জুলাইয়ে সম্মেলন করতে চায় সিলেট মহানগর বিএনপি
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট অফিস থেকেঃ জুলাইয়ে সম্মেলন করতে চায় সিলেট মহানগর বিএনপি। সেই আঙ্গিকে দল গোছানোর কাজ চলছে। নেতারা বলছেন, জুনের মধ্যে নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের সম্মেলন শেষ করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে যেসব ওয়ার্ডে আহ্বায়ক কমিটি দেয়া হয়েছে সেসব ওয়ার্ড নেতাদের ২৫ দিনের মধ্যে সম্মেলন আয়োজন করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।রমজানের আগে শেষ হওয়া সিলেট জেলা বিএনপি’র সম্মেলন ছিল চমকে ভরা। প্রায় ১৮১৮ জন কাউন্সিলরের ভোটে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়। জেলার সম্মেলন শেষ হওয়ার পর মহানগরের সম্মেলন নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদের প্রার্থীরা সরব। কেউ কেউ ওয়ার্ডপর্যায়েও ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছেন। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির নেতারা জানিয়েছেন, জেলার মতো মহানগর বিএনপি’র কমিটি গঠন করা হবে কাউন্সিলের মাধ্যমে। কেন্দ্র থেকে ইতোমধ্যেই এ রকম নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এ কারণে মহানগরের নেতারা ওয়ার্ড সম্মেলনের উপর বেশি জোর দিচ্ছেন। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে গত বছরের ২৯শে শে সেপ্টেম্বর সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির আহ্বায়ক করা হয় সাবেক কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম জালালী পংকিকে। আর সদস্য সচিব হন সাবেক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী। মহানগরের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর কার্যক্রমে গতি এসেছে। ইতোমধ্যে মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির নেতারা প্রায় ১০টির মতো সভা করেছেন। এর বাইরে তারা নগরীর ২৯টি ওয়ার্ডের বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনে মহানগরের নেতারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ইতিমধ্যে ১৭টি ওয়ার্ডের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত এলাকাগুলোতে প্রথমে পাড়া বা মহল্লা কমিটি গঠন করা হবে। এরপর ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। বাকি ১০টি ওয়ার্ডে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাকি থাকা ওয়ার্ডের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নেতারা।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী জানিয়েছেন, ‘আমাদের টার্গেট হচ্ছে আগামী জুনের মধ্যে ২৭টি ওয়ার্ডের সম্মেলন ও কাউন্সিল সমাপ্ত করা। ওয়ার্ড সম্মেলন শেষ হলে বাকি থাকবে মহানগর সম্মেলন। সেটি আমরা জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করতে চাই। সে লক্ষ্যে আমাদের কাজ চলছে।তিনি জানান ‘ওয়ার্ড সম্মেলন আমরা আপাতত কাউন্সিলের মাধ্যমে শেষ করার বিষয়টি মাথায় রেখেছি। যদি কোথাও পরিবেশ সহজ হয় তাহলে হয়তো সম্মেলনের মাধ্যমেই কমিটি গঠন করা হতে পারে। তবে মহানগর বিএনপির নতুন নেতৃত্ব কাউন্সিলের মাধ্যমেই নির্বাচিত হবে। সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।এদিকে মহানগর বিএনপি’র কমিটি গঠনে এবার থাকতে পারে চমকও। প্রার্থী হতে যাচ্ছেন নতুন অনেক মুখ। এরমধ্যে বেশিরভাগ নেতাই ছাত্রদল-যুবদলের হয়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন। তাদের প্রস্তুতির কারণে মহানগর বিএনপির ওয়ার্ডপর্যায়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। সভাপতি পদে একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে কেউ এখনো এগিয়ে এসে প্রার্র্থিতা ঘোষণা করেননি।নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, ওয়ার্ড সম্মেলন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রার্থীরা গতি বাড়াবেন। মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন সাবেক সভাপতি নাসিম হোসাইন, সাবেক আহ্বায়ক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, বর্তমান আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ূম জালালী পংকি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম। সভাপতি পদে প্রার্থী হতে পারেন বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী। তবে এখনো এ ব্যাপারে তিনি ঘোষণা দেননি।
সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন একাধিক নতুন মুখ। দলের নেতারা জানিয়েছেন, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদটি গুরুত্বপূর্ণ। এ পদের জন্য একজন যোগ্য নেতাকেই খুঁজবেন তারা। এবার নতুনদের মধ্য থেকে কেউ এ পদে আসতে পারেন।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক কমিটির সহ-সভাপতি ও সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর রেজাউল হাসান লোদী কয়েস, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজমল বক্ত সাদেক ও এমদাদ হোসেন, সাবেক সহ-সভাপতি ও সিটি কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম, সাবেক সহ-সভাপতি জিয়াউল গনি আরেফিন জিল্লুর, হুমায়ূন কবির শাহীন। দলের নেতারা জানিয়েছেন, সভাপতি পদে প্রবীণদের লড়াই হবে। আর সাধারণ সম্পাদক পদে হবে নতুনদের লড়াই।