টানা পাঁচ দিন ধরে পানিতে ভাসছে সিলেট
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
সিলেট: সিলেট জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। নদনদীর পানি এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি রয়েছে জেলার অন্তত ১২ লাখ মানুষ।টানা পাঁচ দিন ধরে পানিতে ভাসছে সিলেট। বাড়ছে বানভাসী মানুষের দুর্ভোগ। এরইমধ্যে ২৭৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সাবস্টেশন পানিতে ডুবে থাকায় চালু করা যাচ্ছে না বিদ্যুৎ সরবরাহও।সুনামগঞ্জের অবস্থাও একইরকম। বসতবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সবখানে পানি ঢুকে ভোগান্তির শেষ নেই বানভাসীদের।বানের পানিতে ভাসছে সিলেট। এখনও কমেনি পানি। টানা পাঁচ দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই, নেই গ্যাস। রাতে অন্ধকারে ডুবে থাকে গোটা শহর। দুর্ভোগের সীমা নেই বানভাসীদের।বিদ্যুতের সাব স্টেশন পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সরবরাহ স্বাভাবিক করা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র।
জেলার ১৩ উপজেলার ৫শ’ শিক্ষা প্রতিষ্টান বন্ধ হয়ে গেছে। ২৭৪টিতে খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র।সপ্তাহজুড়েই সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হচ্ছে। নদীর পানি উপচে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। দোয়ারাবাজার ও ছাতকের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট দিয়ে পানি ঢুকে ডুবছে সড়ক, বসত বাড়ি, ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এদিকে টানা তিন ধরে দোয়ারাবাজার ও জগন্নাথপুর বিদুৎবিচ্ছিন্ন।সুনামগঞ্জের ঘোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি এখনও বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, উজানের ঢল কিছুটা কমেছে। বৃহস্পতিবার সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। তবে এখনও বিপদসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।সিলেট পয়েন্টে এখনও পানি কমেনি। বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার উপরে রয়েছে। কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে ১৭৫ সেন্টিমিটার ও শেওলা পয়েন্টে ৫৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, কানাইঘাট উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে নিখোঁজ হওয়া দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা হলেন উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের নক্তিপাড়া গ্রামের ফয়জুর রহমানের পুত্র ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমানের (৫০) ও দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের উত্তর বাণীগ্রামের (ছত্রপুর) ছইফ উল্লাহর পুত্র আব্দুল্লাহ (৩৫)। হাবিব গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কানাইঘাট উপজেলার মমতাজগঞ্জ বাজারের পাশে সুরমা নদীতে নৌকা ডুবে নিখোঁজ হন।জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বন্যা কবলিত এলাকাসমূহে দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করছে।বন্যার্তদের জন্য সরকারি ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, জেলায় এখন পর্যন্ত ১৪৯ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ও ২০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ঔষধ, খাবার স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করা হচ্ছে।এর পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।