ডিজিটাল প্রযুক্তিতেই ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে : মোস্তাফা জব্বার

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল প্রযুক্তিতেই ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে। প্রযুক্তিকে ভয় পেয়ে, অবহেলা করে বা পরিত্যাগ করে নয়, বরং এর সুযোগ সুবিধাগুলোতেই বাংলা ভাষা, বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে হবে।আজ ঢাকায় এসএমই ফাউন্ডেশন এবং এএফডিবি’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘ঐতিহ্য সংরক্ষণে প্রযুক্তির ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।এসএমই ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, এএফডিবি’র কর্ণধার মানতাশা আহমেদ, ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক এসএম জাহিদ হাসান এবং পাঠাও-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফাহিম আহমেদ বক্তৃতা করেন।

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, পালের নৌকা কিংবা নাঙ্গল জোয়ালে আমরা ফিরে যেতে পারবো না, ডিজিটাল প্রযুক্তি দিয়েই আমরা হারানো ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে পারবো। এসময় তিনি বাংলার ঐতিহ্যকে সমুন্নত রেখে ডিজিটাল পণ্যের আমদানিকারক দেশে থেকে রপ্তানিকারী দেশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্জনকে এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।মন্ত্রী বাংলাদেশের উৎপাদিত ডিজিটাল যন্ত্র বাংলাদেশের গন্ডি ছাড়িয়ে গেছে উল্লেখ করে বলেন, ‘বিশ্বের ৮০টি দেশে আমরা সফটওয়্যার রপ্তানি করছি। নেপাল, নাইজেরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশে বাংলাদেশের উৎপাদিত ডিজিটাল যন্ত্র রপ্তানি হচ্ছে। মেড ইন বাংলাদেশ পোশাক বিশ্বে দ্বিতীয় উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারক হিসেবে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রাখছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন প্রযুক্তিবান্ধব নীতির উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল পণ্যের আমদানিকারক দেশ থেকে উৎপাদক ও রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠায় যে সংকল্প ঘোষণা করেছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বিশ্বে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশের পাশাপাশি ডিজিটাল পণ্য রপ্তানিতে অভাবনীয় সফলতার স্বাক্ষর রাখছে। ২০০৮ সালে ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ প্রযুক্তিতে শতশত বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে উন্নত বিশ্বের সমান্তরালে চলার সক্ষমতা অর্জন করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্বভার গ্রহণকালে বাংলাদেশের টেলিডেনসিটি ছিল ৩০ শতাংশ। বর্তমানে এই হার প্রায় শতভাগে উন্নীত হয়েছে। ২০০৮ সালে যেখানে মোবাইল গ্রাহক ছিল ৪ কোটি ৪৬ লাখ, বর্তমানে তা ১৮ কোটি ২০ লাখ অতিক্রম করেছে। এই সময়ে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল মাত্র ৪০ লাখ, বর্তমানে এ সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি ৯১ লাখ। ব্যান্ডউইডথের ব্যবহার যেখানে ছিল ৭ দশমিক ৫ জিবিপিএস, বর্তমানে তা ২৭শত জিবিপিএস অতিক্রম করেছে।’
তিনি জানান, অনেকেই মনে করেন ডিজিটাল যুগে ডাক ঘরের গুরুত্ব আর নেই। কিন্তু আমরা ডাকঘরকে ডিজিটাল করছি এবং ডাকঘরই ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা করার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে গড়ে ওঠছে।সভাপতির বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, বাংলার ঐতিহ্যের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমাদের বাংলা ভাষা। মোস্তাফা জব্বার সাহেব কম্পিউটারে বাংলা ভাষা প্রয়োগ করে অতি সহজভাবে বাংলা লেখার ঐতিহাসিক যে কাজটি করেছেন, তার ফলেই ডিজিটাল যুগে বাংলা ভাষা মাথা উচু করে রয়েছে।

ফারুক হাসান পোশাক রপ্তানীর ক্ষেত্রে দেশীয় প্রযুক্তি ও ডিজাইনকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেবার আশ্বাস দেন। ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক এস এম জাহিদ হাসান জানান, তাদের ইলেকট্রনিক ও ডিজিটাল পণ্যে বাংলাদেশে প্রস্তুত লেখা থাকার মধ্য দিয়ে দেশ ও ভাষার খ্যাতি বিশ্বজোড়া ছড়ানো হচ্ছে।পাঠাও-এর প্রধান নির্বাহি পরিচালক ফাহিম আহমদ পাঠাও-এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বজুড়ে পরিচিত করার সংকল্প ব্যক্ত করেন।অনুষ্ঠানে বক্তারা ঐতিহ্য সংরক্ষণের পাশাপাশি ডিজিটার রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পরে মন্ত্রী এসএমই ফাউন্ডেশন আয়োজিত তাঁত শিল্পসহ দেশের ঐতিহ্যবাহী কুটির শিল্প পণ্য মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।

You might also like