দেশে রিজার্ভ সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ দেশে প্রথমবারের মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) দিন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ৪০ অতিক্রম করেছে বিলিয়ন ডলার।বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার যে রির্জাভ রয়েছে, তা দিয়ে আগামী দশ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।বৈধপথে রেমিট্যান্স আসা, আমদানি ব্যয়ের চাপ কম থাকা, দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও জাইকার বৈদেশিক ঋণ সহায়তা এবং বিশ্ব সংস্থার অনুদানের কারণে রিজার্ভ বেড়েছে বলে মনে করেন ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৩৯ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত টানা তিন মাসে রেমিট্যান্সে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এই অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৬৭১ কোটি ৩১ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে, তা গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের মোট রেমিট্যান্সের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি।জানা গেছে, গত অর্থবছরে রেমিট্যান্সের ওপর ঘোষিত ২ শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা করে সরকার। এরপর থেকেই বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়তে থাকে। চলতি (২০২০-২১) অর্থবছরেও রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা অব্যাহত রয়েছে। এ কারণেই বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়তে শুরু করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, গত সেপ্টেম্বর মাসে ২১৫ কোটি ১০ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। এর আগে গত জুলাই মাসে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিল প্রবাসীরা, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, গত বছরের সেপ্টেম্বরের চেয়ে এ বছরের সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৪৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। বিভিন্ন দেশ থেকে এক কোটির বেশি বাংলাদেশির পাঠানো এই রেমিট্যান্সের অবদান জিডিপিতে ১২ শতাংশের মতো।
এদিকে করোনার মধ্যেও ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ প্রায় ১০ বিলিয়ন (এক হাজার কোটি) ডলার আয় করেছে। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে আরও বেশি, যার পরিমাণ ২ দশমিক ৪৫ শতাংশ।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে ৩৯১ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছিল। সেপ্টেম্বরে এর পরিমাণ ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। তিন মাসে মোট ৯৮৯ কোটি ডলারের বেশি পণ্য রফতানি হয়েছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, রেমিট্যান্স ও রফতানি আয় বাড়ার সুফল পাচ্ছে অর্থনীতির অন্যান্য খাতের সুবিধাভোগীরাও। রেমিট্যান্স বাড়ার কারণে গ্রামীণ অর্থনীতি এখনও চাঙা রয়ে গেছে। এছাড়া সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাড়ছে। ব্যাংকের আমানতও বাড়ছে। দীর্ঘদিনের মন্দায় থাকা পুঁজিবাজারে প্রাণ ফিরে আসতে শুরু করেছে। গলির দোকান থেকে শুরু করে বড় শিল্পকারখানা—সবই চলছে স্বাভাবিক সময়ের মতো। আমদানি-রফতানি, উৎপাদন, সরবরাহ, বিপণন, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও পরিবহন চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক হচ্ছে।