ছাতকে ভুয়া ফেসবুক পেইজ খুলে ব্লাকমেইল করার অপকর্ম অব্যাহত

শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী

সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জের ছাতকে “ ছাতক প্রতিদিন”সহ বিভিন্ন নামে-বেনামে ভূয়া ফেসবুক পেইজ খুলে মিথ্যা, বানোয়াট মনগড়া ভিত্তিহীন তথ্য উপস্থাপন করে সংবাদ আকারে প্রকাশ ও অন্যায়ভাবে উত্যোক্ত করে ব্লাকমেইল করে আসছে একটি চক্র এ অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ চক্রের হাতে শিক্ষক, শিক্ষিকা, রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ, সাধারন মানুষ, সাংবাদিকসহ অনেকেই মানহানি ও ব্লাকমেইলের শিকার হচ্ছেন। কিন্ত তাদের বিরুদ্ধে নানা কারনে ভয়ে অনেকেই মুখ খুলতে চাইছেন না।
জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল সাংবাদিক পরিবারের ভিকটিম এক শিক্ষিকার নাম দিয়ে তাহার অজ্ঞাতসারে ভূয়া ফেইসবুক একাউন্ট চালু করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অশালীন শব্দ বাক্য ব্যবহার এবং আপত্তিকর ছবিসহ মানহানীকর তথ্য প্রকাশ করা হয়। ভিকটিমের অজ্ঞাতসারে তাহার স্থিরচিত্র (ফটো) সংযুক্ত ও জাল কাগজপত্র সৃজন সংগ্রহ ও সরবরাহের মাধ্যমে পর্ণোগ্রাফি উৎপাদন করত ভিকটিমকে অন্যায়ভাবে উত্যোক্ত করে ব্লাকমেইল করার চেষ্টা করেন আব্দুল আলিম। এ ঘটনায় ৫ মে ২০১৪ ইং তারিখে সুনামগঞ্জের আমল গ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ছাতক জোনে ১৪ নং মামলা দায়ের করেন ভূক্তভোগী ঐ শিক্ষিকা। আদালতের নির্দেশে পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮ (১),(২),(৩),(৪) ও (৫ক) ধারায় ছাতক থানায় মামলাটি এফআইআর হয়।

সাংবাদিক পরিবারের ভিকটিম শিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়াসহ ফেইসবুকে অপপ্রচার এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে ব্লাকমেইল এর অভিযোগে আব্দুল আলিম সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জসীট নং ১৫১ তাং ২৭/৮/২০১৪ইং (অভিযোগপত্র) দেন ছাতক থানা পুলিশ। অভিযোগপত্রে ছাতক উপজেলার খুরমা উত্তর ইউনিয়নের গদারমহল গ্রামের মৃত. মছব্বির আলীর পুত্র আব্দুল আলিম সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। ভিকটিম ঐ শিক্ষিকার পরিবার সুত্র জানায়, ঐ চার্জসীট থেকে আরো কয়েকজন আসামীর নাম বাদ দেওয়ায় বাদী পক্ষ নারাজী প্রদান করেন। এর প্রেক্ষিতে পূনরায় তদন্তের আদেশ দেন আদালত। বর্তমানে ছাতক থানার এসআই সামছুল আরেফিন মামলাটি পূনরায় তদন্ত করছেন।

আরো জানা যায়, সম্প্রতি সময়ে অপরণ, ডাকাতি ও কয়েকটি ক্লু-লেছ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনসহ আসামীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় ছাতক থানা পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, দায়েরী মামলায় পুনরায় চলমান তদন্ত কার্যক্রমকে প্রভাবিত করায় জন্য আব্দুল আলিম নানামুখি অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন।

উপজেলার খুরমা উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দল আলিম ২০১৬ সালে অনুষ্টিত ইউপি নির্বাচনে খুরমা উত্তর ইউনিয়নে বিএনপি দলীয় ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে প্রতিদন্ধিতা করেন। ঐ নির্বাচনে মাত্র ৬০ টি ভোট পেয়ে সমালোচিত হন তিনি। নির্বাচনে পরাজয়ের পর লোকলজ্জায় বেশ কিছু দিন আত্মগোপন করে ছিলেন। এ ছাড়াও আব্দুল আব্দুল আলিম এলাকায় পরচর্চাকারী হিসাবে বেশ পরিচিত। গিবতকারী, দরিদ্রদের নিন্দুক ও একের কথা গুপ্তচর হিসাবে অন্যের কাছে তুলে ধরা (চোগলখুরি) তার কাছে পেশা হিসাবে পরিণত হয়েছে। কোন চাকরি বা ব্যবসা-বানিজ্য ছাড়াই শহরে দাপটের সঙ্গে বসবাস করে আসছেন এমন অভিযোগও উঠেছে। ছেলে-মেয়ের লেখা-পড়াসহ পরিবারের বরণপোষন যোগান উৎস নিয়ে সর্বমহলে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝর।

আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধে অন্তহীন অভিযোগ, সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্যে বরাদ্ধকৃত বাসায় সাধারন মানুষ থাকার নিয়ম না থাকলেও ২০১৪ সালের পর স্থানীয় ভাবে ত্রাশ স্মৃষ্টি করে সরকারী বাসা বরাদ্ধ নিয়ে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বহাল তবিয়তে ছিলেন। এ বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর কতৃপক্ষের নজরে আসে। জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ একাধিক নোটিশ করার পর সরকারী ঐ বাসা ছাড়তে বাধ্যহন আব্দুল আলিম।

সম্প্রতি সময়ে দেশের বাইরে অবস্থান করে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে অনেকেই দেশ বিরুধী ষড়যন্ত্র, মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করছেন। আবার অনেকেই দেশ বিরুধী ষড়যন্ত্র, মিথ্যাচার ও অপপ্রচারে ঘটনমুলক জবাব দিচ্ছেন। অভিযোগ উঠেছে, দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ঘটনমুলক জবাব যারা দিচ্ছেন তাদেরকে চিহ্নিত করে “ছাতক প্রতিদিন’ নামে ফেসবুক পেইজসহ বিভিন্ন নামে বেনামে ফেইসবুক আইডিতে তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন আব্দুল আলিম। দেশবিরুধেী চক্রের সাথে আব্দুল আলিমের যোগসাজেস রয়েছে কি না বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার দাবিও তলছেন অনেকেই।এ বিষয়ে ভিকটিম শিক্ষিকার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এখন স্কুলে রয়েছি, পরে কথা বলবো।এ বিষয়ে ছাতক থানার এসআই সামছুল আরেফিন বলেন, তদন্ত চলছে।এবিষয়ে ছাতক থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, পুনরায় তদন্তের বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কার্যক্রমকে প্রভাবিত করতে পরোক্ষ ভাবে জড়িত থাকতে পারেন বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

You might also like