জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশ শ্রেষ্ঠ উদাহরণ : বান কি মুন
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে একটি জনগোষ্ঠী কতটা উদ্ভাবনী হতে পারে, বাংলাদেশ তার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তিনি বলেন,‘ জিসিএ (গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপ্টেশন ) বাংলাদেশের মাধ্যমে তাদের মূল্যবান শিক্ষা গ্রহণ করে বাকি বিশ্ব নতুন জলবায়ুর বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সক্ষম হবে।মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপ্টেশন (জিসিএ)-এর বাংলাদেশ কার্যালয় উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপ্টেশনের চেয়ারম্যান ও জাতিসংঘের অষ্টম মহাসচিব বান কি মুন সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপ্টেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্যাট্রিক ভার্কুইজেন।
বান কি মুন বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের জন্য বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। ঢাকায় অবস্থিত আঞ্চলিক কার্যালয়টি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় কার্যকর অভিযোজন সমস্যা সমাধানে একসঙ্গে কাজ করবে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যেভাবে একের পর এক দুর্যোগ মোকাবিলা করে চলেছে, তা প্রশংসার দাবিদার। সবশেষ ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় বাংলাদেশের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া করোনার এই সময়েও বাংলাদেশের সরকার খুব সাবধানেই সমস্যার সমাধান করে চলেছে।’পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জিসিএ বাংলাদেশ অফিস মূলত দক্ষিণ এশিয়ায় অভিযোজনের ক্ষেত্রগুলো শক্তিশালীকরণ এবং সমগ্র অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিগুলো দূর করতে মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম জোরদারকরণে সহায়তা করবে।’
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের সরকার যথাযথভাবে কাজ করে চলেছে। আগামীতেও আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবো।’ এই কার্যালয়ের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় কার্যকর অভিযোজন সমস্যা সমাধানে দক্ষিণ এশিয়ার সরকার, সিটি মেয়র, ব্যবসায়ী নেতারা, বিনিয়োগকারী, স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং সুশীল সমাজের সঙ্গে কাজ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।জিসিএ কার্যালয়টি মূলত পরিবেশ অধিদফতরের ভবনেই উদ্বোধন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপ্টেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্যাট্রিক ভার্কুইজেন বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে জলবায়ু সহিষ্ণুতা জোরদারকরণে অনেক উদ্ভাবনী সমাধান রয়েছে। এই অঞ্চলের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য তাদের যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি প্রয়োজন। সমাধান হিসেবে জিসিএ-এর ভূমিকার মাধ্যমে জিসিএ বাংলাদেশ এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশে সবচেয়ে কার্যকর অভিযোজন ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।
পরিবেশ মন্ত্রণালয় জানায়, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের মাধ্যমে আজ থেকে জিসিএ’র দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক কার্যালয়, ঢাকা কাজ শুরু করেছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আহমদ শামীম আল রাজীকে অফিসের রুটিন দায়িত্ব পালনের জন্য আঞ্চলিক পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।আফগানিস্তান, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার বিষয়ে কাজ করতে প্রাথমিকভাবে প্রস্তাব করা হয়েছে।চীনের বেইজিংয়ে আরেকটি আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে। এটি এশিয়ার দ্বিতীয় আঞ্চলিক কার্যালয়।