জগন্নাথপুরে কুশিয়ারা নদীর বালু রাতের আঁধারে চুরির হিড়িক

শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী

সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে কুশিয়ারা নদীর বালু রাতের আাঁধারে চুরির হিড়িক পড়েছে।স্থানীয়রা সুত্রে জানা যায়, গত ৩ বছর ধরে কুশিয়ারা নদীতে উন্নত মানের ছোট আস্তর বালু পাওয়া যাচ্ছে। জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও, আশারকান্দি ও রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের আওতাধীন এক এক করে ৮/১০টি বিশাল আকারের বালুচর জেগে উঠেছে। এসব বালুচরকে বালু মহাল ঘোষণা দিয়ে বৈধভাবে ইজারা দেয়া হলে সরকার বড় অংকের রাজস্ব পেত। আিভযোগ উঠেছে ইজারা না দেয়ায় ও তদারকির অভাবে অরক্ষিত অবস্থায় থাকায় কোটি কোটি টাকার এসব বালু সম্পদ বালু খেকো চোরেরা রাতের আাঁধারে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এতে সরকার বড় অংকের রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এদিকে গত প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে নির্মাণাধীন রাণীগঞ্জ সেতুর এপ্রোচ সড়ক ও টোল প্লাজা ভবন নির্মাণের জন্য বালু দেয়া চলছে। মাত্র সাড়ে ৭ টাকা ফুট দরে লাখ লাখ ফুট বালু দিচ্ছেন যুবলীগ নেতা সালেহ আহমদের নেতৃত্বে একটি বালু খেকো সিন্ডিকেট। অথচ এসব ছোট আস্তর বালু বাজারে কমপক্ষে ৩০ টাকা ফুট দরে বিক্রি হচ্ছে বলে বালু ব্যবসায়ীরা জানান। এসব বালু দেয়ার জন্য রাণীগঞ্জ বাজার থেকে দক্ষিণে কুশিয়ারা নদীতে বসানো রয়েছে একটি আনলোড মেশিন। এ মেশিনে নৌকায় বালু এনে দেয়া হয়। এ মেশিন থেকে প্রায় কয়েক হাজার ফুট পাইপ লাইন টানা হয়েছে। পাইপের শেষ মাথা এসে পড়েছে কুশিয়ারা নদীর উপর নির্মাণাধীন রাণীগঞ্জ সেতুর অপারের এপ্রোচ সড়কের পাশে থাকা খাদে। এ পাইপ লাইন দিয়ে আসা বালু খাদের কিছু অংশ ভরাট হয়েছে। এ নিয়ে গত কয়েক দিন আগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বালু খেকো সিন্ডিকেটের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়। তারা সংবাদটি ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। যদিও বালু খেকো সিন্ডিকেটের দাবি, তারা মৌলভীবাজারের মনু নদী ১৫ বালু মহালের ইজারাদার হায়দর আলীর কাছ থেকে বালু কিনে এনে ভর্তুকি দিয়ে বিক্রি করছেন। তারা কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন না। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ তারা রাতের আাঁধারে কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে মৌলভীবাজারের বালু বলে বিক্রি করছেন।

মৌলভীবাজারের কাজিরবাজার এলাকায় অবস্থিত মনু নদী ১৫ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নদীতে কোন বালু নেই। নেই কোন ড্রেজার মেশিন। এ সময় মনু নদী ১৫ অংশের সাবেক ইজারাদার মনাই মিয়া বলেন, এ নদীতে এখনো কোন বালু আসেনি। বর্ষায় প্রচন্ড পাহাড়ি ঢল হলে নদীতে বালু আসে। এবার নদীতে এখনো ঢল আসেনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানের কাগজ দেখিয়ে অন্যস্থানের বালু বিক্রি করা হচ্ছে। যা তদন্ত করলেই আসল সত্য বেরিয়ে আসবে। তখন স্থানীয় জনতারাও এভাবে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। তবে চেষ্টা করেও বর্তমান ইজারাদার হায়দর আলীকে খোঁজে পাওয়া যায়নি। মনু নদীর ইজারার কাগজ দেখিয়ে কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে ওই প্রভাবশালী বালু খেকো সিন্ডিকেট। প্রশাসন ও জনগণের চোখে ধুলো দিয়ে দেদারছে চালিয়ে যাচ্ছে বালু চুরির মহোৎসব। তা দেখার যেন কেউ নেই।সরকারি এসব বালু সম্পদ রক্ষায় সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।

You might also like