জলবায়ু বিষয়ক মানবাধিকার আদালতের রায়ের পক্ষে এডভোকেসি ফর গ্রীন এনার্জির আলোচনা

কমিউনিটি করেসপন্ডেন্ট
সত্যবাণী

লন্ডন: ইউরোপীয় কনভেনশন অনুযায়ী প্রতিটি সরকার তাদের নাগরিকদের ব্যক্তিগত জীবন সুরক্ষিত করার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বাধ্য, ইউরোপীয়ান মানবাধিকার আদালতের সাম্প্রতিক এমন একটি রায়কে স্বাগত জানিয়ে জলবায়ু বিষয়ক সংগঠন ‘এডভোকেসী ফর গ্রীন এনার্জি’র উদ্যোগে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে একটি আলোচনা অনুষ্ঠান।

প্রবীন মানবাধিকারকর্মী হাবিব রহমানের সভাপতিত্বে ও অ্যাডভোকেসি ফর গ্রীন এনার্জির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মানবাধিকারকর্মী সৈয়দ ইকবালের সঞ্চালনায় গত ২৪শে মে, রেডব্রিজ সেন্ট্রাল লাইব্রেরীতে আয়োজিত এই আলোচনা অনুষ্ঠানে মূল আলোচকের বক্তব্য রাখেন সুপরিচিত মানবাধিকার কর্মী  ব্যারিষ্টার আল মোস্তাকিম।

বক্তারা বিশ্ব পরিবেশ রক্ষায় ইউরোপীয়ান মানবাধিকার আদালতের এই রায়কে মাইলফলক হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, জলবায়ু দুষন প্রতিরোধে গড় উঠা আন্দোলন এই রায়ে দেশে দেশে আরও বেগবান হবে।

মূল আলোচক আল মুস্তাকিম তার বক্তৃতায় জানান, সুইজারল্যান্ডের প্রবীন ব্যক্তিরা কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের কারণে তাপপ্রবাহ তাদের জীবন উপভোগ করা কঠিন করে তুলেছে উল্লেখ করে তাদের সরকার কার্বন নির্গমনের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছ বলে অভিযোগ করেছিলেন ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতে। এই অভিযোগ বিচার বিশ্লেষন করে সর্বোচ্চ আদালত তাদের প্রায় ২শ পৃষ্ঠার রায়ে বলেছেন, ইউরোপীয় কনভেনশনের অধীনে প্রতিটি সরকার তাদের নাগরিকদের ব্যক্তিগত জীবনকে সুরক্ষিত ও সম্মানিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে বাধ্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত অনেক ক্ষেত্রে এই কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী অনেক রাষ্ট্র কার্বন নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রা কার্যকর করতে সক্ষমতা দেখাতে পারেননি। ফলে তাদের নাগরিকরা অরক্ষিত।

অক্সফোর্ড স্নাতক ব্যারিষ্টার মুস্তাকিম তার বক্তব্যে বলেন, যদি কোন রাষ্ট্র গ্লোবাল ওয়ার্মিং হুমকির বিরুদ্ধে নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে ক্ষতিগস্থরা এই রায়টি ব্যবহার করে নিজ নিজ সরকার বা কর্তৃপক্ষকে জলবায়ু বিষয়ক  ইউরোপীয় কনভেনশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে চাপ প্রয়োগ করতে পারেন।

তিনি পূর্বে ইউকে সুপ্রিম কোর্টে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে এ জাতীয় মামলায় বাধা দেওয়ার জন্য মানবাধিকার সম্পর্কিত ইউরোপীয় কনভেনশনের অনুচ্ছেদ 8 প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছিলেন জানিয়ে ব্যারিষ্টার মোস্তাকিম বলেন,  এই রায়ের অধীনে এই জাতীয় মামলাগুলো সফলভাবে বিচার করা যেতে পারে, কারণ ইউকে কনভেনশনের স্বাক্ষরকারী একটি দেশ।

উল্লেখ্য, তুরস্ক সহ ৪৬টি  ইউরোপীয় দেশ এই কনভেনশনের স্বাক্ষরকারী এবং এই আদালতের এখতিয়ারের অধীনে রয়েছে।

‘এডভোকেসী ফর গ্রীন এনার্জি’ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তরুণ-তরুণীসহ বহু মানুষ উপস্থিত থেকে এবিষয়ে তাদের মতামত বিনিময় করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ব্যারিস্টার মাইকেল ডিকিন, সলিসিটর মীর শরীফ, সলিসিটর সোহুল আহমেদ, ব্যারিস্টার জুয়েল মন্ডল, ডঃ হাসনীন, মিসেস মিলন, মিসেস তামান্না, মিঃ হামাদ, মিঃ তাইসির, মিঃ মুজিব ও মিসেস ওনুবা প্রমূখ আলোচনায় অংশ নেন।

You might also like