপন্থী।
সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, চা-শ্রমিকদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে সরকার বারংবার বাগান মালিকদের স্বার্থরক্ষা করে চলেছে। ইতোপূর্বে চা-শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ৩১,৫০০ টাকার পরিবর্তে মাত্র ১১,০০০ টাকা পরিশোধের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও চা-শ্রমিকদের স্বার্থ উপেক্ষা করে সরকার মালিকদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল।অবিলম্বে গেজেট প্রত্যাহারের আহবান জানিয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এসএম শুভ বলেন, সরকারকে মালিকের স্বার্থ রক্ষার জন্য এদেশের জনগণ ট্যাক্স দেয় না। অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি শ্রমিকদের বঞ্চিত রেখে উন্নয়ন হতে পারে না। আন্দোলনের মাধ্যমেই শ্রমিকদের অধিকার বাস্তবায়নে সরকারকে বাধ্য করা হবে।চা-শ্রমিকদের ন্যূনতম দৈনিক মজুরি ৫শ’ টাকা নির্ধারণ করে নতুন গেজেট প্রকাশের দাবি জানিয়ে সমাবেশের সভাপতি উত্তম কালোয়ার বলেন, গেজেট বাতিলের দাবিতে দেশের সকল চা-শ্রমিককে রাজপথে নামতে হবে। আর তাতে যদি সরকারের টনক না নড়ে তাহলে দেশের চা-শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমেই দাবি আদায় করা হবে।সমাবেশ শেষে গেজেট বাতিলের দাবিতে চা-শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল করেন।

You might also like