ছাতকে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জাল স্বাক্ষরে ভূয়া অভিযোগ দায়ের-তোলপাড়

শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী

সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জের ছাতকে ছৈলা-আফজালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গয়াছ আহমদের বিরুদ্ধে ৭ টি প্রকল্প থেকে প্রায় ১৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা আত্মসাত ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে উপজেলা জুড়ে তোলাপাড় চলছে।এ ঘটনায় গত ২৮ জুলাই সিলেট বিভাগীয় কমিশনার বরাবর ইউপি চেয়ারম্যান গয়াছ আহমদের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।ইউনিয়ন বাসীর পক্ষে ৫৫ জন ব্যক্তি স্বাক্ষরিত অভিযাগটি দায়ের করেন নিজাম উদ্দিন।

কিন্ত অভিযোগকারীরা বলছেন,তারা ইউপি চেয়ারম্যান গয়াছ আহমদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দায়ের করেন নি।এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার ইউনিয়নের ৫৪ জন ব্যাক্তির পক্ষে বানারসীপুর গ্রামের মৃত. হাছন আলীর ছেলে মো. শাইদ আলী ছাতক থানায় একটি জিডি নং ৯৪এন্ট্রি করা হয়।স্থানীয় ও ইউনিয়ন পরিষদ সুত্রে জানা যায়, ইউনিয়নের বাগইন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামন থেকে বারই জাঙ্গাল পর্যন্ত ২০১৭ সালে কর্মসৃজন প্রকল্পের আওতায় ২ লাখ ৯৬ হাজার মাটি ভরাট কাজ করা হয়। একই রাস্তায় নাজির মিয়ার দোকান পর্যন্ত পাকাকরন কাজের জন্য ২০১৮ সালে এলজিএসপি থেকে ২ লাখ ও পরবর্তীতে ২০১৯ সালে আরো ২ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়।সরজমিনে কয়েকটি প্রকল্প ঘুরে দেখা যায়, বাগইন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামন থেকে বারই জাঙ্গাল পর্যন্ত মাটি বরাট করা রাস্তা ও নাজির মিয়ার দোকান পর্যন্ত পাকা রাস্তা রয়েছে। বাগইন গ্রামের মো. সুয়েবুর রহমান, ফয়জুল হক, আব্দুল জলিল বলেন, তৎসময়ে মাটি ভরাট ও পাকাপকরন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ইউপি সদস্য শ্রী মিলন লাল ধর বলেন, তিনি এ রাস্তার মাটিভরাটসহ পাকাকরন কাজটি করেছেন। যথাযত ভাবে কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

ছৈলা কুনাবাড়ী থেকে মঈনপুর গামী রাস্তা মৃত. এখলাছ মিয়ার বাড়ী পর্যন্ত ২০১৮ সালে কর্মসৃজন প্রকল্পের আওতায় মাটি ভরাট কাজ করা হয়। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মাটি ভরাট করা রাস্তা রয়েছে। ছৈলা গ্রামের আব্দুল মন্নান ও সাবেক ইউপি সদস্য মঞ্জুর আলম বলেন, মাটি ভরাট করা রাস্তা চোখের সামনে দৃশ্যমান। ইউপি সদস্য মো. আবুল হোসেন বলেন, মাটি ভরাটের কাজটি আমি করেছি। দৃশ্যমান কাজটি অদৃশ্য করার জন্য অপপ্রচার করা হচ্ছে।দেউগাঁও হইতে মঈনপুর গামী রাস্তা ২০১৭ সালে কর্মসৃজনের ২য় পর্যায়ে মাটি ভরাট কাজের জন্য ৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকা বরাদ্ধ হয়।সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে মাটি ভরাট করা রাস্তা রয়েছে। স্থানীয় সুনু মিয়া, আরব আলী ও চান মিয়া বলেন, তৎসময়ে মাটি ভরাট কাজ কাজ করা হয়েছে। তবে পর পর তিনবার বন্যায় রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
ইউনিয়ন ভবন নির্মান করার নামে নতুন বাংলা বাজারের দোকান কোঠা বিক্রি ও বাজার উন্নয়নের ভিভিন্ন খাত থেকে ইউপি চেয়ারম্যান গয়াছ আহমদ ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান জড়িত থাকার কোন আলামত বা সত্যতা পাওয়া যায়নি।ইউনিয়নের নতুন বাংলাবাজার সরজমিনে ঘুরে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. মনু মিয়া, সাধারন সম্পাদক আব্দুল হামিদ ও ইউনিয়ন স্বেচ্চাসেকলীগের সভাপতি মো. কাওছার খাঁন বলেন, এ অভিযোগ ভিত্তিহীন। যেখানে অভিযোগ বিষয়ে অভিযোগকারীদের জানা নেই। এমনকি তারা বলছেন স্বাক্ষরও করেননি। এতে প্রমান হয় ইউপি চেয়ারম্যান গয়াছ আহমদের জনপ্রিয়তায় ঈষান্নিত হয়ে একটি বিশেষ মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত করছে।

নতুন বাংলাবাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি পরিচয়ে মো. ছায়েদ মিয়া বলেন, টাকা দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। এছাড়া এত টাকা আমাদের ক্যাশ নেই।সরজমিনে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে অভিযোগকারী বানারশিপুর গ্রামের সাইদ আলী, ইলিয়াছ, জহির আলী, ভূগলী গ্রামের আলকাছ, ছৈলা গ্রামের জফর আলী, সুরেশ সরকার, আছকির মিয়া, শরিষপুর গ্রামের গৌছ মিয়া, নিজু দাস, বুরহান উদ্দিন, দুলাল, ছালেহ নুর, আছাদ মিয়া বলেন, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার বরাবর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তারা কোন অভিযোগ করেননি। তারা বলেন এমন কোন অনিয়ম হয়েছে জানা নেই ।প্রধান অভিযোগকারী ইউনিয়নের ছৈলা গ্রামের আব্দুল মালিকের ছেল নিজাম উদ্দিন বলেন, আমি কোন অভিযোগ করিনি। আমাকে মাফ করেন। তিনি আরো বলেন, একজন সাংবাদিক পরিচয়ে আমার মুঠোফোনে কল করেছিলেন। তাকেও আমি পরিষ্কার বলেছি, আমি কোন অভিযোগ করিনি। তারপরও তিনি আমার দেওয়া তথ্য ও বক্তব্য গোপন করে সংবাদ প্রকাশ করেছেন। ইউপি চেয়ারম্যান গয়াছ আহমদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে জাল স্বাক্ষরে ভূয়া অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যা মানহানিকর ও বিভ্রান্তিমুলক বটে। তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে বলে তিনিদাবি করেন। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান ইউপি চেয়ারম্যান গয়াছ আহমদ।ছাতক থানার পুলিশ পরিদর্শক ও ওসি (ভারপ্রাপ্ত) মঈন উদ্দিন জিডি এন্ট্রির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

You might also like