ছাতকের ভটেরখাল সেতু হলে দুর্ভোগ মুক্ত হবে লক্ষাধিক মানুষ

সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার দশঘর বিনোদপুরে সুরমা নদীর শাখা ভটেরখালের উপরে নির্মিতব্য সেতুর কাজ সম্পন্ন হলে প্রায় ৫০টি গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ লাগবে হবে। জীবনমান উন্নত হবে এই অঞ্চলের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের। এটি হবে ওই অঞ্চলের জন্য আরেক পদ্মা সেতু।
ছাতক থেকে সংবাদদাতা জানান, ২০২২ সালের জুলাই থেকে শুরু হয় সেতুটির নির্মাণকাজ। সেতুর নির্মাণকাজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। ছাতক উপজেলার বৃহত্তম এই সেতু যার দৈর্ঘ্য ১০০ মিটার। ব্রিজটির স্পেনে ২টি পিয়ার এবং ২টি এপার্টমেন্ট রয়েছে। সেতুটির ৬ জোড়ার ১২টি পাকা পিলারেরে উপরে ক্যাপের ঢালাই কাজ শেষ হয়। সব মিলিয়ে প্রায় ৬৫ভাগ কাজ হয়েছে। বাকিটি চলমান রয়েছে। ছৈলা অংশে গার্ডার স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। এখন সেতুর দশঘর অংশের গার্ডার স্থাপনের কাজ চলছে। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে ছাতকের সুরমা নদীর উপর সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সুনামগঞ্জ-৫ আসনের এমপি মুহিবুর রহমান মানিক।
এদিকে, বহুল প্রত্যাশিত ছৈলা, বাগইন, খলাগাঁও, কহল্লা, বড়ছাল, বানাশিপুর, বিনোদপুর, শাশন, গৌড়নগর, আলমপুর, জাহিদপুর, মোহাম্মদপুর, ভাওয়াল ও বিশ্বম্ভরপুর এলাকায় সেতু নির্মাণকাজ দ্রুত গতিতে চলছে। এই সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে দশঘর টু ছৈলা বিনোদপুর সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। ফলে জগন্নাথপুর উপজেলার যাতায়াতে দুর্ভোগ কমবে এবং ছৈলা আফজালাবাদ, দোলারবাজার ও ভাতগাঁও ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের লোকজনসহ এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে বলে জানান স্থানীয় এলাকাবাসী।
সম্প্রতি নির্মাণাধীন সেতুর কাজের সর্বশেষ অবস্থা পরিদর্শন করেছেন এলজিইডি’র সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তপক্ষ। সেতুর নির্মাণকাজ চলতি বছরের শেষদিকে নতুবা আগামী বছরে প্রথমদিকে সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে তারা।
মুহিবুর রহমান মানিক এমপি জানান, আ’লীগ সরকার সব সময়ই উন্নয়নে বিশ্বাসী। তিনি বলেন, ব্রিজের কাজ দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। ব্রিজের সম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে ২ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের জীবনে উন্নয়ন বিপ্লব ঘটবে। শিক্ষা, ব্যবসা, চিকিৎসাসহ নানামুখী উন্নয়ন প্রসারিত হবে।
১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ছাতক উপজেলা। এই উপজেলার ছৈলা আফজালাবাদ ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সুরমা নদীর শাখা ভটেরখাল। এই নদীপথে ছোট নৌকাই ছিল এই অঞ্চলের লোকজনের একমাত্র ভরসা। ছৈলা আফজালাবাদ, দোলারবাজার ও ভাতগাঁও ইউনিয়নের মানুষজনের জন্য সহজতর হবে এই সেতুবন্ধন। হেমন্ত ও বর্ষায় মানুষ খেয়া নৌকায় পারাপারের কারণে এই অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে অসুস্থ রোগী ও গর্ভবতী মায়েদের।
ছৈলা আফজালাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গয়াছ আহমদ জানান, এই অঞ্চল থেকে গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্ট তাদের পাশে। এজন্য তারা নৌকাযোগে সুরমা নদী পার হয়ে ওপাড়ে গিয়ে ছোট গাড়ি দিয়ে গোবিন্দগঞ্জ কিংবা ছাতকে নিয়মিত যাতায়াত করেন। তাদের জন্য কষ্টকর যাতায়াত ব্যবস্থা। তিনি বলেন, এই ব্রিজটি হলে আমাদের জন্য হবে আরেক পদ্মা সেতু।
ছৈলা আফজালাদ ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী পরিমল দেবনাথ বলেন, ব্রিজটিতে কিছুটা ত্রুটি ছিল। মুহিবুর রহমান মানিক এমপি নিজে মন্ত্রণালয়ে গিয়ে শ্রম দিয়ে ত্রুটির সমাধান করেছেন। এই ব্রিজ চালু হলে ৩টি ইউনিয়ন ও ২টি উপজেলার হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হবে।
ছাতক উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আফছর আহমদ বলেন, জিওবি ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় ১৩ কোটি টাকার ব্রিজের ছাতক অংশে ৪শ’ মিটার এ্যাপ্রোচের কাজ হবে। তিনি বলেন, সুরমার বুকে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য আরেকটি সেতু নির্মাণ করা হবে। যার অবদান কাজপ্রিয় মানুষ মুহিবুর রহমান মানিক এমপি মহোদয়ের। এর নির্মাণকাজের দায়িত্বে রয়েছে কামারজানি ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

You might also like