দেশের সর্ববৃৎ হাকালুকি হাওরে আশংকাজনক হারে কমছে মাছ

সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ জলাভূমি মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওর। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম মিঠাপানির জলাধার এই হাওর। ২৪০টি বিল নিয়ে গঠিত এ হাওর থেকে প্রতিবছর পাওয়া যায় বিচিত্র প্রজাতির সব মাছ। এখানে প্রতিবছর প্রায় ১৫ হাজার টন মাছ উৎপাদন হয়। যদিও চলতি বছর হাওরে তুলনামূলক কম মাছ ধরা পড়ছে। হাওরের বিল ভরাট, স্থায়ী অভয়াশ্রম না থাকা ও বিল পানিশূণ্য হয়ে পড়ায় ক্রমেই শূণ্য হচ্ছে হাকালুকির মৎস্যভাণ্ডার।
হাকালুকির মাছ ব্যবসায়ী ও জেলেদের বরাত দিয়ে মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা জানান, অন্যান্য বছর বড় বড় রুই, বোয়াল, আইড়, মৃগেল ও কার্প জাতীয় মাছ বেশি পাওয়া গেলেও এবার মিলছে কম। যেসব মাছ ধরা পড়ছে তার দামও অনেক বেশি। বড় মাছের মতো দেশী জাতের ছোট মাছ চাপিলা, টেংরা, মলা, চিংড়িও ধরা পড়ছে কম।
হাকালুকি হাওরের চকিয়া বিল, নাগুয়া বিলসহ নানা বিল ঘুরে দেখা যায়, বিলের পাড়ে অস্থায়ী নিলামকেন্দ্র স্থাপন করেছেন ইজারাদাররা। সেখানে ভোর থেকে ব্যাবসায়ীরা মাছ কেনার জন্য ভিড় করছেন। ইজারাদারদের অধীনে জেলেরা বিলে জাল ফেলে মাছ ধরছেন। সেই মাছ নৌকায় করে ঘাটের নিলাম কেন্দ্রে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে অন্য বছরের চেয়ে মাছ ধরা পড়ছে কম। তাছাড়া মাছের আকারও তুলনায় ছোট।
মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, হাকালুকি হাওরে রুই, বোয়াল, আইড়, কমন কার্প, মৃগেল মাছের আধিক্য বেশি। সঙ্গে অন্য জাতের দেশীয় মাছও ধরা পড়ছে। পাবদা, চিতল, ফলি, কালবাউস, গুলশাসহ অনেক বিপন্ন ও বিলুপ্তপ্রায় মাছ এ হাওরে এখনো টিকে আছে। বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা মাছের অঞ্চলভেদে বিভিন্ন নাম রয়েছে। এরমধ্যে বাতাসি, কাজলি, বাইলা, পোয়া, কাকিলা, খলিসা, ছোট চিংড়ি, চান্দা, খোকসা ইত্যাদি।
হাকালুকি হাওরে এখনও আগের মতোই জাল ফেলেন জেলেরা। কিন্তু, আগের মতো জাল ভরে মাছ আসে না। এর পেছনে রয়েছে হাওরে বিল ভরাট, কৃষিজমিতে কীটনাশকের ব্যবহার। স্থানীয় জেলে ও মৎস্যজীবীরা বলছেন-সচেতন না হলে একটা সময় হয়তো মাছশূন্য হয়ে যাবে দেশের সবচেয়ে বড় এই মৎস্যভাণ্ডার।

You might also like