ছাতকে জাহিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ও দুর্নীতি
শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী
সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জের ছাতকে জাহিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মালিকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।এ ঘটনায় গত ৪ জুন ছাতক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের পক্ষে অভিযোগটি দায়ের করেন আহবাব উদ্দিন, আজিজুর রহমান ও আজব আলী।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মালিকের অনিচ্ছার কারনে বিদ্যালয় পরিচালনা কমটি গঠন বাঁধাগ্রস্থ হয়েছে। একক আধিপত্য বিস্তার করতে কমিটি গঠনে দায়িত্বহীনতা প্রকাশ করেন প্রধান শিক্ষক। এমনকি তিন মেয়াদ ধরে বিদ্যালয়টি চলছে এডহক কমিটি দিয়ে। প্রতিষ্টান পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কার্যক্রমে এডহক কমিটির সদস্যদেরও সম্পৃক্ত করছেননা তিনি। গত জানুয়ারী মাসে পরিচালনা কমিটি গঠনের লক্ষে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও এলাকাবাসী এক সভায় মিলিত হন। চাপের মুখে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেন প্রধান শিক্ষক। ওই সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ৫জন সদস্য মনোনিত করা হয়। কিন্ত কমিটিতে পছন্দের সভাপতি ও শিক্ষানুরাগী মনোনীত করতে বিভিন্ন ফন্দি করেন তিনি। একপর্যায়ে কমিটির সদস্যদের মতামত না নিয়েই পছন্দের সভাপতি ও শিক্ষানুরাগী মনোনীত করেন প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালিক। তাৎক্ষনিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বাজারে একসভা করে এলাকাবাসী অগ্রহনযোগ্য সভাপতি ও শিক্ষানুরাগীকে প্রত্যাখান করেছেন অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এই সভায় প্রধান শিক্ষককে এলাকাবাসী উপস্থিত থাকার আহাবান জানান। কিন্ত তিনি সভায় অংশগ্রহন করেননি।
প্রধান শিক্ষক স্ব-পরিবারে সিলেট শহরে বসবাস করছেন। যে কারনে তিনি বিদ্যালয়ে আসতে পারছেন না। মাঝে-মধ্যে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যান। ফলে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম মারাত্বক ব্যহত হচ্ছে। সদ্য প্রকাশিত এসএসসি পরিক্ষার ফলাফলে এর প্রভাব লক্ষ করা গেছে।এই বিদ্যালয় থেকে ৪৭ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরিক্ষায় অংশগ্রহন করে ২৪ জনই অকৃতকার্য হয়েছে। ফ্যাসিলিটি বিভাগ হতে প্রাপ্ত বিদ্যালয়ের ১১ লাখ টাকার কোন হদিস মিলছেনা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালিক বলেন, আমি স্ব-পরিবারে সিলেটে থাকলেও নিয়মিত ভাবে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকে দায়িত্ব পালন করছি। ফলাফল সংক্রান্ত বিষয়টি শুধুমাত্র অত্র বিদ্যালয়ের নয় উপজেলার ১ কেন্দ্রের প্রতিটি বিদ্যালয়ে আশানুরূপ ফলাফল কেউই অর্জন করতে পারেননি। তিনি আরো বলেন, বিগত সময়ে ৮০ ভাগের উপরে ফলাফল এসেছে। ফ্যাসিলিটিজ বিভাগ কতৃক কাজটি টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান সম্পন্ন করেছে। সেই সময়ে এডহক কমটির সভাপতি হিসাবে আজব আলী ও আহবাব উদ্দিন দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। ফ্যাসিলিটিজ বিভাগ কর্তৃক গৃহীত বিদ্যালয়ের কাজটি কন্ট্রাক্টর এর সাথে আলোচনাসহ তদারকি করেছেন তৎসময়ে এডহক কমিটির সভাপতি আজব আলী।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালিক তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা, উদ্দেশ্য প্রনোদিত ও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবী করেন।বিদ্যালয় পরিচালনা কমটির বর্তমান সভাপতি মো. গয়াছ আহমদ বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকবৃন্দ ও এলাকবাসীর সর্বসম্মতিক্রমে পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত ৩১ মে কতৃপক্ষ কমটি অনুমোদন দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, ২০০৯ এর প্রবিদান অনুযায়ী কমটি গঠন করা হয়েছে।অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে ছাতক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তা পুলিন চন্দ্র রায় বলেন, করোনা পরিস্তিতির জন্য আমরা বিভিন্ন প্রশিক্ষন কার্যক্রম অনলাইনে অব্যাহত রেখেছি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই বিষয়টি তদন্দ সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।