টিকায় অগ্রাধিকার পাবেন কারা, সংসদে তালিকা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

নিউজডেস্ক
সত্যবাণী

জাতীয় সংস দভবন থেকেঃ সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাদের করোনার টিকা দিতে চায় তার তথ্য জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এক কোটি ৬৯ লাখ ৩৭ হাজার ৯৭৩ জনকে করোনার টিকা দেওয়া হবে।বুধবার (২৭ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলামের (টিটু) এ সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য জানান।ভারত থেকে ইতোমধ্যে উপহারের ২০ লাখ ও সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা ৫০ লাখ টিকা দেশে পৌঁছানোর প্রসঙ্গ টেনে ওই সংসদ সদস্যের প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন,সেরামের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী আগামী ছয় মাসের মধ্যে সব টিকা পাওয়া যাবে।এর বাইরে প্রয়োজন অনুযায়ী আরও টিকা কেনার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী যারা পাবেন করোনার টিকা:কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত চার লাখ ৫২ হাজার ২৭ জন স্বাস্থ্যকর্মী, অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের ছয় লাখ বেসরকারি ও প্রাইভেট স্বাস্থ্যকর্মী, দুই লাখ ১০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাঁচ লাখ ৪৬ হাজার ৬২০ জন সদস্য, প্রতিরক্ষা বাহিনীর সামরিক ও বেসামরিক সদস্য তিন লাখ ৬০ হাজার ৯১৩ জন, রাষ্ট্র পরিচালনায় অপরিহার্য ৫০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী, ৫০ হাজার গণমাধ্যমকর্মী, এক লাখ ৭৮ হাজার ২৯৮ জন জনপ্রতিনিধি, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার দেড় লাখ কর্মচারী, পাঁচ লাখ ৪১ হাজার ধর্মীয় প্রতিনিধি, মৃতদেহ সৎকারে নিয়োজিত ৭৫ হাজার ব্যক্তি, জরুরি সেবার (পানি, গ্যাস, পয়ঃনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ, ফায়ার সার্ভিস, পরিবহন খাতের) চার লাখ কর্মী, স্থল, নৌ ও বিমান বন্দরের দেড় লাখ কর্মী, এক লাখ ২০ হাজার প্রবাসী অদক্ষ শ্রমিক, জেলা উপজেলায় কর্মরত জরুরি সেবায় নিয়োজিত চার লাখ সরকারি কর্মচারী, এক লাখ ৯৭ হাজার ৬২১ জন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার (যক্ষ্মা, এইডস, ক্যান্সার) ছয় লাখ ২৫ হাজার জনগোষ্ঠী, ৬৪ থেকে ৭৯ বছর বয়সী এক কোটি তিন লাখ ২৬ হাজার ৬৫৮ জন্য ব্যক্তি, ৮০ বছর ও তদূর্ধ্ব ১৩ লাখ ১২ হাজার ৯৭৩ জন, জাতীয় দলের খেলোয়াড় ২১ হাজার ৮৬৩ জন এবং বাফার, ইমারজেন্সি, আউটব্রেক ক্যাটাগরির এক লাখ ৭০ হাজার জন।

জাতীয় পার্টির মসিউর রহমান রাঙার প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন দেশ, বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবি) ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা থেকে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় এক হাজার ৮১৭ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঋণ সুবিধা এক হাজার ৬৪০ ডলার এবং অনুদান ১৭৭ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন। এসব প্রতিশ্রুতির মধ্যে এক হাজার ৫২০ দশমিক ৬৬ মিলিয়ন ডলার অর্থ ছাড় হয়েছে। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় আগামীতে বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও ফ্রান্সের কাছ থেকে এক হাজার ৯১৮ মিলিয়ন ডলার সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও করোনা টিকার অর্থায়নসহ আরও বৈদেশিক সহায়তা পাওয়ার লক্ষ্যে কাজ চলছে।স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।

আহসানুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যথাসময়ে করোনা ভাইরাসের টিকা প্রাপ্তির বিষয়ে সরকার শুরু থেকেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সরকার ইতোমধ্যে সেরাম ইনস্টিটিউট, ইন্ডিয়া ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের তিন কোটি বা তার অধিক ডোজ ভ্যাকসিন কেনার ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছে । এই ভ্যাকসিন চলতি জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহেই বাংলাদেশে আসবে বলে আশা করা যায়।

তিনি বলেন, ভ্যাকসিন বিষয়ক সম্ভাব্য পরিকল্পনাসমূহ হচ্ছে:

বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO), COVAX facility থেকে বিশ্বের ৯২টি দেশের মতো দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ২০ ভাগ জনগোষ্ঠার তথা তিন কোটি ৪০ লাখ মানুষের জন্য ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাবে;

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর Scientific Advisory Group of Experts (SAGE) এর নির্দেশনা ও দেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রদানের অগ্রাধিকার তালিকা নির্ধারণ করা হয়েছে;ভ্যাকসিন বিতরণের প্রথম পর্যায়ে দেশের জনসংখ্যার মোট এক কোটি ৫০ লাখ (৮.৬৮ %) লোককে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মোট দুই ডোজ করে ভ্যাকসিন দেয়া হবে;

দেশের ৬৪টি জেলা ইপিআই স্টোর এবং ৪৮৩ টি উপজেলা ইপিআই স্টোরে এই ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা হবে;

চুক্তি অনুযায়ী সেরাম ইনস্টিটিউট, ইন্ডিয়া থেকে প্রাপ্ত তিন কোটি বা ততোধিক ডোজ ভ্যাকসিন ছয়টি ধাপে সরাসরি বাংলাদেশের নির্ধারিত জেলার ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কার্যক্রম) এর মাধ্যমে প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।বেনজীর আহমেদের প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান জানান, ঢাকা শহরে যানজট নিরসনে ২৫০ কিলোমিটার সাবওয়ে বা আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রো নির্মাণে ৩২১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে সম্ভাব্য সমীক্ষা চলছে। এ প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬০ শতাংশ। সম্ভব্যতা সমীক্ষার মাধ্যমে এলাইনমেন্ট চূড়ান্ত করে যথাসময়ে এর বাস্তবায়ন শুরু করা সম্ভব হবে।

You might also like