তিতাসের গাফিলতিতেই মসজিদে বিস্ফোরণ, অভিযোগ মুসল্লিদের

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

নারায়ণগঞ্জ: তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির গাফিলতির কারণেই নারায়ণগঞ্জে মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় মুসল্লিরা।তারা জানান, মসজিদে নামাজ পড়তে এলেই তারা গ্যাসের গন্ধ পেতেন। এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির মাধ্যমে একাধিক বার জানানো হয়েছিল তিতাস কর্তৃপক্ষকে। তবে তারা এ বিষয়টি আমলে নেয়নি। তাদের গাফিলতিতেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে।অনেক মুসল্লির অভিযোগ, গ্যাসের পাইপ মেরামত করতে তিতাস কর্তৃপক্ষ টাকা চেয়েছিল। টাকা না দেয়ায় তারা মেরামত করেনি।পিয়াস মিয়া নামে স্থানীয় এক মুসল্লি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা উনাদের একাধিক বার বলেছি। তারপরেও উনারা এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

মসজিদ কমিটির সদস্য দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘পাইপ মেরামত করতে কমিটির পক্ষ থেকে আমরা তিতাস কর্তৃপক্ষকে বার বার জানিয়েছি। কিন্তু তারা টাকা দাবি করলে এ বিষয়ে আর গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।এ বিষয়ে জানতে তিতাসের নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. মুকবুল আহম্মদকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।তবে আজ সকালে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে মুসল্লিদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিতাসের এমডি আলী মো. আল মামুন সাংবাদিকদের বলেছেন, মসজিদে গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় তিতাসের কোনো গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।তিনি আরও বলেন, মুসল্লিদের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে দোষী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে অর্ধশতাধিক মুসল্লি দগ্ধ হন। দগ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৭ জনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।বিস্ফোরণে মসজিদের ছয়টি এসি পুড়ে গেছে। জানালার কাচ উড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।গ্যাস থেকেই এ বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আরেফিন।

দুর্ঘটনার পর রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি জানান, মসজিদের সামনের গ্যাসের লাইনে লিকেজ ছিল। ধারণা করা হচ্ছে এসি চালানোর সময় জানালা বন্ধ থাকায় ওই গ্যাস ভেতরে জমা হয়ে যায়। হঠাৎ কেউ বৈদ্যুতিক সুইচ অফ-অন করতে গেলে স্পার্ক থেকে এই বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে।তিনি আরও বলেন, মসজিদের মেঝের নিচ দিয়ে গ্যাসের লাইন গেছে। পানি দেয়ার সময় বুদ বুদ করে গ্যাস বের হচ্ছিল।ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, আমরা ধারণা করে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে তারা দ্রুত এখানে এসে আমাদের ধারণাকে নিশ্চিত করে। তারা জানান- গ্যাসের লাইন থেকেই এই বিস্ফোরণ হয়েছে।

You might also like